'দলীয় সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন হতে পারে না'- তাহের, জামায়াতের নায়েবে আমির

দলীয় সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন হতে পারে না 
জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির ও সাবেক সংসদ সদস্য ডা. সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের বলেছেন, আওয়ামী লীগ, শেখ হাসিনা বা দলীয় সরকারের অধীনে বাংলাদেশের সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়। জামায়াতের পক্ষ থেকে কেয়ারটেকার বা নির্বাচনকালীন সরকার ব্যবস্থার বিষয়টি উত্থাপন করা হয়েছে।

ঢাকা সফররত ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) প্রতিনিধি দলের সঙ্গে ঘণ্টাব্যাপী বৈঠক শেষে শনিবার বিকেল সাড়ে ৩টায় সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন তিনি।

এর আগে বৈঠকে অংশ নিতে দুপুর আড়াইটায় ডা. সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহেরের নেতৃত্বে রাজধানীর গুলশান-২ ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন কার্যালয়ে প্রবেশ করে জামায়াতের চার সদস্যের প্রতিনিধি দল।

ডা. সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের বলেন, বৈঠকে আমরা স্পষ্ট বলেছি কেয়ারটেকার সরকার, নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে হতে হবে আগামীর নির্বাচন। এর বাইরে দলীয় সরকারের অধীনে বাংলাদেশের মানুষ দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনে যাবে না। আগামীতে প্রতারণামূলক ও পাতানো নির্বাচনের ভার আর এই দেশ বহন করতে পারবে না।

তিনি বলেন, ২০১৪ ও ২০১৮ সালের নির্বাচনের মাধ্যমে সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হয়েছে যে, এই সরকারের অধীনে, শেখ হাসিনার অধীনে সুষ্ঠু অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হতে পারে না।

তাহের বৈঠক সম্পর্কে বলেন, বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি, আগামী নির্বাচন, এবং কেয়ারটেকার সরকারের অধীনে নির্বাচন স্বচ্ছ, ক্রেডিবল, পার্টিসিপেটরি, লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড কীভাবে তৈরি করা যায়, এসব ব্যাপারে আমাদের সঙ্গে মতবিনিময় হয়েছে।

তিনি বলেন, আমরা স্পষ্ট বলেছি, ২০১৪ ২০১৮ সালের নির্বাচনের মতো বর্তমান সরকারের অধীনে যে প্রহসনে নির্বাচন হয়েছে পুরো জাতি ও বিশ্ববাসীর কাছে পুরোপুরি পরিষ্কার। ওই দুটি নির্বাচন কোনো নির্বাচন ছিল না নির্বাচনের নামে প্রহসন ছিল। ২০১৪ সালে জাতি দেখেছে, একটি নির্বাচনের আগেই ১৫৪ জন বিনা ভোটে নির্বাচিত হয়েছেন। একটি জাতীয় নির্বাচনের আগেই যদি মেজরিটি পার্সেন্ট নির্বাচিত হয়ে যায়, সেটাকে আসলে নির্বাচন বলা যায় না। সেজন্য নতুন শব্দ আবিষ্কার করতে হবে।

তাহের বলেন, ২০১৮ সালে আমরা সকল দলেই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছিলাম। সেই নির্বাচনের পূর্বে ডায়ালগ হয়েছিল, যিনি আজকে সরকার প্রধান তিনি বারবারই বলেছিলেন। আমি বঙ্গবন্ধুর কন্যা আমি যা বলি তা থেকে সরে যাই না। ২০১৮ সালের নির্বাচন অবাধ হবে, সুষ্ঠু হবে এমনটি তিনি বলেছিলেন। কিন্তু আমরা দেখেছি, নির্বাচনটা আগের রাতেই হয়ে গিয়েছিল। এটাও পৃথিবীর ইতিহাসে একটি নতুন সংযোজন। আমরাও আশা করেছিলাম কিছুটা হলেও সরকার ডেমোক্রেটিক হয়েছে। হিউম্যান রাইটসের ব্যাপারে কিছুটা হলেও তারা সম্মান দেখাবে। কিন্তু সিলেটে জামায়াত কর্তৃক ডাকা সমাবেশের অনুমতি না দিয়ে ফ্যাসিবাদী স্বৈরাচারের চিত্রই আমাদের সামনে এসেছে।

