২০২৫ সালের প্রথম ছয় মাসে টলিউডে বেশ কিছু উল্লেখযোগ্য ছবি মুক্তি পেয়েছে, তবে ব্যবসায়িক সফলতা পাওয়া ছবির সংখ্যা এখনও সীমিত। কোটির ক্লাবে পৌঁছানো ছবি বেশ কম, কিন্তু এর মধ্যেও রয়েছে কিছু আশার আলো।
জাতীয় মাল্টিপ্লেক্স পরিসংখ্যান অনুযায়ী, প্রথম ছয় মাসে যেসব ছবি কোটির ক্লাবে পৌঁছেছে তাদের মধ্যে প্রথম স্থানে রয়েছে ‘দ্য একেন: বেনারসে বিভীষিকা’। এই ছবি ৭ কোটি টাকার ব্যবসা করেছে, যা টলিউডের জন্য উল্লেখযোগ্য সাফল্য। এছাড়া, ‘আমার বস’ (৪ কোটি), ‘কিলবিল সোসাইটি’ (২.৫ কোটি), ‘পুরাতন’ (১.৫ কোটি) এবং ‘সত্যি বলে সত্যি কিছু নেই’ (১.৩ কোটি) ছবিগুলোও বক্স অফিসে সাফল্য অর্জন করেছে।
কিন্তু ব্যবসায়িক দিক থেকে, সবার নজরে পড়ে যে, কেবলমাত্র ৫টি ছবি কোটির ক্লাবে পৌঁছেছে, যদিও বেশ কয়েকটি ছবি কোটি ছুঁই ছুঁই করেছে। উদাহরণ হিসেবে ‘কিলবিল সোসাইটি’, ‘পুরাতন’, ‘সোনার কেল্লায় যকের ধন’ এবং ‘গৃহপ্রবেশ’ ছবিগুলোর ব্যবসা আংশিক সফল হলেও তা পুরোপুরি কোটির ক্লাবে পৌঁছাতে পারেনি।
এবার এই পরিস্থিতি নিয়ে টলিউডের বেশ কয়েকজন উল্লেখযোগ্য ব্যক্তিত্ব তাদের মতামত ব্যক্ত করেছেন। শিবপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়, যিনি ‘আমার বস’-এর পরিচালক, জানিয়েছেন যে, দর্শকরা এখনও হলে আসছেন যদি কনটেন্ট ভালো হয়। সৌরভ পালোধি, পরিচালক ‘অঙ্ক কী কঠিন’-এর, বলছেন যে, বাণিজ্য আর সৃষ্টিশীলতার ভারসাম্য রক্ষা করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
এছাড়া, শতদীপ সাহা, পরিবেশক, বলেছেন যে গত তিন বছরে ছবি মুক্তির সংখ্যা প্রায় একই রকম থাকলেও এবছরের প্রথম ছয় মাসে সাতটি ছবি ভালো ব্যবসা করেছে, যা একটি ইতিবাচক সঙ্কেত। জয়দীপ মুখোপাধ্যায়, ‘দ্য একেন’-এর পরিচালক, জানিয়েছেন যে, ‘একেনবাবু’ চরিত্রটি দর্শকের মধ্যে আলাদা ক্রেজ তৈরি করেছে এবং ফেলুদার অভাব পূরণ করেছে।
বাবলু দামানি, প্রযোজক ও পরিবেশক, জানিয়েছেন যে বক্স অফিস সাফল্যের চাবিকাঠি হল বিভিন্ন ধরনের গল্প তৈরি করা। তার মতে, কোন ছবি হিট হবে তা বলা কঠিন, কারণ দর্শক সব ধরণের গল্পই চায়।
বাংলা ছবির ভবিষ্যৎ নিয়ে বিশ্লেষণে বলা হচ্ছে—ছবির সংখ্যা বেড়েছে, ছোট বাজেটের ছবি মুখে মুখে ছড়িয়ে যাচ্ছে, এবং সিঙ্গল স্ক্রিনে বাংলা ছবির ব্যাপক জনপ্রিয়তা রয়েছে। তবে, তারকা নির্ভর বড় বাজেটের ছবিই এখনও সাফল্যের প্রধান রুট।
আগামী দিনে বাংলা সিনেমা প্রেক্ষাগৃহে বেশ কিছু আকর্ষণীয় ছবি আসছে, যেমন ‘ডিয়ার মা’, ‘মৃগয়া’, ‘ভূতপূর্ব’, ‘রক্তবীজ ২’ এবং ‘ধূমকেতু’। এগুলোর সাফল্য টলিউডের ভবিষ্যৎ অনেকাংশে নির্ভর করবে।
এফপি/ টিকে