দিনাজপুরের ঘোড়াঘাটের ইউএনও ওয়াহিদা খানমের বাবা ওমর আলী শেখের (৬৫) কোমরের নিচের অংশ পুরোটাই প্যারালাইজড হয়ে গেছে। এ অবস্থায় তিনি কথা বলতে ও খেতে পারলেও চলাচলে অক্ষম।
চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, আপাতত অস্ত্রোপচারের প্রয়োজন না হলেও পুরোপুরি সেরে উঠতে তার দীর্ঘ সময় লাগতে পারে। শনিবার রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গিয়ে সংশ্লিষ্ট চিকিৎসক ও ওমর আলীর ছেলে শেখ ফরিদ উদ্দীনের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে। এর আগে বৃহস্পতিবার রাতে ওমর আলীকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নিউরোসার্জারি ওয়ার্ড থেকে তিনতলার ভিআইপি কেবিনে নেয়া হয়।
রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নিউরোসার্জারি বিভাগের প্রধান ডা. তোফায়েল হোসেন ভূঁইয়া বলেন, ওমর আলী শেখের আগে থেকে ডায়াবেটিস ছিল। ঘটনার রাতে তিনি ঘাড়ে আঘাত পান। এতে স্পাইনাল কর্ডে গুরুতর আঘাত লাগে তার। সাধারণত এ ধরনের জটিলতায় চার হাত-পা অবশ হয়ে যায়। এক্ষেত্রে তার দুই হাত কিছুটা সচল থাকলেও নাভির নিচ থেকে পুরো নিচের অংশ অবশ হয়ে গেছে।
ডা. তোফায়েল হোসেন ভূঁইয়া আরও বলেন, সাধারণত এ ধরনের সমস্যা সেরে উঠতে দুই থেকে তিন মাস পর্যন্ত সময় লাগে। আপাতত তার অস্ত্রোপচারের প্রয়োজন না হলেও দীর্ঘমেয়াদি চিকিৎসা প্রয়োজন। একটি চিকিৎসক দলের মাধ্যমে তার চিকিৎসাসেবা কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। উন্নত চিকিৎসার প্রয়োজনে তার স্বজনরা ঢাকায় নিয়ে যেতে চাইলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলেও জানান ডা. তোফায়েল হোসেন ভূঁইয়া।
ওমর আলী শেখের ছেলে শেখ ফরিদ উদ্দিন বলেন, বৃহস্পতিবার সকালে হাসপাতালে ভর্তির পর থেকে আমার বাবার এ সমস্যা দেখা দেয়। বিষয়টি রংপুর জেলা প্রশাসককে জানানো হয়েছে। আপাতত ঢাকায় নিয়ে যাওয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়নি। এখানকার পরীক্ষা-নিরীক্ষার রিপোর্ট ঢাকায় পাঠানো হবে। সেখানকার চিকিৎসকরা রিপোর্ট দেখে ঢাকায় নিয়ে যেতে বললে তারপর সিদ্ধান্ত নেয়া হবে বলে উল্লেখ করেন তিনি।
রংপুর জেলা প্রশাসক আসিব আহসান বলেন, ওমর আলী শেখের শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবগত করা হয়েছে। রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসক ও রোগীর স্বজনরা যদি ঢাকায় নিয়ে যাওয়ার জন্য বলেন তাহলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে উল্লেখ করেন তিনি।
উল্লেখ্য, গত বুধবার দিবাগত রাত ৩টা-সাড়ে ৩টার দিকে দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ওয়াহিদা খানম ও তার বাবা ওমর আলীকে কুপিয়ে গুরুতর জখম করে দুর্বৃত্তরা। পরদিন সকালে আহত বাবা-মেয়েকে প্রথমে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়। পরে ইউএনও ওয়াহিদাকে বিমানবাহিনীর হেলিকপ্টারে ঢাকায় আনা হয়। তিনি এখন ঢাকার আগারগাঁওয়ে ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্স হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
আরও পড়ুন
দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠছেন ইউএনও ওয়াহিদা
ইউএনওর উপর হামলায় জড়িতদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ
টাইমস/জেকে/এইচইউ