বিএনপির রাজনৈতিক ইতিহাস, প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নের ইতিহাস : সালাহউদ্দিন আহমদ

কিছু কিছু রাজনৈতিক দল বলার চেষ্টা করে যে বিএনপি ক্ষমতায় আসলে জুলাই সনদ হয়তো বাস্তবায়ন করবে না। রাষ্ট্র ক্ষমতায় গেলে বিএনপি জুলাই সনদ বাস্তবায়ন করবে কি না- এমন প্রশ্নে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, এ প্রশ্ন তোলাই সঠিক হচ্ছে না। বিএনপির রাজনৈতিক ইতিহাস হচ্ছে সংস্কারের ইতিহাস। প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নের ইতিহাস।

দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ১৯৯১ সালের সরকারে আসার পরে সংসদীয় পদ্ধতির সরকার প্রবর্তন করেছেন প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী এবং ১৯৯৬ সালে জাতির দাবি অনুসারে কেয়ার টেকার সরকার প্রবর্তন করেছেন। এর আগে ১৯৭৯ সালে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান বাকশাল বিলুপ্ত করে বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রবর্তন করেছেন এবং বিচার বিভাগের স্বাধীনতাসহ প্রেসের ফ্রিডম নিশ্চিত করেছেন। সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল প্রতিষ্ঠিত করেছেন। এগুলো বিএনপির ইতিহাস। সুতরাং বিএনপিকে যদি প্রশ্ন করা হয়, এ প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন করবে কি না- সেটা আমার মনে হয় সঠিক প্রশ্ন হবে না।

শনিবার (২৩ আগস্ট) দেশের এক বেসরকারি টেলিভিশনের বিশেষ সাক্ষাৎকারে তিনি এসব কথা বলেন।

সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, আমাদের নিজেদেরই অ্যাজেন্ডা আছে ৩১ দফা সংস্কার প্রস্তাব। সেই সংস্কার প্রস্তাব আমরা কখন দিয়েছি? এই সরকার গঠিত হওয়ার আরো এক-দেড় বছর আগে জনগণের সামনে। এটা আমাদের অঙ্গীকার। আজকে ৩১ দফা সংস্কার প্রস্তাব বাংলাদেশের ঘরে ঘরে আমরা পৌঁছিয়ে দিয়েছি এবং আমাদের এই ৩১ দফা সংস্কার প্রস্তাব এই সাম্প্রতিক রাজনৈতিক ইতিহাসে একটা মহাকাব্যে পরিণত হয়েছে। সুতরাং সংস্কার আমাদের প্রাণের দাবি। আমরা এ সংস্কারের প্রবক্তা। 

আমরা এই সংস্কার বাস্তবায়ন করব না- এটা হতে পারে না। নির্বাচন একটি বিশ্বমানের নির্বাচন হবে। সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও অবাধ নির্বাচন হবে এবং সেই নির্বাচন সারা পৃথিবীব্যাপী স্বীকৃতি পাবে। 

আমরা উৎসবমুখর নির্বাচন হবে বলে আমরা আশা করি। সেই নির্বাচনের জন্য জনগণ অপেক্ষা করছে, যে নির্বাচনের জন্য আমাদের সন্তানরা শহীদ হয়েছে, যে ভোটাধিকার প্রয়োগের জন্য এদেশের মানুষ রক্ত দিয়েছে, যে ভোটাধিকার প্রয়োগের জন্য, সেই দাবি আদায়ের জন্য দীর্ঘ ১৬ বছর ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলন করেছে- এই নির্বাচনটা আগামী ফেব্রুয়ারিতে হবে, ইনশাআল্লাহ। মাননীয় প্রধান উপদেষ্টা সেটা প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, ভাষণ দিয়েছেন, নির্বাচন কমিশনে চিঠি দিয়েছেন। 

নির্বাচন কমিশনের প্রস্তুতি সমাপ্ত। আমরা সেই নির্বাচনে আমাদের রাজনৈতিক দল হিসেবে আমাদের পক্ষ থেকে যা কিছু সহযোগিতার প্রয়োজন, আমরা করব। অন্যান্য সকল রাজনৈতিক শক্তি, গণতান্ত্রিক শক্তি, গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল সবার কাছে আমাদের আহ্বান থাকবে- আসুন, আমরা আলাপ-আলোচনা করি এবং জাতীয় ঐকমত্য সৃষ্টি যেটা হয়েছে ফ্যাসিবাদবিরোধী জাতীয় ঐক্য, সেটাকে আরো শক্তিশালী করি এবং আগামী জাতীয় নির্বাচনকে অর্থবহ করি এবং এটাকে সহজতর করার জন্য, গণতান্ত্রিক উত্তোরণকে সহজতর করার জন্য যা কিছুই করা প্রয়োজন, সেটা আমরা আলাপ-আলোচনার মধ্য দিয়ে করি। এ বিষয়ে আমাদের সমস্ত সহযোগিতা থাকবে সকল সময়ে।

