২০২৬ সালের ফুটবল বিশ্বকাপের গ্রুপ পর্বের ড্র হবে আজ। আর সেই ড্র–ই হতে পারে এক ঐতিহাসিক ঘোষণার মঞ্চ। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে দেওয়া হতে পারে প্রথম ফিফা শান্তি পুরস্কার (ফিফা পিস প্রাইজ)। ফিফার নতুন এই পুরস্কার নিয়ে ইতিমধ্যে বিশ্বজুড়ে চলছে নানা আলোচনা-সমালোচনা। ন্যাশনাল ওয়ার্ল্ডের প্রতিবেদন।
ফিফা জানিয়েছে, শান্তি প্রতিষ্ঠা ও মানুষকে একত্রিত করার ক্ষেত্রে যাঁরা উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখেন, তাদের সম্মান জানাতেই এই পুরস্কার চালু করা হয়েছে। ফিফার ভাষায়, এই পুরস্কার দেওয়া হবে ‘বিশ্বের পাঁচ শ কোটি ফুটবল–সমর্থকের পক্ষ থেকে।’
ফিফার বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘বিশেষ পদক্ষেপ এবং নিরলস প্রতিশ্রুতির মাধ্যমে যারা বিশ্ববাসীকে শান্তির বার্তায় যুক্ত করেছেন, তাদের তুলনাহীন অবদানকে স্বীকৃতি দিতেই এই পুরস্কার।’
ফিফা সভাপতি জিয়ান্নি ইনফান্তিনো এই নতুন পুরস্কারকে শান্তি প্রতিষ্ঠার পথে এক গুরুত্বপূর্ণ উদ্যোগ হিসেবে বর্ণনা করেছেন। তার ভাষায়, ‘একটি ক্রমশ অস্থির ও বিভাজিত বিশ্বে শান্তির জন্য নিরলসভাবে কাজ করা মানুষদের স্বীকৃতি দেওয়া অত্যন্ত জরুরি। ফুটবল শান্তির প্রতীক, আর ফিফা পিস প্রাইজ—ফুটবল ইউনাইটস দ্য ওয়ার্ল্ড সেইসব ব্যক্তিকে সম্মান জানাবে যাঁরা মানুষকে একত্রিত করেছেন।’
তবে ইনফান্তিনোর এই উদ্যোগকে সবাই ইতিবাচকভাবে দেখছেন না। সমালোচকদের মতে, ট্রাম্পের সঙ্গে ইনফান্তিনোর সাম্প্রতিক ঘনিষ্ঠতা এই পুরস্কার ঘোষণার পেছনে বড় ভূমিকা রেখেছে। কয়েক মাস আগেই ইনফান্তিনো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লিখেছিলেন, মধ্যপ্রাচ্যে ট্রাম্পের সিদ্ধান্তমূলক পদক্ষেপে তিনি নোবেল শান্তি পুরস্কারের যোগ্য।
সে সময় নোবেল কমিটি ট্রাম্পকে পুরস্কারের জন্য বিবেচনা না করায় অনেকে মনে করছেন, ফিফার এই পুরস্কার যেন ট্রাম্পের জন্য একধরনের সান্ত্বনা পুরস্কার।
বিশ্বকাপের ড্র অনুষ্ঠানটি হচ্ছে ওয়াশিংটন ডিসিতে, হোয়াইট হাউস থেকে মাত্র কয়েক পা দূরে। ডোনাল্ড ট্রাম্প স্বয়ং অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন বলেও জানা গেছে। ফলে অনেকে ধরে নিচ্ছেন, এই উপস্থিতি শুধুমাত্র আনুষ্ঠানিকতা নয়— বরং পুরস্কারপ্রাপ্তি নিশ্চিত হওয়ার ইঙ্গিতই বহন করছে।
যদিও বিতর্ক থামছে না, ফিফার দাবি— ফুটবলের মাধ্যমে বিশ্বকে একত্রিত করার মূল বার্তাটিকেই সামনে আনতে চায় তারা। শান্তি প্রতিষ্ঠার উদ্যোগকে ফুটবলের প্রভাবের সঙ্গে যুক্ত করার লক্ষ্যেই এই পুরস্কার চালু।
আনুষ্ঠানিকভাবে ফিফা এখনো প্রাপকের নাম ঘোষণা করেনি। তবে ড্র অনুষ্ঠানের স্থান, সময় এবং ট্রাম্পের উপস্থিতি সব মিলিয়ে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলো ধরে নিচ্ছে— প্রথম ফিফা শান্তি পুরস্কার পাচ্ছেন ডোনাল্ড ট্রাম্পই।
ফুটবলের বৈশ্বিক মঞ্চে এবার তাই শুধু ড্রয়ের উত্তেজনা নয়— শান্তি পুরস্কারকে ঘিরেও নজর থাকবে সবার।