ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন বলেছেন, ‘বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ও সৌহার্দ্যের রোল মডেল।’ তিনি হিন্দু সম্প্রদায়ের বেহাত হয়ে যাওয়া দেবোত্তর সম্পত্তি যেগুলো নিয়ে আদালতে কোনো মামলা-মোকদ্দমা নেই—এরূপ সম্পত্তি উদ্ধারে সহযোগিতার আশ্বাস দেন।
বুধবার (২৭ আগস্ট) রেলভবনের এক অনুষ্ঠানে ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন এসব কথা বলেন।
অনুষ্ঠানে রাজধানীর জোয়ার সাহারা মৌজায় দুটি মসজিদ ও একটি মন্দিরের পরিচালনা কমিটির কাছে জমির বরাদ্দপত্র তুলে দেন ঢাকার বিভাগীয় রেলওয়ে ম্যানেজার মো. মহিউদ্দিন আরিফ।
ধর্ম উপদেষ্টা বলেন, ‘বিভিন্ন সময়ে কিছু বিচ্ছিন্ন ঘটনা ঘটে থাকে। ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান কিংবা উপাসনালয়গুলোকে যারা অপবিত্র করতে চায় তাদের ধর্মীয় কোনো পরিচয় নেই, তারা দুষ্কৃতকারী, ক্রিমিনাল।’
ধর্ম উপদেষ্টা বলেন, রেল উপদেষ্টা জনাব ফাওজুল কবির খান যে অনন্য দৃষ্টান্ত করেছেন তা বাংলাদেশের ইতিহাস হয়ে থাকবে।রেলওয়ের জমি কাউকে লিজ দেওয়ার বিধান, আইন নেই।
স্পেশাল কনসিডারেশনে তিনি মসজিদ ও মন্দিরের জন্য জমা বরাদ্দ দিয়েছেন। তা বাংলাদেশে এটা সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির অনন্য নজির হিসেবে টিকে থাকবে।
তিনি বলেন, আমরা সবসময় একথা বলেছি, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান ও উপসনালয়ের পবিত্রতা যারা নষ্ট করতে চায় তাদের কোনো ধর্মীয় পরিচয় নেই। তারা মূলত দুর্বৃত্ত।
তারা ক্রিমিনাল। আমরা ক্রিমিনালদের কোনো প্রকার ছাড় দিতে প্রস্তুত নই।
ধর্ম উপদেষ্টা বলেন, গোবিন্দ বাবু বলেছেন যে বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর থেকে হিন্দুদের অনেক জায়গা বেদখল হয়ে গেছে। অথচ আপনারা শুনলে অবাক হয়ে যাবেন, আমার মন্ত্রণালয়ের অধীনে একটি ওয়াকফ এডমিনিস্ট্রেশন আছে। বাংলাদেশের প্রতিটি প্রতিটি উপজেলায় ধর্মীয় কারণে ও মহান আল্লাহর সন্তুষ্টি কামনায় কিছু বদান্য ব্যক্তি জমি দিয়ে গেছেন।
অনাথদের জন্য, মসজিদের জন্য, মাদরাসার জন্য, মাজারের জন্য। আড়াই হাজার একর জমি, একেবারে দলিল করা জমি দখল করে নিয়েছে।
তিনি বলেন, আমি বিভিন্ন জেলায় গেলে আমার অন্যান্য কাজের সাথে আমি ডিসিদের সাথে বসি। সেদিন নওগাতে ৫২ বিঘার একটি জমি উদ্ধার করেছি। এবং ব্রাক্ষণবাড়িয়ায় একটি বাড়ির ভাড়া পেতাম ১৮-১৯ হাজার টাকা। আমরা তা উদ্ধার করে এখন ভাড়া পাচ্ছি ৯১ হাজার টাকা।
মতিঝিলে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের দেবোত্তর সম্পত্তি বেহাত ছিল। আমাদের গভমেন্ট আসার পর আমরা তা উদ্ধার করে সনাতন ভাইদের কাছে সোপর্দ করেছি। গত বছর জন্মাষ্টমীতে গিয়ে আমি তা উদ্বোধন করেছি।
ধর্ম উপদেষ্টা বলেন, আমি আশ্বস্ত করছি, যেসমস্ত দেবোত্তর সম্পত্তি বেদখল আছে, যদি কোর্টের মামলা না থাকে এবং দলিল স্পষ্ট থাকে, কোনো ধরনের কনফিউশন না থাকে, তাহলে আপনারা ধর্ম মন্ত্রণালয়ের সাথে যোগাযোগ করুন। হিন্দু কল্যাণ ট্রাস্টের সাথে যোগাযোগ করেন। আমরা স্থানীয় প্রশাসনের সহযোগিতায় তা উদ্ধার করে দেব।
বরাদ্দপত্র হস্তান্তর অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়, বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয় এবং রেলপথ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা অধ্যাপক ডা. বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার, সড়ক পরিবহন ও সেতু এবং রেলপথ মন্ত্রণালয়ে নিযুক্ত প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ড. শেখ মইনউদ্দিন, প্রধান উপদেষ্টার প্রেসসচিব মোহাম্মদ শফিকুল আলম প্রমুখ।
এমআর/টিএ