নানা ব্যর্থতা, দুর্বলতা, বিভ্রান্তিকর আচরণ এবং দৃষ্টান্তহীনতার ফলে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আস্থা ভেঙে পড়েছে বলে মন্তব্য করেছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও টিভি উপস্থাপক জিল্লুর রহমান। তিনি বলেন, বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে ২০২৪ সালের জুলাই আগস্টের গণঅভ্যুত্থান ছিল এক যুগান্তকারী অধ্যায়। দীর্ঘ একদলীয় শাসনের অভিশাপ, শেখ হাসিনার পতন এবং অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অভ্যুত্থান- এই সবকিছু মিলিয়ে তখন দেশের মানুষের মনে নতুন দিনের আশাবাদ জাগিয়ে তুলেছিল। নতুন বাংলাদেশ, বৈষম্যবিরোধী চেতনা, সংস্কার এই শব্দগুলো রোমাঞ্চ জাগিয়েছিল তরুণ প্রজন্মের মনে।
কিন্তু অভ্যুত্থানের এক বছর পর সেই আশা এখন হতাশায় রূপান্তরিত হয়েছে। সম্প্রতি নিজের ইউটিউব চ্যানেলের এক ভিডিও বার্তাতে তিনি এসব কথা বলেন।
জিল্লুর রহমান বলেন, সাম্প্রতিক মাইলস্টোন স্কুলে যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত হয়ে শিশু শিক্ষার্থীদের প্রাণহানি, উপদেষ্টাদের অবরুদ্ধ হওয়ার ঘটনা, সচিবালয়ে ঢুকে পড়ে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ এবং গোপালগঞ্জে এনসিপির কর্মসূচিতে সংঘর্ষ- এইসব ঘটনা দেশজুড়ে আইন শৃঙ্খলার চরম অবনতির বহিঃপ্রকাশ। এমন সংকটময় বাস্তবতায় সরকার আবারো রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে বৈঠক করেছে। এই বৈঠকগুলোতে দলগুলোর নেতৃবৃন্দ যে হতাশা প্রকাশ করেছেন তা উপেক্ষা করার নয়।
জিল্লুর বলেন, অনেকে সরাসরি প্রধান উপদেষ্টাকে পদত্যাগের পরামর্শ দিয়েছেন। কেউ বলেছেন যদি বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন ও সংস্কার নিশ্চিত করতে না পারেন তবে নেতৃত্ব ছেড়ে দেন। কেউ বলেছেন সরকারের অভিজ্ঞতার অভাব। আবার অনেকের মতে সরকার চলছে ইগো দিয়ে, যুক্তি দিয়ে নয়।
জিল্লুর আরো বলেন, প্রধান উপদেষ্টা নিজেও স্বীকার করেছেন প্রশাসনের দুর্বলতা। গোয়েন্দা ব্যর্থতা, বাহিনীর অকার্যকর অবস্থান। এই স্বীকারোক্তি কোনো সমাধানের পথে নিয়ে যাচ্ছে না বরং জনগণের মধ্যে এক ধরনের দৃষ্টিভঙ্গি তৈরি হচ্ছে। সরকার শুধু দায় এড়াতে চায়, দায়িত্ব নিতে নয়।
অথচ এই সরকারের কথা ছিল জনআস্থা ফিরিয়ে আনা, একটি রূপান্তরমূলক রাজনীতির সূচনা করা। এখন দেখা যাচ্ছে সরকারে থেকেও সরকার নেই।
কেএন/টিএ