চাঁদপুর শহরের প্রফেসর পাড়া মোল্লা বাড়ি জামে মসজিদের খতিব মাওলানা আ ন ম নূর রহমান মাদানী (৬০)–এর ওপর নৃশংস হামলার ঘটনায় গ্রেপ্তারকৃত আসামি বিল্লাল হোসেন আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। হামলায় গুরুতর আহত হলেও বর্তমানে মাওলানা মাদানী শঙ্কামুক্ত বলে জানিয়েছেন তার ছেলে আফনান তাকি।
গত শুক্রবার (১১ জুলাই) জুমার নামাজ শেষে মসজিদের ভেতরে দেশীয় অস্ত্র (চাপাতি) দিয়ে খতিবের ওপর হামলা চালায় বিল্লাল হোসেন (৫০)। মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.)-কে ‘অপমান করেছেন’- এমন অভিযোগ তুলে ক্ষিপ্ত হয়ে এই হামলা চালান তিনি।
হামলায় মাওলানা নূর রহমান মাথায় গুরুতর আঘাত পান। স্থানীয় মুসল্লিরা তাৎক্ষণিক হামলাকারীকে ধরে পুলিশে সোপর্দ করেন।
আসামি বিল্লাল হোসেন চাঁদপুর সদর উপজেলার বিষ্ণুপুর ইউনিয়নের মনোহরখাদি গ্রামের বাসিন্দা এবং শহরের বকুলতলায় বসবাস করেন। পেশায় তিনি একজন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী।
গতকাল শনিবার (১২ জুলাই) বিকেল ৩টায় চাঁদপুরের জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শাহাদাতুল হাসান আল মুরাদের আদালতে হাজির করা হয় বিল্লাল হোসেনকে। পরে তিনি হামলার দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দেন। রাত ৮টার দিকে তাকে জেল হাজতে পাঠানো হয়। মামলার তদন্ত করছেন চাঁদপুর সদর মডেল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) নাজমুল হোসেন।
চাঁদপুর কোর্ট পুলিশের পরিদর্শক শহীদুল্লাহ বলেন, আসামি আদালতে দোষ স্বীকার করেছেন। প্রয়োজনে তাকে আবার রিমান্ডে আনা হতে পারে।
হামলার পর প্রথমে মাওলানা মাদানীকে চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ঢাকার হলি কেয়ার হাসপাতালে নেওয়া হয়। বর্তমানে তিনি চিকিৎসাধীন অবস্থায় শঙ্কামুক্ত বলে জানিয়েছেন পরিবারের সদস্যরা।
তার বড় ছেলে আফনান তাকি বলেন, আমার বাবার ওপর যে বর্বর হামলা হয়েছে, তার সুষ্ঠু বিচার চাই। বর্তমানে তিনি আগের চেয়ে ভালো আছেন।
ঘটনার দিন রাতেই আফনান তাকি বাদী হয়ে চাঁদপুর সদর মডেল থানায় বিল্লাল হোসেনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। মামলায় হামলাকে পূর্বপরিকল্পিত উল্লেখ করা হয়। বাদী পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট আব্দুল কাদের খান বলেন, এটি নিছক একক হামলা নয়, বরং একটি পরিকল্পিত ঘটনা। অভিযুক্তের সঙ্গে আরও কেউ জড়িত থাকতে পারে বলে আমাদের সন্দেহ। আদালতে সে দোষ স্বীকার করলেও তদন্তের স্বার্থে ৭ দিনের রিমান্ড আবেদন করা হয়েছে।
হামলার ঘটনার প্রতিবাদে শনিবার চাঁদপুর শহরে বিভিন্ন ইসলামিক সংগঠন মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করে। সকাল থেকেই শহরে গুজব ছড়িয়ে পড়ে যে মাওলানা মাদানী মারা গেছেন। তবে পুলিশ ও পরিবার বিষয়টি নাকচ করে জানান, তিনি বেঁচে আছেন এবং সুস্থ হয়ে উঠছেন।
টিকে/