শ্রুতি হাসানের সাম্প্রতিক স্বীকারোক্তি যেন মুম্বাই সিনেমার জৌলুসের আড়ালে লুকিয়ে থাকা এক আত্মকথা। নিজের শরীর, নিজের সিদ্ধান্ত—এই সরল অথচ দৃঢ় বাক্য উচ্চারণ করে তিনি ভেঙে দিলেন বহুদিনের নীরবতা। এক পডকাস্টে তিনি অকপটে জানালেন নাকের অস্ত্রোপচার থেকে শুরু করে লিপ ফিলার—সবই করেছেন নিজের প্রয়োজনেই, নিজের আত্মবিশ্বাসের জন্যেই।
শ্রুতির কথায় উঠে আসে এক সময়কার ভেঙে যাওয়া নাক ও ডিভিয়েটেড সেপটামের যন্ত্রণা। তাঁর অভিনয় জীবনের শুরুতে, বিশেষ করে ২০০৬ সালের ছবি লাকি: নো টাইম ফর লাভ–এর সময় এই পরিবর্তন ছিল স্পষ্ট। সে সময় ট্রোলিং, কটুক্তি সবই নেমে এসেছিল তাঁর ওপর। কেউ কেউ তাঁকে বলেছিল ‘প্লাস্টিক সার্জারির দোকান’। কিন্তু তিনি নিজের সিদ্ধান্তের পাশে আজও একইভাবে দাঁড়িয়ে আছেন। বলতে দ্বিধা নেই “যদি ঠিক করা যায় আর আমাকে ভালো অনুভব করায়, তবে এ মুখ আমারই। কারও অনুমতির দরকার নেই।”
শ্রুতির মতে, চলচ্চিত্র জগৎ নিজেই দ্বৈতনীতিতে ভরা। সৌন্দর্য বৃদ্ধি করা এখানে প্রায়ই নীরব একটি নিয়ম, কিন্তু প্রকাশ্যে কেউই মুখ খোলে না। এমন শিল্পে দাঁড়িয়ে তিনি আজ নিজের অভিজ্ঞতা জানানোর মাধ্যমে খুলে দিয়েছেন আলোচনার নতুন পথ যেখানে শরীর নিয়ে সিদ্ধান্ত ব্যক্তিগত, বিচার নয়।
নারীদের শরীর নিয়ে সমাজের দীর্ঘদিনের ভ্রান্ত মানদণ্ড, সৌন্দর্য নিয়ে চাপে থাকা, কিংবা নিজের ইচ্ছেমতো পরিবর্তন করলেও লজ্জা পাওয়ার প্রবণতা সবকিছুতেই প্রশ্ন তুলে দিয়েছেন শ্রুতি। তাঁর এই স্পষ্ট অবস্থান শুধু সাহসী নয়, আত্মমর্যাদা আর স্বচ্ছতার নতুন ভাষা।
এমকে/এসএন