বিশ্ব ক্রীড়াঙ্গনে এক খেলার অ্যাথলেটের অন্য খেলায় সাফল্য অর্জন করার ঘটনা বিরল নয়। তবে দুই ভিন্ন খেলার বিশ্বমঞ্চে দেশের প্রতিনিধিত্ব করা সত্যিই বিরল অর্জন। দক্ষিণ আফ্রিকার তরুণ অলরাউন্ডার রাইলি নর্টন এমনই এক ব্যতিক্রমী উদাহরণ।
মাত্র এক বছর আগেই দক্ষিণ আফ্রিকার হয়ে অনূর্ধ্ব-১৯ ক্রিকেট বিশ্বকাপে খেলেছেন নর্টন। এবার তিনি নেতৃত্ব দিচ্ছেন দেশটির অনূর্ধ্ব-২০ রাগবি দলে। ইতালিতে চলমান ২০২৫ অনূর্ধ্ব-২০ রাগবি বিশ্বচ্যাম্পিয়নশিপে দক্ষিণ আফ্রিকার অধিনায়ক হিসেবেই মাঠে আছেন ১৯ বছর বয়সী এই অ্যাথলেট।
রাইলি নর্টনের ক্রিকেট অভিষেক হয় ঘরের মাঠে অনুষ্ঠিত একটি ত্রিদেশীয় সিরিজে, যেখানে অংশ নিয়েছিল ভারত ও আফগানিস্তানের যুব দল। এরপর ২০২৪ যুব বিশ্বকাপে প্রোটিয়া দলে ছিলেন তিনি। সেমিফাইনালে বাদ পড়া দলটির অন্যতম কার্যকর বোলার ছিলেন এই অলরাউন্ডার—১১টি উইকেট নিয়েছিলেন মাত্র ১৮.৩৬ গড়ে। ব্যাট হাতেও তিন ইনিংসে গড় ছিল ৫০।
তার সতীর্থদের মধ্যে লুয়ান-দ্রে প্রিটোরিয়াস ও কেনা মাফাকা জাতীয় দলে পৌঁছে গেলেও, নর্টন বেছে নিয়েছেন ভিন্ন পথ।
ক্রিকেটকে বিদায় জানিয়ে পুরো মনোযোগ রাগবিতে দিয়েছেন নর্টন। শুধু খেলছেনই না, দক্ষিণ আফ্রিকার অনূর্ধ্ব-২০ রাগবি দলের অধিনায়ক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করছেন তিনি।
ইতালিতে আয়োজিত চলমান রাগবি বিশ্বচ্যাম্পিয়নশিপে অসাধারণ পারফরম্যান্স করেছে তার দল। অস্ট্রেলিয়াকে ৭৩-১৭, ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ডকে ৩২-২২ এবং স্কটল্যান্ডকে ৭৩-১৪ ব্যবধানে হারিয়ে সেমিফাইনালে জায়গা করে নেয় তারা। এরপর আর্জেন্টিনাকে ৪৮-২৪ ব্যবধানে হারিয়ে নিশ্চিত করেছে ফাইনাল।
আগামী ২০ জুলাই ফাইনালে দক্ষিণ আফ্রিকার প্রতিপক্ষ শক্তিশালী নিউজিল্যান্ড। এর আগে ২০১২ সালে এই শিরোপা জেতে প্রোটিয়ারা এবং ২০১৪ সালে রানার্সআপ হয়।
রাইলি নর্টনের মতো দুই ভিন্ন বিশ্বকাপে দেশের প্রতিনিধিত্ব করার নজির খুব কম। নামিবিয়ার রুডি ভ্যান ভুরেন ২০০৩ সালে ক্রিকেট ও রাগবি উভয় বিশ্বকাপে খেলেছিলেন, এর আগে খেলেন ১৯৯৯ রাগবি বিশ্বকাপেও। রাইলি নর্টনের সামনে এখন সেই অনন্য কীর্তির হাতছানি। অল্প বয়সেই দুই ভিন্ন খেলায় এত উচ্চ পর্যায়ে পৌঁছানো নর্টনের ক্রীড়া প্রতিভা এবং মানসিক দৃঢ়তারই প্রতিফলন। সময় বলবে, তিনি ইতিহাস গড়তে পারেন কিনা।
এমকে/টিকে