করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে ও উপসর্গ নিয়ে চট্টগ্রামে এখন পর্যন্ত মৃত্যুবরণ করেছেন ১০ চিকিৎসক। এরমধ্যে বিভিন্ন হাসপাতালে দায়িত্বরত চিকিৎসকের পাশাপাশি রয়েছেন প্রবীণ চিকিৎসকও।
এছাড়া ২৪ জুন পর্যন্ত পাওয়া তথ্য অনুসারে চট্টগ্রামে ২৬৩ জন চিকিৎসক করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন।
জানা গেছে, গত ২৫ মে ভোরে চট্টগ্রামে করোনা ভাইরাসে প্রথম মৃত্যুবরণ করেন ডা. এস এম জাফর হোসাইন রুমি। তিনি চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন ছিলেন। তিনি চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতালের চিকিৎসক হিসেবে কর্মরত ছিলেন।
এরপর ৩ জুন দুপুরে চট্টগ্রাম মেরিন সিটি মেডিকেল কলেজের সহযোগী অধ্যাপক এবং মেডিসিন বিভাগের প্রধান ডা. এহসানুল করিম করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। পরের দিন ৪ জুন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের ইমার্জেন্সি মেডিকেল অফিসার ডা. মহিদুল হাসান করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেন। তারা দুইজনই চমেক হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন ছিলেন।
করোনা উপসর্গ নিয়ে ১২ জুন রাতে মারা যান আরেক চিকিৎসক ডা. আরিফ হাসান। ব্যক্তিগত চেম্বারে রোগী দেখতেন তিনি। একদিন পর ১৪ জুন উপসর্গ নিয়ে মৃত্যুবরণ করেন চট্টগ্রামের জেমিসন রেড ক্রিসেন্ট মাতৃসদন হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. সাদেকুর রহমান।
এছাড়া গত ১৭ জুন চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন হাসপাতালের আইসিইউতে মৃত্যুবরণ করেন ডা. নুরুল হক। তিনি ওই হাসপাতালেই সিনিয়র আবাসিক মেডিকেল অফিসার হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন।
করোনায় আক্রান্ত হয়ে গত ২১ জুন নাক, কান ও গলারোগ বিশেষজ্ঞ প্রবীণ চিকিৎসক ডা. ললিত কুমার দত্ত চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।
একদিন পর ২৪ জুন মারা যান চট্টগ্রামে প্রথম প্লাজমা থেরাপি নেওয়া চমেক হাসপাতালের অর্থোপেডিক্স বিভাগের চিকিৎসক অধ্যাপক ডা. সমিরুল ইসলাম।
২৪ জুন রাতে ডা. শহিদুল আনোয়ার নামে আরও এক প্রবীণ চিকিৎসকের মৃত্যু হয়। সর্বশেষ ২৬ জুন রাতে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের অবসরপ্রাপ্ত মেডিকেল অফিসার ডা. মোহাম্মদ হোসেন মারা যান।
বাংলাদেশ মেডিক্যাল এসোসিয়েশন, চট্টগ্রামের সভাপতি ডা. মুজিবুল হক বলেন, আমার কাছে যে তথ্য রয়েছে সে অনুযায়ী চট্টগ্রামে ৯ জন চিকিৎসক করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। অন্য একজনের বিষয়টি এখনও নিশ্চিত নই। তিনিও চিকিৎসকদের সুরক্ষার কোনো বিকল্প নেই বলে দাবী করেন।
স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের (স্বাচিপ) কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ডা. আ ম ম মিনহাজুর রহমান বলেন, করোনার কারণে আমাদের অনেক চিকিৎসককে হারাতে হয়েছে। প্রথম থেকে বিষয়গুলো নিয়ে সচেতন থাকলে এসব চিকিৎসকদের হারাতে হতো না। এখনও আমাদের অনেক চিকিৎসক করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। যা সার্বিকভাবে করোনার চিকিৎসায় প্রভাব ফেলবে।
টাইমস/এইচইউ