ময়মনসিংহের ধোবাউড়া উপজেলায় এক শিশুকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের পর শ্বাসরোধে হত্যার ঘটনায় গ্রেপ্তারকৃত দুজন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
বুধবার (২২ মার্চ) আদালত পুলিশ পরিদর্শক মো. জসিম উদ্দিন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। এর আগে মঙ্গলবার (২১ মার্চ) বিকেল সাড়ে ৫টায় ময়মনসিংহ মুখ্য পাঁচ নম্বর আমলী আদালতের বিচারক ইকবাল হোসাইন গ্রেপ্তার একজনকে কারাগারে পাঠালেও আরেকজন শিশু হওয়ায় গাজীপুরের কিশোর উন্নয়ন কেন্দ্রে পাঠানোর নির্দেশ দেন। সোমবার (২০ মার্চ) রাতে ধোবাউড়া সদর উপজেলা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তারকৃত ব্যক্তিরা হলেন, উপজেলার গামারিতলা ইউনিয়নের কলসিন্দুর গ্রামের মো. ইসরাফিলের ছেলে ১৯ বছর বয়সী মো. ইউসুফ ও একই গ্রামের ১৫ বছর বয়সী আরেকটি কিশোর।
নিহত শিশু একই গ্রামের দিনমজুর খোকন মিয়ার মেয়ে নুসরাত জাহান মীম (১১)। তিনি স্থানীয় একটি মাদরাসার তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিলেন।
পুলিশের ভাষ্য, মীম গত শনিবার সন্ধ্যার দিকে নিখোঁজ ছিল। পরিবারের লোকজন খুঁজতে গিয়ে একই দিন রাত ৯টার দিকে বাড়ির পাশে নিতাই নদীতে তার মরদেহ পড়ে থাকতে দেখেন। পরে সংবাদ পেয়ে রাত ১১টার দিকে মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়। এ সময় শিশু মীমের গলায় আঘাতের চিহ্ন ও ধর্ষণের আলামত পাওয়া যায়।
বাবা খোকন মিয়া জানান, শনিবার বিকেলে মীম আমাকে বলেছিল বাজার থেকে খাবার নিয়ে আসতে। পরে বাজারে চলে গেলে সন্ধ্যার আগ মুহূর্তে বাড়ি থেকে সংবাদ আসে মেয়েকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। এমতাবস্থায় দ্রুত ছুটে এসে খোঁজাখুঁজির একপর্যায়ে নদীর কিনারায় মরদেহ পাওয়া যায়।
ধোবাউড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) টিপু সুলতান জানান, এ ঘটনায় অজ্ঞাতনামা আসামি করে মামলা দায়ের করে নিহত শিশুটির পরিবার। এ ঘটনায় চারজনকে আটকের পর দুজনকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। বাকি দুজনকে ছেড়ে দেওয়া হয়।
ময়মনসিংহ জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সফিকুল ইসলাম জানান, হত্যার রহস্য উদঘাটন করতে গ্রেপ্তারকৃত ব্যক্তিদের ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করেছি। এ সময় তারা জানান, ‘মীম বাড়ি থেকে বাইরে আসলে তাকে তুলে নিয়ে কলাবাগানে নিয়ে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ করা হয়। পরে ধর্ষণ শেষে ওই দিন রাত ৮টায় তাকে শ্বাসরোধে হত্যা করে নিকটবর্তী নদীতে মরদেহ ভাসিয়ে দেয় অভিযুক্তরা। পরে সেখান থেকে তারা পালিয়ে যান।