ক্রাইস্টচার্চ কবরস্থানে দুজনের দাফন সম্পন্ন

নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চের দুটি মসজিদে অস্ট্রেলীয় শ্বেতাঙ্গ সন্ত্রাসীর হামলায় নিহত ৫০ জনের মধ্যে দুজনের লাশ দাফন করা হয়েছে। তাদের জানাজা শেষে বুধবার ক্রাইস্টচার্চ মেমোরিয়াল পার্ক কবরস্থানে তাদের দাফন করা হয়। খবর বার্তা সংস্থা রয়টার্সের।

এক বাবা ও তার ছেলের লাশ নতুন খোঁড়া একটি কবরে কাবার দিকে মুখ করে শুইয়ে দেওয়া হয়।

নিউজিল্যান্ডের ইতিহাসের সবচেয়ে ভয়াবহ এ সন্ত্রাসী হামলায় নিহতদের এই কবরস্থানেই দাফন করা হবে।

জানাজা ও দাফনের সময় সেখানে কয়েকশ লোক উপস্থিত ছিলেন। টুপি পরা পুরুষদের পাশাপাশি সালোয়ার, কামিজ ও হিজাব পরা অনেক নারীও ছিলেন।

এই শেষকৃত্যে যোগ দেওয়ার জন্য অকল্যান্ড থেকে ক্রাইস্টচার্চে আসা গুলশাদ আলি বলেন, ‘লাশ কবরে শুইয়ে রাখা হচ্ছে, আমরা তাকিয়ে তাকিয়ে দেখছি, খুব কষ্ট হচ্ছে।’

পার্কের ভিতরে একটা এলাকায় ওজু করার ব্যবস্থা করা হয়েছে। পুরো এলাকা নিরাপত্তা চাদরে ঢেকে ফেলা হয়েছে। পরিস্থিতির ওপর নজর রাখা পুলিশের রিভলভারের হোলস্টারে ও তাদের অত্যাধুনিক রাইফেলে গোঁজা ছিল ফুল।

হামলাকারী জঙ্গি অস্ট্রেলিয়ার নাগরিক ব্রেন্টন ট্যারেন্ট (২৮) নিউজিল্যান্ডের সাউথ আইল্যান্ডের ডানেডিনে বসবাস করতেন। শুক্রবার জুমা নামাজের সময় দুই মসজিদে চালানো নির্বিচার হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় তার বিরুদ্ধে নরহত্যার অভিযোগ আনা হয়েছে।

পুলিশ রিমান্ডে থাকা ট্যারেন্টকে আগামী ৫ এপ্রিল আবার আদালতে হাজির করবে। তখন তার বিরুদ্ধে আরও অভিযোগ আনা হতে পারে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

নিউজিল্যান্ডের পুলিশ প্রধান জানিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (এফবিআই) ও অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, ব্রিটেনসহ বিশ্বব্যাপী গোয়েন্দা সংস্থাগুলো সন্দেহভাজন জঙ্গির প্রোফাইল তৈরি করছে।

রাজধানী ওয়েলিংটনে এক সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ কমিশনার মাইক বুশ বলেছেন, ‘এটি পুরোপুরি একটি আন্তর্জাতিক তদন্ত তা আপনাদের নিশ্চিত করতে পারি আমি।’

হামলাকারী জঙ্গি পুরো বিশ্ব ভ্রমণ করেছে এবং কোথাও বেশি দিন বাস করেনি বলে জানিয়েছেন নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী জেসিন্ডা আরডার্ন।

মঙ্গলবার রাত পর্যন্ত ২১ জন নিহতকে শনাক্ত করা হয়েছে এবং তাদের লাশ দাফনের জন্য হস্তান্তর করা হবে বলে জানিয়েছে পুলিশ। বুধবার রাতের মধ্যে শনাক্তকরণ শেষ করার কথা রয়েছে।

ইসলামিক রীতিতে মারা যাওয়ার পর যত তাড়াতাড়ি সম্ভব দাফন করার বিধান থাকায় এই দেরিতে নিহতের পরিবারগুলো হতাশ হয়েছে।

এ বিষয়ে পুলিশ প্রধান বুশ বলেছেন, বিচারক ও ময়নাতদন্তকারী কর্মকর্তাকে সন্তুষ্ট করতে পুলিশকে প্রতিটি মৃত্যুর কারণ প্রমাণ করে দেখাতে হবে তাই বিষয়টিতে সময় লাগছে।

‘মৃত্যুর কারণ বাদ দিয়ে অপরাধ সাব্যস্ত করা যাবে না। তাই এটি একটি ব্যাপক প্রক্রিয়া যা সর্বোচ্চ মান বজায় রেখে সম্পন্ন করতে হয়’- বলেছেন তিনি।

ওই ঘটনায় আহত ২৯ জন এখনও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন, তাদের মধ্যে আট জন নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে আছেন।

 

টাইমস/এসআই

Share this news on: