জেদ্দায় হঠাৎ গায়েব লেবার কাউন্সেলর!

সৌদি আরবের জেদ্দা কনস্যুলেট থেকে ৩০ জুন আনুষ্ঠানিক বিদায় নেন লেবার কাউন্সেলর কাজী এমদাদুল ইসলাম। কাগজে-কলমে তিনি ওএসডি হিসেবে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে জনপ্রশাসনে যোগ দিয়েছেন। তবে বাস্তবে তার বাংলাদেশে ফেরার কোনো সরকারি রেকর্ড নেই।

সরকারের বিভিন্ন দপ্তর জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়, প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয় কিংবা জেদ্দা কনস্যুলেট কেউই তার বর্তমান অবস্থান সম্পর্কে কিছু জানে না। এমনকি স্থল, নৌ বা বিমানবন্দরে তার প্রবেশের কোনো তথ্য নেই। অথচ সরকারেরই দায়িত্বশীল সূত্র জানিয়েছে, তিনি সশরীরে দেশে ফিরেননি এমন তথ্য থাকা সত্ত্বেও তার যোগদান গ্রহণ করা হয়েছে। 

জেদ্দা মিশনের ওয়েবসাইট থেকে তার ছবি ও নাম সরিয়ে ফেলা হয়েছে। দীর্ঘদিন ব্যবহৃত মোবাইল নম্বরগুলোতেও যোগাযোগ করা যাচ্ছে না। ফলে তার বর্তমান অবস্থান নিয়ে সরকারি মহলে উদ্বেগ ও রহস্য সৃষ্টি হয়েছে।

২০১৮ সালের একাদশ জাতীয় নির্বাচনে সিলেট জেলার রিটার্নিং কর্মকর্তা ছিলেন কাজী এমদাদ। সে সময় শাসক দলের স্বার্থে কাজ করার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। তার আগেই ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির বিতর্কিত নির্বাচনে ঢাকা জেলার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক হিসেবে কাজ করেন। এরও আগে শেখ হাসিনার সরকার গঠন করার পর টুঙ্গীপাড়া উপজেলায় নির্বাহী অফিসার হিসেবে দীর্ঘ সময় দায়িত্ব পালন করেন। যেখানে ছাত্রলীগ নেতা হিসেবে তার অতীত ভূমিকা বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।

বিশ্বস্ততার পুরস্কার হিসেবে সিলেটের জেলা প্রশাসক হিসেবে নিয়োগ পান, যখন ২০ ব্যাচের একজন আমলাকে মাত্র ৭ মাসের মাথায় সরিয়ে দেওয়া হয়। কারণ তিনি 'সরকারের পক্ষ নেবেন না' এমন ইঙ্গিত দিয়েছিলেন। সাতক্ষীরার তালা উপজেলার সন্তান কাজী এমদাদ এখন মধ্যবিত্ত থেকে বিত্তশালী হয়ে উঠেছেন, স্থানীয়ভাবে এমন অভিযোগ রয়েছে। তার সম্পদের উৎস নিয়েও প্রশ্ন উঠছে।

এদিকে চলতি বছরের ১৯শে ফেব্রুয়ারি ওএসডি হন ১৮’র রাতের ভোটের কারিগর খ্যাত জেলা প্রশাসকদের অন্যতম জেদ্দা মিশনের লেবার কাউন্সেলর কাজী এমদাদুল ইসলাম। তার সঙ্গে ওএসডি হওয়া ৩২ অফিসারের প্রায় সবাইকে পূর্বের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দিয়ে জনপ্রশাসনে ন্যস্ত করা হয় ওই মাসেই। কিন্তু প্রভাবশালী এমদাদ ওএসডি হওয়ার পরও রহস্যজনকভাবে ৩ মাস দশ দিন স্ব পদে বহাল থাকলেন। এ নিয়ে সরকারের ভেতরেই জল্পনা-কল্পনা চরমে।

টিকে/

Share this news on:

সর্বশেষ

img
বিয়েটা না করলেই ভালো হতো: মানসী সেনগুপ্ত Dec 13, 2025
img
ভারত সরকারের মদদ ছাড়া আ.লীগ এই ধরনের পরিকল্পনা করতে পারে না : নাহিদ ইসলাম Dec 13, 2025
img
আওয়ামী লীগের টার্গেট ৫০ প্রার্থী, প্রথম শিকার হাদি: রাশেদ খান Dec 13, 2025
img
টেকনাফ সীমান্তের ওপারে তীব্র গোলাগুলির শব্দ, আতঙ্ক এপারে Dec 13, 2025
img
ওসমান হাদির ‘ইন্টারনাল রেসপন্স’ আছে। তিনি এখনো আশঙ্কামুক্ত নন : ইনকিলাব মঞ্চ Dec 13, 2025
img
মালদ্বীপের পররাষ্ট্র সচিবের সাথে বাংলাদেশের হাইকমিশনারের সাক্ষাৎ Dec 13, 2025
img
ভারতে গিয়ে নিরাপত্তা শঙ্কায় মেসি, স্টেডিয়াম ছাড়লেন ৫ মিনিটে Dec 13, 2025
img
শেখ হাসিনার নির্দেশে হাদিকে হত্যার চেষ্টা করা হয়েছে : দুলু Dec 13, 2025
img
হাদি তুই তো এমপি-মন্ত্রীর চেয়েও অনেক বড় : মাহমুদা মিতু Dec 13, 2025
img
সাকিবকে দেশে ফিরতে না দেওয়ার কারণ জানালেন আসিফ মাহমুদ Dec 13, 2025
img
ওসমান হাদির পরিবারের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার সাক্ষাৎ, সর্বোত্তম চিকিৎসা নিশ্চিতের আশ্বাস Dec 13, 2025
img
এমপি প্রার্থীদের নিরাপত্তায় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে : ডিএমপি কমিশনার Dec 13, 2025
img
হাদির ঘটনায় অভিযুক্ত মাসুদের পরিবারের ২ সদস্য আটক Dec 13, 2025
img
মেসি ভক্ত অ্যাব্রামকে নিয়ে কলকাতায় শাহরুখ Dec 13, 2025
img
ইউটিউবে আসছে আকর্ষণীয় ফিচার! Dec 13, 2025
img
আমাদের অনৈক্যই খুনীদের শক্তি: ফারুকী Dec 13, 2025
img

এভারকেয়ারে মেডিকেল বোর্ড

হাদির অবস্থা অপরিবর্তিত, আপাতত পর্যবেক্ষণভিত্তিক চিকিৎসা চলছে Dec 13, 2025
img
হাদির ওপরে হামলা প্রকৃতপক্ষে বাংলাদেশের ওপরে হামলা : সালাহউদ্দিন Dec 13, 2025
img
ট্রাম্পের ফোনকলেও থামল না থাইল্যান্ড-কম্বোডিয়া সংঘাত Dec 13, 2025
img
আমরা প্রাইম টার্গেটকে খুঁজছি, ২৪ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেপ্তার : ডিএমপি Dec 13, 2025