কাজের বিনিময়ে পাকা কলা উৎকোচ নেওয়ার কথা স্বীকার করায় যশোর জেলা পরিষদের উচ্চমান সহকারী আলমগীর হোসেনকে বদলির নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। রবিবার (২৬ অক্টোবর) যশোরে অনুষ্ঠিত দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) গণশুনানিতে কমিশনার মিঞা মুহাম্মদ আলি আকবর আজিজী এ নির্দেশ দেন।
অভিযোগকারী রুস্তম আলীর দাবি, আলমগীর হোসেন তার কাছ থেকে পাকা কলা ছাড়াও ১০ হাজার টাকা ঘুষ নিয়েছিলেন। পরে তিনি আরো ছয় লাখ টাকা দাবি করেন।
রুস্তম আলী তা না দেওয়ায় জেলা পরিষদের জমির ডিসিআর অন্য ব্যক্তিকে দিয়ে দেন ওই কর্মকর্তা।
‘রুখব দুর্নীতি, গড়ব দেশ; হবে সোনার বাংলাদেশ’—এই প্রতিপাদ্য নিয়ে যশোর শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয় আজকের গণশুনানি। এতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে দুদক চেয়ারম্যান ড. আবদুল মোমেন বলেন, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে দুর্নীতির ধরন বদলে যাচ্ছে। যতই দিন যাচ্ছে, ততই দুর্নীতি বাড়ছে।
মানুষ পারাপার করেও এখন টাকা আদায় করছে—যশোরে এসে নতুন ধরনের দুর্নীতি দেখলাম। স্বৈরাচারের দোসর হোক বা মামলার আসামি—তারা এখানকার প্রভাবশালী রাজনৈতিক মহলের সহায়তায় ভারতে পালিয়ে যাচ্ছে। এটি রাষ্ট্রের প্রত্যাশাকে ব্যাহত করছে। এ ধরনের ঘটনা যেন না ঘটে, সবাইকে সজাগ থাকতে হবে।
দুদক চেয়ারম্যান আরো বলেন, দুদক একা দুর্নীতি নির্মূল করতে পারবে না, তবে কমাতে পারবে। আমরা গণশুনানির মাধ্যমে জনগণ ও কর্মকর্তাদের মুখোমুখি করছি, যাতে জবাবদিহি বাড়ে। এতে দুর্নীতি অনেকটাই কমে আসবে।
দুর্নীতির কারণেই অতীতে সরকার পতন ঘটেছে উল্লেখ করে ড. মোমেন বলেন, সামনে নির্বাচন। সবাইকে নিজ নিজ জায়গা থেকে দায়িত্ব নিতে হবে।
সৎ প্রার্থীকে বেছে নিতে হবে। গত ১৫ বছরের ইতিহাসে সরকারের রন্ধ্রে রন্ধ্রে দুর্নীতি ছিল—ফলে আজকের এই অবস্থা। দুর্নীতিগ্রস্তদের বেছে না নেওয়াই হবে রাষ্ট্রের প্রতি সুবিচার। ন্যায়ের ও দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশের যাত্রা যশোর থেকেই শুরু হবে।
জেলা প্রশাসন ও জেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সহযোগিতায় দুদক যশোর কার্যালয়ের আয়োজনে এ গণশুনানি অনুষ্ঠিত হয়। এতে বিশেষ অতিথি ছিলেন দুদক কমিশনার মিঞা মুহাম্মদ আলি আকবর আজিজী। শুনানিতে মডারেটর হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন জেলা প্রশাসক মো. আজাহারুল ইসলাম।
শুনানিতে সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও বেসরকারি ৩৭টি দপ্তরের ৭৫টি অভিযোগের শুনানি গ্রহণ করা হয়। শুনানি শেষে কিছু অভিযোগে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেন দুদক চেয়ারম্যান, আর কয়েকটি বিষয়ে তদন্তের নির্দেশ প্রদান করা হয়।
এসএন