জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন ফিরিয়ে দিতে আপিল বিভাগের নির্দেশের মাধ্যমে এক যুগেরও বেশি সময়ের আইনি লড়াইয়ের সফল অবসান হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন দলটির আইনজীবী অ্যাডভোকেট শিশির মনির।
রোববার (১ জুন) সকালে সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এই মন্তব্য করেন।
এই আইনজীবী বলেন, ‘জামায়াতে ইসলামী আজকে দেশের সর্বোচ্চ আদালতের রায়েরে মাধ্যমে তার নিবন্ধন ফিরে পেল। রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে মামলার মাধ্যমে জামায়াতের নিবন্ধন কেড়ে নেয়া হয়েছিল। আজকের এই রায়ের মাধ্যমে বহুদলীয় গণতান্ত্রিক এবং অংশগ্রহণমূলক সংসদ প্রাপ্তি নিশ্চিত হলো।’
আপিল বিভাগের রায়ের পর দেশে সঠিক নির্বাচনের মাধ্যমে প্রাণবন্ত সংসদ গঠিত হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
শিশির মনির বলেন, ‘জাতি, ধর্ম, বর্ণ ও শ্রেণী নির্বিশেষে সবাই তাদের ইচ্ছা অনুযায়ী ভোটাধিকার প্রেয়োগের মাধ্যমে জামায়াতের নেতৃবৃন্দকে বেছে নেবে, এটা প্রত্যাশা করি। সেইসঙ্গে আগামী সংসদে ইন্টারেস্টিং এবং কন্ট্রাক্টটিভ বিতর্ক হবে, যার মাধ্যমে গণতন্ত্র একটি স্থায়ী রূপ লাভ করবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আজকে আপিল বিভাগ হাইকোর্টের যে রায় ছিল, এ রায় বাতিল ঘোষণা করেছেন। নির্বাচন কমিশনকে জামায়াতের নিবন্ধন এবং অন্য যেসব ইস্যু সংস্থাটির সামনে রয়েছে বা আসবে সেগুলো দ্রুত নিষ্পত্তিরও নির্দেশ দিয়েছেন। এর মাধ্যমে জামায়াত তার নিবন্ধন ফিরে পেল এবং প্রতীকের ব্যাপারটিও নির্বাচন কমিশনের সামনে রেফার করা হলো অন্য ইস্যু হিসেবে।’
আদালতে মামলার সংক্ষিপ্ত আদেশ চেয়েছেন জানিয়ে শিশির মনির বলেন, ‘কিছু দিনের মধ্যেই সংক্ষিপ্ত আদেশ হাতে পাব। এরপর আদেশ কপি ইসিতে দেব, বাকিটা আইন অনুযায়ী অতিদ্রুত জামায়াতের নিবন্ধন এবং দাঁড়িপাল্লা প্রতীক বুঝিয়ে দেবে, এটা আমরা প্রত্যাশা করি।’
এক রিট আবেদন নিষ্পত্তি করে ২০১৩ সালের ১ আগস্ট জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন বাতিল ও অবৈধ ঘোষণা করে রায় দেন হাইকোর্ট। এরপর ২০১৮ সালের ৭ ডিসেম্বর জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন বাতিল করে প্রজ্ঞাপন জারি করে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। সেইসঙ্গে দাঁড়িপাল্লা প্রতীকও হারায় দলটি।
বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ২০২৪ সালের ১ আগস্ট জামায়াত-শিবিরকে নিষিদ্ধ করে প্রজ্ঞাপন জারি করেছিল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হয়। ৮ আগস্ট অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হয়। এরপর জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী ছাত্রশিবিরকে নিষিদ্ধ করে জারি করা আগের প্রজ্ঞাপন বাতিল করা হয়।
অবশেষে আজ জামায়াতের নিবন্ধন ফিরিয়ে দেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন আপিল বিভাগ। সেইসঙ্গে ‘দাঁড়িপাল্লা’ প্রতীকসহ অন্যান্য বিষয় নির্বাচন কমিশনের ওপর ছেড়ে দিয়েছেন সর্বোচ্চ আদালত।
এফপি/এসএন