রোজা রাখার সময় যদি কোমর ব্যথায় ভুগছেন, তবে কিছু সতর্কতা অবলম্বন এবং সহজ পদ্ধতি অনুসরণ করলে আপনার অবস্থার উন্নতি হতে পারে।
রোজার সময়ে কোমর ব্যথার রোগীদের জন্য কিছু গুরুত্বপূর্ণ নিয়ম এখানে উল্লেখ করা হল:
সাহরি ও ইফতারী সময় উপযুক্ত খাবার নির্বাচন:
প্রোটিন ও ক্যালসিয়ামসমৃদ্ধ খাবার, যেমন মাছ, মুরগি, ডিম, দুধ, দই, বাদাম, ছোলা এবং বিভিন্ন ধরণের শাকসবজি খাবেন। এগুলো হাড় ও পেশিকে শক্তিশালী করে ও ব্যথা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি খাবার যেমন: হলুদ, আদা, রসুন, অলিভ অয়েল, বাদাম ও সামুদ্রিক মাছ খেলে ব্যথা কমে। এছাড়া ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন ডি সমৃদ্ধ খাবার যেমন: দুধ, দই, পনির, মাশরুম, সূর্যমুখীর বীজ, বাদাম ও সবুজ শাকসবজি খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য ভালো। চেষ্টা করবেন সূর্যের আলোতে কিছুক্ষণ সময় কাটাতে।
পর্যাপ্ত পানি পান করুন
শরীরে পানির ঘাটতি হলে মাসল জয়েন্ট শুকিয়ে গিয়ে কোমর ব্যথা বেড়ে যেতে পারে। ইফতার থেকে সাহরির মধ্যে অন্তত ৮-১০ গ্লাস পানি পান করুন। চা-কফি বা সফট ড্রিংক কম পান করুন। কারণ এগুলো শরীর থেকে পানি বের করে দেয়।
ভাজাপোড়া ও অতিরিক্ত মশলাযুক্ত খাবার এড়িয়ে চলুন
এসব খাবার প্রদাহ বাড়িয়ে দিতে পারে। এছাড়া বেশি লবণ খেলে শরীরে পানি ধরে রাখতে পারে। যা কোমর ব্যথার সমস্যা বাড়াতে পারে।
কোমর ব্যথা হলে বেশি নরম বা খুব শক্ত বিছানায় না শুয়ে মাঝারি-কঠিন গদি ব্যবহার করুন। চিত হয়ে শোয়ার সময় হাঁটুর নিচে একটি বালিশ দিন।
পাশ ফিরে শোয়ার সময় দুই হাঁটুর মাঝে বালিশ রাখুন। অতিরিক্ত উঁচু বালিশ ব্যবহার করবেন না। এটি মেরুদণ্ডের স্বাভাবিক অবস্থান নষ্ট করতে পারে।
দীর্ঘক্ষণ বসে থাকা এড়িয়ে চলুন। প্রতি ৩০-৪৫ মিনিট পর একটু হাঁটুন। শরীর নড়াচড়া করুন। সোজা হয়ে বসুন। বেশি নীচু বা শক্ত চেয়ারে না বসে কুশনযুক্ত চেয়ার ব্যবহার করুন। ভারি বস্তু তুলতে হলে কোমর সোজা রেখে হাঁটু ভাঁজ করে তুলুন। কোমর বাঁকা করবেন না।
কোমর ব্যথা কমাতে ফিজিওথেরাপি খুবই কার্যকারী চিকিৎসা পদ্ধতি। রমজানে কোমর ব্যথায় আক্রান্ত হলে ব্যথানাশক ওষুধের ব্যবহার কমাতে ফিজিওথেরাপি চিকিৎসা নিতে পারেন। ইফতারের পর হালকা হাঁটাহাঁটি করতে পারেন। যদি ব্যথা বেশি হয় তাহলে গরম সেঁক (হট প্যাক) বা ঠান্ডা সেঁক (আইস প্যাক) দিন। ব্যথানাশক জেল বা পেইন রিলিফ স্প্রে ব্যবহার করুন। প্রয়োজনে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।