তাহের দাবি করেন, যে সরকার নির্বাচনের ঠিক চার মাস আগে এখনই সভা, সমাবেশ করতে দিচ্ছে না, আমাদের সকল অফিস খুলতে দিচ্ছে না, এরকম একটা সময়ে আগামী নির্বাচন অবাধ সুষ্ঠু নিরপেক্ষ হয়ে যাবে এমনটা আশা করার সুযোগ নেই। সরকার এখনই প্রমাণ করছে, তাদের অধীনে আসলে সকল দলের অংশগ্রহণে একটি সুষ্ঠু নির্বাচন হতে পারে না। সেই কথাটি আমরা অত্যন্ত পরিষ্কারভাবে ইইউ প্রতিনিধি দলকে বলেছি। তারাও আমাদের সঙ্গে ডিপ্লোম্যাটিক ভাষায় ঐক্যমত্য পোষণ করেছেন।

তারা আমাদের কাছে জানতে চেয়েছেন যে জাতীয় নির্বাচন উপলক্ষ্যে তাদের পর্যবেক্ষক প্রতিনিধি পাঠানোর বিষয়টি আমরা কীভাবে দেখছি?

আমরা বলেছি, বাংলাদেশের যে কোনো নির্বাচনে আমরা তাদের প্রতিনিধিকে ওয়েলকাম জানাই। কিন্তু নির্বাচনের নামে যদি প্রহসন হয় তাহলে তো এখানে পর্যবেক্ষক পাঠানো অর্থহীন। অবৈধ নির্বাচনকে দেখতে আসাটা সম্মানজনক হবে কিনা সেটি আপনাদের বিবেচনা। একদলীয় সরকারের দিনে নির্বাচন দেখতে আসাটা আমরা মনে করি সমীচীন হবে না।

Share this news on:

সর্বশেষ

img
মহেশ বাবুর 'এসএসএমবি ২৯' সিনেমাতে বড় চমক! Jul 10, 2025
img
বড় তারকারা ব্যর্থ, অথচ 'ছাভা' বাজিমাত! ওয়ার ২ কি পারবে ১ কোটির টিকিট বিক্রি পেরোতে? Jul 10, 2025
img
মৌলভীবাজারে সেপটিক ট্যাংকে পড়ে প্রাণ গেল ৪ জনের Jul 10, 2025
img
ঈদুল ফিতরে মুক্তি পাচ্ছে নিশো-চঞ্চল-এর ‘দম’ Jul 10, 2025
img
জেনে নিন দেশের বাজারে আজকের স্বর্ণ ও রুপার দাম Jul 10, 2025
img
জুলাই সনদ কোনো কবিতা না, আমাদের বাঁচার সনদ : হাসনাত আব্দুল্লাহ Jul 10, 2025
img
মেসির জোড়া গোলে টানা দ্বিতীয় ম্যাচ জিতল মায়ামি Jul 10, 2025
img
জাতিসংঘের বিশেষ দূতের ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞা Jul 10, 2025
img
বাংলাদেশে বিনিয়োগে অনেক চ্যালেঞ্জ : চীনা রাষ্ট্রদূত Jul 10, 2025
img
ব্রাজিলের ওপর ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপের হুমকি ট্রাম্পের Jul 10, 2025
img
১০ জন ইসরায়েলি বন্দিকে মুক্তি দিতে রাজি হামাস Jul 10, 2025
img
তারেক রহমান এখন আরো পরিপক্ব ও যোগ্য নেতা: মান্না Jul 10, 2025
img
স্ত্রীর সঙ্গে দুর্ব্যবহার, চিকিৎসকের ওপর ক্ষেপে গেলেন কাঞ্চন Jul 10, 2025
img
ইন্টারনেট ছাড়াই চলবে হোয়াটসঅ্যাপের নতুন প্রতিদ্বন্দ্বী বিটচ্যাট Jul 10, 2025
img
এসএসসি পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ দুপুর ২ টায় Jul 10, 2025
img
গাজায় একদিনে প্রাণ গেল আরও ৭৪ ফিলিস্তিনির Jul 10, 2025
img
শাহরুখকে ছাড়াই হারিয়ে গেল রাকেশ শর্মার বায়োপিক ‘সারে জাহাঁ সে আচ্ছা’! Jul 10, 2025
img
ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপে রিয়ালকে ৪-০ গোলে হারিয়ে ফাইনালে পিএসজি Jul 10, 2025
img
দুপুরের মধ্যে দেশের ৭ জেলায় ৬০ কি.মি. বেগে ঝড়ের আভাস Jul 10, 2025
img
চট্টগ্রামে চুরি হওয়া স্বর্ণালংকারসহ ১ জন গ্রেফতার Jul 10, 2025