শ্বাসকষ্ট নিয়ে রংপুর মেডিকেল কলেজ (রমেক) হাসপাতালে চীন ফেরত শিক্ষার্থী তাশদীদ হোসেনের শরীরে করোনা ভাইরাসের কোন লক্ষণ পায়নি চিকিৎসকরা। তাশদীদ রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আইসুলেশন বিভাগের করোনা (আইসুলেশন) ইউনিটে চিকিৎসাধীন।
রোববার সকালে তার চিকিৎসায় গঠিত ১২ সদস্যবিশিষ্ট মেডিকেল বোর্ডের প্রধান ডা. দেবেন্দ্রনাথ সরকার এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
মেডিকেল বোর্ডের প্রধান ও রমেক হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. দেবেন্দ্রনাথ সরকার বলেন, রোগীর শরীরে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হবার কোন লক্ষণ নাই, তবে এক ধরণের আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে হাসপাতালের রোগী থেকে সবার মধ্যে।
তিনি বলেন, যদিও সাবধানতা হিসেবে সব ধরণের ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে, কিন্তু তার শরীরে আমরা এখনো পর্যন্ত করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হবার কোন লক্ষণ পাইনি। এরমধ্যে আইইডিসিআর শনিবার ঢাকা থেকে এসে তার রক্ত, লালা আর ঘামের নমুনা নিয়ে গেছে। তারা আগামী দুইদিনের মধ্যে মানে মঙ্গলবারের মধ্যে রিপোর্ট দেবে, সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে। তবে এখনো উদ্বেগের কিছু দেখছি না আমরা।
তিনি আরও বলেন, শ্বাসকষ্ট নিয়ে শনিবার দুপুরে হাসপাতালে ভর্তি হন ঐ শিক্ষার্থী। এরপর তাকে হাসপাতালের করোনা ইউনিটে আইসোলেশন ওয়ার্ডে নেয়া হয়। তাশদীদের বাড়ি নীলফামারীর ডোমারের মির্জাগঞ্জ গ্রামে।
তাশদীদ হোসেনের বাবা আলতাফ হোসেন জানিয়েছেন, তার ছেলে তাশদীদ হোসেন রংপুর সরকারি পলিটেকনিক্যাল কলেজ থেকে সিভিলে ডিপ্লোমা পাসের পর বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ার জন্য চীনের আনহুই প্রদেশের আনহুই ইউনিভার্সিটি অ্যান্ড টেকনোলজিতে সিভিলে ভর্তি হয় আড়াই বছর আগে। ষষ্ঠ সেমিস্টার শেষে তাদের ভ্যাকেশন চলছিল।
তিনি বলেন, এরই মধ্যে চীনে করোনা ভাইরাস আক্রান্ত হওয়ায় ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের সব বাংলাদেশি শিক্ষার্থী চলে আসে। আমার ছেলে তার দুই সহপাঠী কুমিল্লা ও চট্টগ্রামের দুজনসহ ২৯ জানুয়ারি ঢাকায় শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এসে রাত ১২টায় নামে। তখন চট্টগ্রামের ছেলেটির জ্বর হওয়ায় সেখান থেকে তাকে কুর্মিটোলা হাসাপাতালে নেয়া হয়। তিন দিন পর তাকে সেখানে থেকে ছেড়ে দেয়া হয়। আমার ছেলে অপর বন্ধুসহ রাতে হোটেলে থেকে ৩০ জানুয়ারি নীলসাগর ট্রেনযোগে বাড়িতে আসেন।
এর পর স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে নির্দেশনা পাওয়ার পর জেলা সিভিল সার্জন ও থানা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা আমার বাড়িতে আসেন এবং তার শরীরের খোঁজখবর রাখতে থাকেন। সে ভালো ছিল। এরই মধ্যে গত পরশু থেকে আমার ছেলের শ্বাসকষ্ট শুরু হয়। সঙ্গে সামান্য জ্বর ছিল। এ কারণে শনিবার দুপুরে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে আসি। তখন হাসপাতালের সহকারী পরিচালক তাকে করোনা (আইসুলেশন) ইউনিটে ভর্তি করান। প্যারাসিটামলসহ কিছু ওষুধ দিয়েছেন। সেগুলো খাওয়াচ্ছি। কর্তৃপক্ষ বলছে ঢাকায় জানানো হয়েছে।
চীন ফেরত শিক্ষার্থী শ্বাসকষ্ট নিয়ে রংপুর মেডিকেলে ভর্তি
টাইমস/এইচইউ