দেশে বজ্রপাতের তীব্রতা বাড়ার আশঙ্কা বিশেষজ্ঞদের

বাংলাদেশে আগামীতে বজ্রপাতের ঘনত্ব এবং তীব্রতা আরো বেড়ে যাবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন এক বিশেষজ্ঞ। প্রাথমিক সতর্কতামূলক পদক্ষেপ ও প্রতিরক্ষা অবকাঠামোর অভাবে গ্রামীণ এলাকার জনগণ সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

সোমবার (৬ অক্টোবর) জ্যেষ্ঠ আবহাওয়াবিদ ও জলবায়ু বিশেষজ্ঞ ড. মো. আব্দুল মান্নান বাসসকে বলেন, গ্রামীণ এবং প্রত্যন্ত অঞ্চলের যারা সচরাচর কৃষিকাজ ও মাছ ধরার মতো বাইরের কাজে নিযুক্ত, তারা সতর্কতামূলক ব্যবস্থা এবং প্রতিরক্ষা অবকাঠামোর সীমিত সুযোগের কারণে উচ্চ ঝুঁকিতে রয়েছেন।

তার মতে, চলমান জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বাংলাদেশ ঘন ঘন বজ্রপাতজনিত দুর্যোগের ঝুঁকিতে রয়েছে।

আবহাওয়াবিদ মান্নান বলেন, বর্ষা মৌসুম শুরুর আগে বজ্রসহ বৃষ্টিপাত এবং বিজলি চমকানোর হার আরও বৃদ্ধির সম্ভাবনা রয়েছে।

বাংলাদেশে জলবায়ু পরিস্থিতি বজ্রপাতের জন্য আরও অনুকূল হয়ে উঠলে, পূর্বে যেসব এলাকায় বজ্রপাতের ঘটনা কম ঘটতো, সেখানে ঘন ঘন বজ্রপাত হতে পারে বলে তিনি ভবিষ্যদ্বাণী করেন।

তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশে বজ্রপাতে মৃত্যুর সংখ্যা উদ্বেগজনকভাবে বাড়ছে। প্রতি বছর ৩০০ জনেরও বেশি মানুষ বজ্রপাতে মারা যাচ্ছেন। বিশ্বের সবচেয়ে বেশি বজ্রপাতপ্রবণ দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ একটি।

আবহাওয়াবিদ মান্নান বলেন, বজ্রপাত বৃদ্ধির এই প্রবণতা জলবায়ু পরিবর্তনের সঙ্গে নিবিড়ভাবে সম্পর্কিত।

বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধির ফলে বজ্রপাতের আওতা ও তীব্রতা বাড়ছে।

গত ৫ অক্টোবর দেশের চার জেলায় বজ্রপাতে অন্তত আটজনের প্রাণহানি ঘটেছে।

বজ্রপাত বৃদ্ধির মূল কারণ সম্পর্কে ড. মান্নান বলেন, বিশ্ব উষ্ণায়নের ফলে বজ্রপাতের ঘনত্ব এবং তীব্রতা বাড়ছে।

তিনি বলেন, বেশ কয়েকটি গবেষণায় বাংলাদেশের প্রাক-বর্ষা মৌসুমে কনভেক্টিভ অ্যাভেইলেবল পটেনশিয়াল অ্যানার্জি ৪৫ শতাংশ বৃদ্ধির পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে, যা বজ্রপাতের তীব্রতা বৃদ্ধির ঝুঁকির ইঙ্গিত দেয়।

জলবায়ু বিশেষজ্ঞ মান্নান বলেন, আঞ্চলিকভাবে দূষণের হার বেড়ে যাওয়ায় বায়ুর মান আরও খারাপ হয়েছে, যা বজ্রপাত বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখছে।

তিনি বলেন, গবেষণায় বাংলাদেশে দূষণের মাত্রা বৃদ্ধি এবং বজ্রপাতের ঘনত্ব বৃদ্ধির মধ্যে একটি শক্তিশালী যোগসূত্র পাওয়া গেছে।

লম্বা গাছ কেটে ফেলায় গ্রামীণ এলাকায় বজ্রপাতের ঝুঁকি বেড়েছে। গাছ কেটে ফেলার ফলে প্রাকৃতিকভাবে বজ্রপাত থেকে সুরক্ষা হ্রাস পেয়েছে এবং মানুষের জন্য ঝুঁকি বেড়েছে বলেও তিনি মনে করেন।

টিজে/টিকে

Share this news on:

সর্বশেষ

img
লাভনি নাচের দৃশ্যে আহত অভিনেত্রী শ্রদ্ধা কাপুর, দু’সপ্তাহ শুটিং বাতিল Nov 22, 2025
img
বিজয়ের ‘জনা নায়াগন’-এর রিমেক ছবির ঝুঁকি, সঙ্ক্রান্তি মৌসুমে প্রতিযোগিতা তীব্র Nov 22, 2025
img
ভূমিকম্প আতঙ্কে এবার জবির ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ ঘোষণা Nov 22, 2025
img
টাঙ্গাইলে বিএনপির এমপি প্রার্থীর বিরুদ্ধে মুক্তিযোদ্ধাদের বিক্ষোভ Nov 22, 2025
img
শিল্পীর জীবন, দুঃখের মাঝেও সঙ্গীত থেমে থাকে না: পাপন Nov 22, 2025
img
ঢাবির ঝুঁকিপূর্ণ হল পরিদর্শন করবে বুয়েটের বিশেষজ্ঞ দল Nov 22, 2025
img
'ওয়ার ২' এর মাধ্যমে নিজেকে আবারও প্রমাণ করলেন হৃত্বিক রোশান Nov 22, 2025
img
বাভুমার অসাধারণ কীর্তির পরও চাপের মুখে প্রোটিয়ারা Nov 22, 2025
img
‘অনুরাগের ছোঁয়া’ হঠাৎ বন্ধ, রাহুল মজুমদারের বিস্ময় Nov 22, 2025
img
রাজধানীর মহাখালীতে চলন্ত বাসে আগুন Nov 22, 2025
img
বাংলাদেশের সঙ্গে মুক্তবাণিজ্য চুক্তি স্বাক্ষরকারী প্রথম দেশ ভুটান হবে: ভুটানের প্রধানমন্ত্রী Nov 22, 2025
img
প্রধান উপদেষ্টাকে মিসগাইড করা হচ্ছে : গোলাম পরওয়ার Nov 22, 2025
img
বর্তমান সংবিধানই বিচার বিভাগের বৈধতার বাতিঘর : প্রধান বিচারপতি Nov 22, 2025
img
আগে দুর্নীতি হতো বস্তাভর্তি টাকা দিয়ে, এখন হচ্ছে ক্রিপ্টোকারেন্সিতে : আব্বাসী Nov 22, 2025
img
মেট্রোরেল লাইনে ড্রোন, সাময়িক স্থবিরতার পর আবার ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক Nov 22, 2025
যে ছয়টি কাজ করলে দোয়া কবুল হবে Nov 22, 2025
img
ঢাবির রবিবারের সব ধরনের ক্লাস-পরীক্ষা স্থগিত ঘোষণা Nov 22, 2025
img
ভূমিকম্পে নিটোরে আহত ১১৯ জনের চিকিৎসা, ভর্তি ২৩ Nov 22, 2025
img
মুশফিককে কেন রেকর্ড গড়ার সুযোগ দেওয়া হয়নি, ব্যাখ্যা দিলেন আশরাফুল Nov 22, 2025
img
১ সেকেন্ডের ব্যবধানে ২ বার ভূমিকম্প : আবহাওয়া অধিদপ্তর Nov 22, 2025