আলিবাবার ২০তম জন্মদিনে প্রতিষ্ঠানটির সহ-প্রতিষ্ঠাতা জ্যাক মা’র অবসর গ্রহণের মধ্য দিয়ে ই-কমার্সের বৃহত্তম সংস্থাটিতে একটি সুবর্ণ অধ্যায়ের ইতি ঘটল। জ্যাক মা’র সফল ও রঙিন জীবন শৈলী তাকে চীনের সব থেকে পরিচিত ব্যবসায়ী করে তুলেছিল। তার পরিবর্তে প্রতিষ্ঠানটির বর্তমান প্রধান নির্বাহী ড্যানিয়েল ঝাঙ আলিবাবার নির্বাহী পরিচালকের দায়িত্বগ্রহণ করতে চলেছেন।
১৯৯৯ সালে প্রতিষ্ঠিত বিশ্বের অন্যতম বৃহত্তম ইন্টারনেট সংস্থা আলিবাবার বর্তমান বাজার দর ৪৮০ বিলিয়ন ডলার এবং ফোর্বস ম্যাগাজিনের তথ্য অনুযায়ী জ্যাক মা চীনের সব থেকে ধনী ব্যক্তিত্ব, যার সম্পদের পরিমাণ ৩৮.৬ বিলিয়ন ডলার।
চীনে তার প্রজন্মের বিশিষ্ট ইন্টারনেট উদ্যোক্তাদের মধ্যে তিনিই প্রথম, যিনি নিজের প্রতিষ্ঠিত প্রতিষ্ঠানের নির্বাহী প্রধানের পদ থেকে পদত্যাগ করলেন।
চাইনিজ প্রযুক্তির পথিকৃৎ বিষয়ক বইয়ের লেখক রেবেকা ফ্যানিন এ বিষয়ে বলেন, “আমি মনে করি জ্যাক মা’র শূন্যস্থান পূরণ করা কঠিন। তিনিই চীনের স্টিভ জবস।”
সোমবারে প্রকাশিত এক ভিডিও বার্তায় জ্যাক মা মন্তব্য করেন, “আমি এমন একজন ব্যক্তি, যিনি সব সময় ভবিষ্যতের দিকে তাকাতে ভালবাসেন। আমি পেছনে ফিরে তাকাতে চাই না।”
২০১৮ সালে একটি খোলা চিঠিতে তার পদত্যাগের ঘোষণা করে জ্যাক মা লিখেছিলেন, “আমার এখন পূরণের মতো অনেক স্বপ্ন বাকী আছে। যারা আমাকে চেনেন তারা জানেন যে, আমি অলস বসে থাকার লোক নই। জগতটা অনেক বড়, আর আমি এখনও তরুণ, তাই আমি নতুন কিছু করার চেষ্টা করতে চাই।”
জ্যাক মা এমনি এক সময় অবসরে যাচ্ছেন, যখন বৃহত্তর অর্থনীতির সঙ্গে চাইনিজ ই-কমার্স ইন্ডাস্ট্রির বিকাশও হ্রাস পেয়েছে এবং প্রতিষ্ঠানটি অন্য বড় বড় প্রযুক্তি সংস্থার কাছে তুমুল প্রতিযোগিতার সম্মুখীন হচ্ছে। একইসঙ্গে আলিবাবা প্রতিষ্ঠানটির বিস্তৃতি ঘটেছে অর্থ সেবা, মোবাইল পেমেন্ট, ক্লাউড কম্পিউটিং এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা খাতে।
যদিও জ্যাক মা ২০১৮ সালে শীঘ্রই অবসরের ঘোষণার মধ্য দিয়ে মানুষকে অবাক করেছেন, কিন্তু তিনি প্রতিষ্ঠানটি উপর তার মালিকানা একেবারে ছেড়ে দিচ্ছেন না।
তিনি প্রতিষ্ঠানটির ৬.২২ শতাংশ শেয়ারের মালিক এবং ২০২০ সালের শেয়ার হোল্ডারদের মিটিং অনুষ্ঠিত না হওয়া পর্যন্ত পরিচালনা পরিষদের সদস্য থাকছেন। তারপর থেকে তিনি ৩৮ সদস্য বিশিষ্ট কর্পোরেট গভর্নিং বডিতে অংশগ্রহণ করবেন, যা পরিচালনা পরিষদ হতে স্বতন্ত্র।
ভিডিও বার্তায় তিনি আরও বলেছেন, “আমি শিখেছি অনেক কোম্পানি কেন ব্যর্থ হয়। কারণ তারা তাদের দেখা স্বপ্নটি ভুলে যায়। স্বপ্নই আমাদেরকে কঠোর পরিশ্রমী করে তোলে।” সূত্র: বিবিসি ও দ্যা গার্ডিয়ান।
টাইমস/এনজে/জিএস