সুন্দরবনের দুবলারচরে আগামী ৩ থেকে ৫ নভেম্বর সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় আধ্যাত্মিক আয়োজন রাসপূর্ণিমা পূজা ও পুণ্যস্নান অনুষ্ঠিত। হাজারো তীর্থযাত্রী যেন নির্বিঘ্নে সেখানে পৌঁছাতে পারেন, সেই নিশ্চয়তায় পাঁচটি রুট নির্ধারণ করেছে বন বিভাগ। নিরাপত্তা, নিয়ন্ত্রণ ও পরিবেশ সুরক্ষায় নেওয়া হয়েছে বিশেষ ব্যবস্থা।
প্রতিবছর দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে হাজারো সনাতন ধর্মাবলম্বী এ তীর্থযাত্রায় অংশ নেন। তীর্থযাত্রীদের নিরাপদ চলাচল নিশ্চিত করতে এবারও সুন্দরবন পশ্চিম বন বিভাগ নির্ধারণ করেছে পাঁচটি অনুমোদিত রুট।
বন বিভাগ জানিয়েছে, রাসপূজা উপলক্ষ্যে শুধুমাত্র সনাতন ধর্মাবলম্বীদের যাতায়াতের অনুমতি থাকবে। নির্ধারিত রুটে বন বিভাগ, পুলিশ, বিজিবি ও কোস্টগার্ডের যৌথ টহল দল নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকবে।
নির্ধারিত পাঁচটি রুল হলো
১ বুড়িগোয়ালিনী-কোবাদক-বাটুলানদী-বলনদী-পাটকোষ্টা খাল-হংসরাজ নদী হয়ে দুবলার চর
২. কয়রা-কাশিয়াবাদ-খাসিটানা-বজবজা-আড়ুয়া শিবসা-মরজাত হয়ে দুবলার চর
৩. নলিয়ান স্টেশন-শিবসা-মরজাত নদী হয়ে দুবলার চর
৪. ঢাংমারী/চাঁদপাই স্টেশন-তিনকোনা দ্বীপ-পশুর নদী হয়ে দুবলার চর
৫. বগী-বলেশ্বর-সুপতি-কচিখালী-শেলারচর হয়ে সুন্দরবনের বাহির দিয়ে দুবলার চর।
বন বিভাগের নির্দেশনায় বলা হয়েছে, ৩ নভেম্বর দিনের ভাটায় যাত্রা শুরু করতে হবে এবং শুধুমাত্র দিনের বেলাতেই নৌযান চলাচল করা যাবে। নির্ধারিত চেকিং পয়েন্ট ছাড়া কোথাও থামা যাবে না।
নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রতিটি ট্রলারে লাইফ জ্যাকেট বা বয়া রাখা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। প্রতিটি লঞ্চ বা ট্রলারের গায়ে বি, এল, সি/সিরিয়াল নম্বর ও তীর্থযাত্রীর সংখ্যা স্পষ্টভাবে লেখা থাকবে। তীর্থযাত্রীদের প্রবেশের সময় টোকেন বা টিকিট দেওয়া হবে, যা সবসময় সঙ্গে রাখতে হবে।
বন বিভাগ আরও জানিয়েছে, রাসপূজায় বিস্ফোরকদ্রব্য, আগ্নেয়াস্ত্র, শিকার সামগ্রী, একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক ও শব্দদূষণকারী যন্ত্র বহন সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। কারও কাছে এসব পাওয়া গেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
তীর্থযাত্রীদের জাতীয় পরিচয়পত্রের কপিসহ আবেদন করে অনুমতি নিতে হবে। প্রতিটি নৌযানকে আলোরকোল কন্ট্রোলরুমে রিপোর্ট করতে হবে এবং রুট উল্লেখসহ সিলমোহরযুক্ত অনুমতিপত্র রাখতে হবে।
সুন্দরবন পশ্চিম বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা এজেডএম হাসানুর রহমান বলেন, রাসপূজা উপলক্ষ্যে আমাদের সব প্রস্তুতি প্রায় শেষ। নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা বিভিন্ন রুটে দায়িত্ব পালন করবেন। আশা করছি শান্তিপূর্ণ ও সুশৃঙ্খলভাবে এবারের রাস উৎসব সম্পন্ন হবে।
টিজে/টিকে