আগামী নির্বাচনে বিএনপির সঙ্গে কোনো রাজনৈতিক দল জোট করবে কি না বা বিএনপি কাদেরকে সঙ্গে নির্বাচন করতে চায়- এই প্রশ্নে বিএনপির স্থায়ী কমিটির এ সদস্য বলেন, এটা আমাদের পূর্ব প্রতিশ্রুতি আছে যে আমাদের সঙ্গে যারা ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনে যুগপৎ আন্দোলনের সঙ্গী ছিল, তাদের সঙ্গে আমরা জোট করব। এর বাইরেও আমরা অন্য কোনো দলের সঙ্গে, ইসলামপন্থী দুয়েকটি দলের সঙ্গে, অন্যান্য গণতান্ত্রিক দলের সঙ্গে জোট করতে পারি। তবে সেই সিদ্ধান্ত এখনো চূড়ান্ত হয়নি। 

আমরা জাতির মধ্যে একটা ঐক্য সৃষ্টি করতে চাই। যেই ঐক্যটার মধ্য দিয়ে আমরা জাতিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারব। এখানে আমরা কোনো বিভক্তি চাই না। নির্বাচনের সময় হয়তো সাময়িকভাবে মনে হবে বিভিন্ন দল, বিভিন্ন দলের বিরুদ্ধে ভোট করবে। এটা নিয়ম গণতন্ত্রে। কিন্তু গণতন্ত্রের প্রশ্ন সবাই আমরা ঐক্যবদ্ধ থাকব।

ইউটি/টিএ

Share this news on:

সর্বশেষ

img
সড়কে মাছ ছেড়ে প্রতিবাদ করলেন হাসনাত আবদুল্লাহ Oct 10, 2025
img
নাহিদ-সারজিসরা পালাতে পারবেন না: রনি Oct 10, 2025
img
অভিযোগ গঠনের মুহূর্ত থেকেই কেউ আর সংসদ নির্বাচন করতে পারবে না : জিল্লুর রহমান Oct 10, 2025
img
নতুন কমিটি নিয়ে দায়িত্বে বিসিসিসিআই, সভাপতি খোরশেদ আলম Oct 10, 2025
img
মেসিকে বাইরে রেখে নতুন ভাবনায় স্কালোনি Oct 10, 2025
img
ইয়ামালের পাশে দাঁড়িয়ে এমবাপ্পে বললেন, ‘এই বয়সে সবাই ভুল থেকেই শেখে’ Oct 10, 2025
img
হারের পর কাদলেন হামজা, জানালেন হৃদয়ের কথা Oct 10, 2025
img
যারা ভারতপন্থী শাসন চায়, তারাই দেশকে অস্থিতিশীল করছে : রুমিন ফারহানা Oct 10, 2025
img
বাংলাদেশের নির্বাচনী প্রক্রিয়া সম্পর্কে জানতে চাইলেন ফিনল্যান্ডের প্রেসিডেন্ট Oct 10, 2025
img
গ্রেপ্তার হলেন ইউটিউবার ও অভিনেতা মনি মেরাজ Oct 10, 2025
img
হংকংয়ের কাছে হেরে এশিয়ান কাপের জটিল সমীকরণে বাংলাদেশ Oct 10, 2025
img
আগামী ৫ দিনের মধ্যে বিদায় নিতে পারে মৌসুমি বায়ু! Oct 10, 2025
img
ট্রাফিক আইন লঙ্ঘনে ২ দিনে ৩৮৪৮ মামলা ডিএমপির Oct 10, 2025
img
বাংলাদেশি টাকায় আজকের মুদ্রা বিনিময় হার Oct 10, 2025
img
বাংলাদেশ-ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজে ম্যাচ অফিসিয়ালদের তালিকা প্রকাশ Oct 10, 2025
img
প্রসেনজিৎকে নিয়ে আফসোস বাবা বিশ্বজিতের Oct 10, 2025
img
আমরা কারো সঙ্গে জোট বা আসন সমঝোতা করিনি : নুর Oct 10, 2025
img
ফিলিপাইন-ইন্দোনেশিয়ায় সুনামির আশঙ্কা কেটেছে, দেখা দিচ্ছে ক্ষয়ক্ষতির চিত্র Oct 10, 2025
img
শান্তি পরিকল্পনায় সাফল্যের জন্য ‘বন্ধু’ নেতানিয়াহু ও ট্রাম্পকে মোদির অভিনন্দন Oct 10, 2025
img
২ হাজার ফিলিস্তিনিকে মুক্তি দিলেও ১ জনকে ছাড়বে না ইসরায়েল Oct 10, 2025