মানুষের সৌন্দর্যের অলংকার হলো তার চুল। তাই চুল ঝরে পড়তে থাকলে যে কেউ দুশ্চিন্তাগ্রস্ত হয়ে পড়েন। চুল পড়া, চুল উঠে যাওয়া বা চুল পাতলা হয়ে যাওয়া নিয়ে যেন চিন্তার অন্ত নেই। ছেলেমেয়ে সবাই এর শিকার।
বিশেষজ্ঞদের মতে, দেহের প্রতিটি কোষের মতো চুলেরও রয়েছে নির্দিষ্ট আয়ু। একটি চুলের আয়ু সাধারণত দুই থেকে ছয় বছর পর্যন্ত হয়। তারপর এটা নিজে থেকেই ঝরে যায়। তাই প্রতিদিন অন্তত ১০০টি চুল পড়ে যাওয়া স্বাভাবিক। যদি খুব বেশি চুল পড়তে থাকে তাহলে অবশ্যই সতর্ক হতে হবে। অনেক সময় এই চুল পড়ার সঙ্গে ব্যক্তির খাদ্যাভাস ও শরীর ক্রিয়া সম্পর্কযুক্ত থাকে।
এছাড়াও চুল পড়ার অনেক কারণ থাকতে পারে। হতে পারে, যদি আপনি সম্প্রতি মা হয়েছেন অথবা আপনি যদি গর্ভবতী হন এবং যদি আপনার দেহে হরমোনের তারতম্য দেখা দিয়েছে। এমনটাও হতে পারে, আপনি কোনো থাইরয়েড রোগে আক্রান্ত হয়েছেন। মাথার চামড়ায় ইনফেকশন বা মানসিক চাপ এবং বিষণ্ণতাও আপনার চুল পড়ার কারণ। উচ্চ রক্তচাপ, ক্যান্সার, আর্থাইটিস প্রভৃতি কারণেও চুল পড়তে পারে।
আতঙ্কিত হবার কোনো কারণ নেই, প্রয়োজনে ডাক্তারের সঙ্গে যোগাযোগ করুন।
চলুন জেনে নিই কী কী কারণে চুল বেশি পড়তে পারে-
আমিষের অভাব
আমিষ চুলের গঠনে সহায়তা করে। খাবারে যদি যথেষ্ট পরিমাণ আমিষ না থাকে, তাহলে চুলের বৃদ্ধি বন্ধ হয়ে যাবার সম্ভাবনা দেখা দেয়। এক্ষেত্রে চুলের রং বদলে যাবে এবং পড়তে শুরু করবে। শস্যকণা, ডিম, দুগ্ধজাত খাবার, দুধ, পোল্ট্রি, মাছ, মাংস প্রভৃতি খাবারে আমিষ রয়েছে।
মানসিক চাপ
মানসিক চাপের কারণে অগণিত চুল হারাবার সম্ভাবনা থাকে। এমন চাকরী যা আপনাকে নিজের পারফর্ম্যান্স সম্পর্কে উদ্বিগ্ন করে তুলছে, প্রিয়জনের ভালোবাসা হারানো, পরীক্ষার ফলাফল খারাপ করা প্রভৃতি মানসিক চাপে চুল পড়তে পারে। যাইহোক, এটি কোনো চিরস্থায়ী অবস্থা নয়। এ চুল পড়া সাময়িক এবং যখন সব কিছু স্বাভাবিক হয়ে আসলে পুনরায় চুল গজায়।
চুলে ব্যবহার করা পণ্য
তেল, শ্যাম্পু, কন্ডিশনার প্রভৃতি জিনিস আপনার চুলে ব্যবহার করছেন, সেগুলি আপনার চুল ও মাথার ত্বকের সঙ্গে মানানসই তো? এসব বাজারি পণ্যও চুল পড়ার কারণ হতে পারে। তাই চুলে কি ব্যবহার করছেন সে বিষয়ে খুব সচেতন হতে হবে। চুল স্ট্রেট করার কেমিক্যাল এবং হিট ব্যবহার করলেও চুল ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এগুলি হয়ত খুব অল্প সময়ের জন্য আপনাকে সুন্দর করে উপস্থাপন করতে পারে। কিন্তু দীর্ঘ মেয়াদে সেগুলি আপনার চুলের জন্য ক্ষতিকর।
আয়রনের অভাব
দেহে আয়রনের অভাব দেখা দিলে চুল পড়া শুরু হতে পারে। তাই সব সময় আয়রনে পরিপূর্ণ খাবার খেতে হবে। গাড় সবুজ শাক-সবজি, ডার্ক চকোলেট, সয়াবিন, মাংস প্রভৃতি খাবারে প্রচুর আয়রন রয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলেন, ১৯ থেকে ৫০ বছর বয়সী নারীদের প্রতিদিন কমপক্ষে ১৮ মিলিগ্রাম আয়রন গ্রহণ করা উচিত। তথ্যসূত্র: ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস।
টাইমস/এনজে/জিএস