সিলেটের একমাত্র আসন যেখান থেকে অতীতে জামায়াত তার শক্ত অবস্থান জানান দিয়েছে। এছাড়া জেলার অন্য কোনো আসনে (সিলেট-১, ২, ৩, ৪, ৬) জামায়াতে ইসলামীর কোনো প্রার্থী এ পর্যন্ত নির্বাচিত হননি। সিলেট-৫ আসনে জামায়াত মনোনীত আনোয়ার হোসেন খান। এখন পর্যন্ত তার বিপরীতে কোন প্রার্থী ঘোষণা দেয়নি বিএনপি। আসনটিকে জামায়াত তাদের সবচেয়ে সম্ভাবনাময় আসন হিসেবে চিহ্নিত করছে।
ক্লিন ইমেজের আনোয়ার হোসেন খান এবারই প্রথম সংসদ সদস্য পদে প্রার্থী হয়েছেন। জকিগঞ্জ-কানাইঘাট এই দুই উপজেলা নিয়ে সিলেট-৫।
স্থানীয় জামায়াত সূত্র বলছে, প্রথমবারের মতো সংসদ সদস্য প্রার্থী হলেও আনোয়ার হোসেন খানকে বহু আগে থেকে প্রার্থী হিসেবে ঠিক করেছে দলটি। জকিগঞ্জ কানাইঘাট এই দুই উপজেলায় তার যাতায়াত ছিল প্রতিনিয়ত। তৃণমূলের সঙ্গে ব্যাপক জনসম্পৃক্ততা তৈরিতে তিনি গেল কয়েক বছর ধরেই কাজ করছেন।
জামাতে ইসলামের নেতৃস্থানীয় সূত্র বলছে , জকিগঞ্জ ও কানাইঘাট এলাকায়
বন্যা ও খরা মোকাবিলা, শীতবস্ত্র বিতরণ, অসহায়-নির্যাতিত মানুষের সহযোগিতা, মসজিদ -মাদ্রাসার উন্নয়নসহ দীর্ঘদিনের মানবিক কার্যক্রম তাঁকে এলাকাবাসীর কাছে এক ‘নীরব সেবক’ হিসেবে পরিচিত করেছে। কানাইঘাট-জকিগঞ্জের মানুষের সুখ-দুঃখে তাঁর ধারাবাহিক উপস্থিতি তাঁকে ভোটারদের অনুভূতির কাছাকাছি এনে দিয়েছে।
ছাত্রজীবনে ইসলামী ছাত্রশিবিরের সিলেট ও মৌলভীবাজার জেলা শাখার সভাপতি হিসেবে নেতৃত্ব দেন তিনি। পরবর্তীতে জামায়াতে ইসলামীতে যোগ দিয়ে মৌলভীবাজার জেলা থেকে শুরু করে সিলেট জেলা জামায়াতের উত্তর শাখার সেক্রেটারি এবং টানা ১৫ বছর জেলা আমীর হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
বর্তমানে তিনি সিলেট জেলা জামায়াতের নায়েবে আমীর।
প্রায় ১০ বছর মৌলভীবাজারের শাহ মোস্তফা একাডেমির প্রিন্সিপাল হিসেবে তিনি সফলভাবে দায়িত্ব পালন করেন। পাশাপাশি সিলেটের স্বনামধন্য শাহজালাল জামেয়া মাদ্রাসায় তাঁর শিক্ষকতা তাঁকে আরও ব্যাপক পরিচিতি এনে দেয়।
স্থানীয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পরিচালনা, মেধাবৃত্তি প্রদান, শিক্ষার্থীদের উন্নয়নে বিভিন্ন উদ্যোগ-সব মিলিয়ে শিক্ষা অঙ্গনে তিনি একজন গ্রহণযোগ্য ব্যক্তিত্ব হিসেবে সিলেটে পরিচিত।
ছাত্র জীবনে হিফজ শেষ করার পর তিনি দাখিল, আলিম, ফাজিল ও কামিল-প্রতিটি স্তরে কৃতিত্বের ছাপ রেখে উচ্চশিক্ষা অর্জন করেন। ফুলবাড়ি আজিরিয়া আলীয়া মাদ্রাসা এবং সিলেট সরকারি আলীয়া মাদ্রাসা থেকে কামিল (মাস্টার্স) ডিগ্রি তাঁকে একজন মেধাবী আলেম হিসেবে পরিচিত করে তোলে।
স্থানীয় সূত্র বলছে, তৃণমূলে বিএনপি'র প্রতিদ্বন্দ্বী শক্ত প্রার্থী না থাকা এবং অন্য দলগুলোর মধ্যেও গ্রহণযোগ্য প্রার্থী না থাকায় সুবিধাজনক অবস্থানে রয়েছেন এই জামায়াত নেতা। তার দীর্ঘ সামাজিক সেবামূলক কার্যক্রম তাঁকে এই আসনে বিপুল ব্যবধানে জয়ের সম্ভাবনাময় করে তুলেছে। তাছাড়া ঐতিহাসিকভাবে সিলেট বিভাগে জামায়াতে ইসলামী-এর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ও শক্তিশালী ঘাঁটি সিলেট-৫ আসন। যা কানাইঘাট-জকিগঞ্জ উপজেলা নিয়ে গঠিত । এই আসনে ২০০১ সালে জামায়াত প্রার্থী মাওলানা ফরিদ উদ্দিন চৌধুরি জয় লাভ করেন। সেই সাথে এবার পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে জামায়াত নেতৃত্বাধীন ৮ টি ইসলামী দলের জোটের ভোট যোগ হবে এই এই আসনে।
পিএ/টিএ