পুরান ঢাকার সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনাল দক্ষিণাঞ্চলের সঙ্গে রাজধানীর নদীকেন্দ্রিক যোগাযোগ ব্যবস্থার একমাত্র কেন্দ্র। আর এর মাধ্যমে দক্ষিণাঞ্চলের ২২ জেলার সাধারণ মানুষ প্রতিনিয়তই যাতায়াত করেন। এই বন্দর এলাকা আর আগের মতো অপরিচ্ছন্ন নেই। এখানে এখন সুন্দর ও আধুনিকতার ছোঁয়া লেগেছে।
তবে বন্দর এলাকা আধুনিকায়ন হলেও যাত্রী হয়রানি একটু কমেনি। কুলি ও ভ্রাম্যমাণ হকারদের বিরুদ্ধে অভিযোগের অন্ত নেই। হয়রানি বন্ধে কর্তৃপক্ষের উদাসীনতাকেই দায়ী করছেন সাধারণ যাত্রীরা।
সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনালে গড়ে উঠেছে নতুন নতুন পন্টুন ও ঘাট। সেই সঙ্গে বেড়েছে টার্মিনাল এলাকার পরিধি। সব মিলিয়ে পাল্টে গেছে টার্মিনাল এলাকার পরিবেশ।
লঞ্চঘাটের সার্বিক নিরাপত্তায় ১৪টি প্রবেশপথে ২৫টি সিসি ক্যামেরা ও ২২টি মাইক স্থাপন করা হয়েছে। যাত্রীদের নিরাপত্তার জন্য ৩২ জন আনসার সদস্য মোতায়েনের পাশাপাশি ডিএমপি পুলিশ ফাঁড়ি ও নৌপুলিশের ফাঁড়িও স্থাপন করা হয়েছে।
এছাড়া সদরঘাট এলাকায় হকার, যানজট নিরসন ও নিরাপত্তার বিষয় দেখভালের জন্য সম্প্রতি বিআইডব্লিউটিএ থেকে উচ্চ পর্যায়ের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। যাত্রী হয়রানি রোধে অভিযোগ বাক্সও খোলা হয়েছে।
তবে হকার-কুলিদের দৌরাত্ম্য আগের মতোই আছে। ভ্রাম্যমাণ আদালত হকার উচ্ছেদ অভিযান চালালেও তাতে কাজ হচ্ছে না।
জানা গেছে, টার্মিনালকে হকারমুক্ত করতে নানা পদক্ষেপ নেয়া হলেও তা কাজে আসছে না। হকাররা নিরাপত্তা বাহিনীকে ‘ম্যানেজ’ করে পন্টুনে অবস্থান করে।
যাত্রী হয়রানির বিষয়ে কুলিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করলেও বিআইডব্লিউটিএর কর্মকর্তারা তা আমলে নেন না বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক লঞ্চের এক স্টাফ জানান, ইজারাদারদের স্বেচ্ছাচারিতার জন্য বন্দর কর্তৃপক্ষ নিজেই ইজারা প্রথা বাতিল করেছে। ভ্রাম্যমাণ ও অবৈধ দোকান উচ্ছেদ তো এখন নিত্য নৈমিত্তিক ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। কিন্তু তারপরও ভ্রাম্যমাণ দোকানগুলো আগের মতোই বসছে।
যাত্রীদের অভিযোগ, টার্মিনালের আধুনিকায়ন হয়েছে সত্য, তবে বন্দরে কুলিদের দৌরাত্ম্য কমেনি। এখনো প্রতিদিন টার্মিনালে যাত্রীদের লাগেজ, বস্তাসহ বিভিন্ন পণ্য আটকে রেখে নির্ধারিত হারের চেয়ে প্রায় ২০ গুণ বেশি টোল আদায় করা হয়।
কেউ কুলি দিয়ে লাগেজ পরিবহন করাতে না চাইলেও জোর করা হয়। প্রতিবাদ করলে কুলি ও ইজারাদার নিয়োজিত লোকদের হাতে নির্যাতনের শিকার হতে হয়। অনেকের লাগেজ চুরি হয়ে যায়। পুলিশের কাছে অভিযোগ করেও কোনো প্রতিকার মেলে না।
বিআইডব্লিউটিএর বন্দর বিভাগের পরিচালক মীজান বাংলাদেশ টাইমসকে বলেন, আগের চেয়ে বর্তমানে কুলিরা একটু হলেও ভালো হয়েছে। আস্তে আস্তে আমাদের আরও কঠোর পদক্ষেপে তারা ভালো হতে বাধ্য হবে।
টাইমস/টিআর/এক্স