ভালোবাসা কখনও ক্যালেন্ডারের পাতায় বন্দি নয়, তবু ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি একদিন যেন অনুভূতিগুলো একটু বেশিই রঙিন হয়ে ওঠে। বসন্তের স্নিগ্ধতায় ভালোবাসা দিবস আসে সম্পর্কের উজ্জ্বলতা বাড়িয়ে দিতে। এই দিনটি শুধু প্রেমিক-প্রেমিকার নয়, বরং বন্ধুত্ব ও পরিবারের প্রতিও ভালোবাসা প্রকাশের বিশেষ সুযোগ। তবে সময়ের স্রোতে বদলেছে ভালোবাসার ভাষা, পাল্টেছে উদযাপনের ধরন। একসময় যা ছিল সংকোচের, আজ তা প্রকাশ্য। ভালোবাসা দিবস তাই শুধু উদযাপনের নয়, সম্পর্কের মূল্য বুঝে সংযম ও আন্তরিকতার সঙ্গে ভালোবাসার সত্যিকার অর্থ খুঁজে পাওয়ারও দিন। এ এক চিরন্তন আবেগের উৎসব।
বাংলাদেশে ভালোবাসা প্রকাশের পথ একসময় সহজ ছিল না। সত্তর ও আশির দশকে প্রেম মানেই ছিল গোপনীয়তা। তখন প্রেমিক-প্রেমিকারা লুকিয়ে চিঠি আদান-প্রদান করতেন, রাতে ল্যান্ডফোনে কথা বলতেন, কিংবা দূর থেকে এক ঝলক দেখাই ছিল একমাত্র সুখ। প্রেম মানেই ছিল পারিবারিক ও সামাজিক কঠোরতার মুখোমুখি হওয়া।
নব্বইয়ের দশকে প্রেমের বিষয়টি কিছুটা উন্মুক্ত হলেও এখনকার মতো ভালোবাসা দিবস পালন ছিল কল্পনার বাইরে। তখন ভালোবাসার প্রকাশ ছিল অনেক সীমাবদ্ধ এবং পরিবার কিংবা সমাজ সহজভাবে নিতো না। শুধু প্রেম নয়, পরিবার পরিজনের প্রতিও আয়োজন করে ভালোবাসা প্রকাশের রীতি ছিল না।
ভালোবাসা দিবস নিয়ে বাংলাদেশে এখনও নানা বিতর্ক রয়েছে। কিছু অংশ একে ‘পাশ্চাত্য সংস্কৃতি’ হিসেবে দেখে, কেউ কেউ মনে করেন এটি তরুণদের নষ্ট করে দিচ্ছে। প্রতিবছর কিছু জায়গায় ভালোবাসা দিবসের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ বা নিষেধাজ্ঞার আহ্বান জানানো হয়।
তবে বাস্তবতা হলো, ভালোবাসা দিবস এখন সমাজের একটি অংশ হয়ে উঠেছে। তরুণ প্রজন্ম এটি উদযাপন করলেও, অনেক মধ্যবয়সী বা প্রবীণও এই সংস্কৃতিকে ইতিবাচকভাবে গ্রহণ করেছেন।