জার্মান খাদ্যসংস্কৃতির অবিচ্ছেদ্য অংশ আলু বা ‘কার্টফেল ক্যোনিগ’ । শুধু রান্নার উপাদান নয়, বরং এটা জার্মানদের জীবনের এক আবেগের নাম। সালাদ থেকে শুরু করে কেক, ডাম্পলিং থেকে প্যানকেক—জার্মান রান্নায় আলুর উপস্থিতি সর্বত্র। বহু পরিবারে নানি-দাদির আলুর রেসিপি প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে চলে আসছে।
প্রুশিয়ার রাজা ‘ফ্রেডেরিক দ্য গ্রেট’কে ঘিরেই তৈরি হয়েছে আলুর সঙ্গে জার্মানদের সম্পর্কের সবচেয়ে জনপ্রিয় কল্পকাহিনি। গল্পে বলা হয়, রাজা নিজের বাগানে পাহারা বসিয়েছিলেন—জানতেন, মানুষ যা পাহারা দেয়, তা চুরি করতে আগ্রহী হয়। আর এইভাবে সাধারণ মানুষকে আলুর প্রতি আগ্রহী করে তোলাই ছিল তার পরিকল্পনা।
সেই কারণে আজও তাঁকে ডাকা হয় ‘কার্টফেল ক্যোনিগ’ নামে। এমনকি প্রুশিয়ার প্রাসাদের পাশেও রাখা হয় আলু আর কাগজের মুকুট, আর দোকানে দেখা যায় আলুভিত্তিক নানা উপহারসামগ্রী। তবে ইতিহাসবিদেরা এই গল্পকে মান্যতা দেন না। তাদের মতে, ফ্রেডেরিক দ্য গ্রেট নিজে কখনো আলু খাননি। আলু জনপ্রিয় হয় তাঁর মৃত্যুর বহু পরে, ১৮১৫ সালের নেপোলিয়নিক যুদ্ধের সময়। আর আলু জার্মানিতে আসে ১৬৫০-এর দশকে।
সত্য হোক বা গল্প, আজও জার্মানদের আলুর প্রতি ভালোবাসা অটুট। আলু দিয়ে তৈরি মিষ্টি কেক, ঐতিহ্যবাহী রান্না—সবখানেই গেঁথে আছে এক ইতিহাস, এক সংস্কৃতি। ফ্রেডেরিক দ্য গ্রেট হয়তো সত্যিকারের ‘আলুর রাজা’ ছিলেন না, কিন্তু কার্টফেল ক্যোনিগ নামটি আজও জার্মানদের জীবনে রাজত্ব করে চলেছে।
এসএন