একসময়ের জনপ্রিয় নায়ক ও ‘ওরা ১১ জন’-এর প্রযোজক মাসুদ পারভেজ সোহেল রানা। তিনি শুধু চলচ্চিত্রের নায়ক নন, বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের একজন সম্মুখযোদ্ধাও। সেই সোহেল রানা আজ ক্ষোভে-দুঃখে নিজের অবস্থান জানালেন সামাজিক মাধ্যমে।
২৭ জুলাই ২০২৪, দুপুর ১১টা ১৭ মিনিটে ফেসবুকে একটি ছবি-সংযুক্ত পোস্টে তিনি লেখেন, ‘দুজনের কাঁধে ভর করে দাঁড়িয়ে আছি, কষ্ট করে টাকা জমা দেওয়ার জন্য। বসার জায়গা নেই ২৫ জন বসার জায়গা হলে ১০০ জন রোগী দাঁড়িয়ে আছেন। সিনিয়র সিটিজেন হিসেবে বা স্বাধীনতা যুদ্ধের একজন যোদ্ধা হিসেবে জাতীয় পরিচয়পত্রের কোনো দাম, সম্মান কিছুই নেই।
কেবিন ভাড়া যা ছিল এক বছরে, তা দ্বিগুণ হয়ে গেছে। সেবাদানকারী বাহিনীরাও চিকিৎসা শেষে টোটাল বিল থেকে কমিশন পান, মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য তার কিছুই প্রযোজ্য নয়। কী সার্টিফিকেট এই কাজে আসে বা মুক্তিযোদ্ধা আইডেন্টিটি কার্ড কোনো কাজে আসে বুঝি না। কোনো অভিযোগ নেই, শুধু একটু দীর্ঘ নিঃশ্বাস।’
পোস্টটি সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে মুহূর্তেই। অনেকেই মন্তব্য করছেন, একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা ও চলচ্চিত্রের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্ব হিসেবে এমন অভিজ্ঞতা সত্যিই বেদনাদায়ক।
পরে আরও একটি পোস্টে সোহেল রানা নিজেই নিজের অর্জনকে প্রশ্ন করে লিখেন, ‘বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের প্রথম ছবি ‘ওরা ১১ জন’-এর প্রযোজক মাসুদ পারভেজ। ধিক তোমাকে, ধিক তোমার মুক্তিযুদ্ধের সার্টিফিকেট এবং মুক্তিযোদ্ধা আইডেন্টিটি কার্ডকে।’
এরপর একাধিক গীতিক ছন্দে বা রূপকভাবে তিনি আরও কিছু স্ট্যাটাস দেন। একটিতে লেখেন, ‘পরিষ্কার পানিতে মাছ পাওয়া যায় না, ঘোলা বা ময়লা পানি দরকার হয় মাছ শিকারের জন্য।’
আরেকটি স্ট্যাটাসে আত্মপ্রত্যয়ের কণ্ঠস্বর তুলে ধরেন ‘যিনি সময় তৈরি করেছেন, তুমি তাকে সেই সময় দাও, তিনি তোমার সময় বদলে দেবেন।’
সোয়েল রানার এই স্ট্যাটাসগুলো শুধু একটি ব্যক্তিগত অভিমত নয় একটি শ্রেণির, একটি সময়ের মানুষের দীর্ঘশ্বাস যেন এতে ধ্বনিত হচ্ছে।
অনেকেই এখন প্রশ্ন তুলছেন বীর মুক্তিযোদ্ধা হয়েও যখন সোয়েল রানার মতো একজন মানুষের এই অবস্থা, তখন সাধারণ মুক্তিযোদ্ধারা কোথায় দাঁড়িয়ে?
সোশ্যাল মিডিয়ায় ইতোমধ্যে বহু শিল্পী, সাংবাদিক ও সাধারণ মানুষ তার পাশে থাকার কথা জানিয়েছেন। তবে রাষ্ট্রীয় পর্যায় থেকে এখনও কোনও প্রতিক্রিয়া আসেনি।
পিএ/ এসএন