বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের মধ্যে দীর্ঘ ১৫ বছর পর পররাষ্ট্রসচিব পর্যায়ের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল, বৃহস্পতিবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় উভয় দেশের পররাষ্ট্রসচিবদের মধ্যে ষষ্ঠ বৈঠকটি হয়। বাংলাদেশের পক্ষ থেকে পররাষ্ট্রসচিব মো. জসীম উদ্দিন এবং পাকিস্তান থেকে পররাষ্ট্রসচিব আমনা বালুচ বৈঠকে নেতৃত্ব দেন। আমনা বালুচ গত বুধবার ঢাকায় আসেন বৈঠকে অংশ নিতে।
বৈঠকের পর, আমনা বালুচ অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস ও পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেনের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন। বৈঠকে উভয় দেশ যোগাযোগকে অগ্রাধিকার দেওয়া বিষয়টি আলোচনা করেছে, বিশেষ করে করাচি ও চট্টগ্রামের মধ্যে সরাসরি জাহাজ চলাচলের সূচনা এবং সরাসরি বিমান যোগাযোগ পুনরায় চালুর প্রয়োজনীয়তা নিয়ে আলোচনা হয়। ভিসা সহজীকরণ ও ভ্রমণ সুবিধা বাড়ানোর ক্ষেত্রে অগ্রগতির ওপর সন্তোষ প্রকাশ করা হয়।
পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়, বৈঠকটি বন্ধুত্বপূর্ণ পরিবেশে অনুষ্ঠিত হয়েছে এবং এটি দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক পুনরুজ্জীবিত করার একটি প্রতিশ্রুতি প্রতিফলিত করে। উভয় দেশ রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সাংস্কৃতিক, শিক্ষা ও কৌশলগত সহযোগিতার বিষয়ে আলোচনা করেছে। এছাড়া, সাম্প্রতিক সময়ে বিভিন্ন উচ্চ পর্যায়ের যোগাযোগের প্রশংসা করা হয়।
বৈঠকে কৃষি, শিক্ষা, বাণিজ্য ও সংযোগ খাতে সহযোগিতা বৃদ্ধির ওপর জোর দেওয়া হয়। পাকিস্তান বাংলাদেশের শিক্ষার্থীদের জন্য কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষাবৃত্তি প্রস্তাব দেয়, আর বাংলাদেশ মৎস্য ও সামুদ্রিক শিক্ষা বিষয়ে কারিগরি প্রশিক্ষণের প্রস্তাব দেয়। এছাড়া, দুদেশ সাংস্কৃতিক বিনিময়, খেলাধুলা, গণমাধ্যম ও সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠানে সহযোগিতার প্রসার নিয়ে আলোচনা করেছে এবং কয়েকটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরের বিষয়ে কথাবার্তা হয়েছে।
দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক পুনরুজ্জীবিত করার পর পাকিস্তান ভারতের জম্মু ও কাশ্মীরের পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করে এবং জাতিসংঘের প্রস্তাব অনুযায়ী দ্রুত সমাধানের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরে। মধ্যপ্রাচ্যের পরিস্থিতি নিয়েও উভয় দেশ ফিলিস্তিনে ইসরায়েলের চলমান আগ্রাসনের নিন্দা জানায়।
পরবর্তীতে, পররাষ্ট্রসচিব আলাদা বৈঠকে বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা ও পররাষ্ট্র উপদেষ্টার সঙ্গে আঞ্চলিক সংযোগ ও অর্থনৈতিক সম্পর্কের বিষয়ে আলোচনা করেন। ২০২৬ সালে ইসলামাবাদে পরবর্তী পররাষ্ট্রসচিব পর্যায়ের বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে বলে পাকিস্তান জানায়।
এসএস