রাত পোহালেই রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর জাতীয় সমাবেশ। এ লক্ষ্যে সমাবেশস্থলের সব প্রস্তুতি শেষ করেছে দলটি। সোহরাওয়ার্দী উদ্যান এখন জনসমুদ্রের অপেক্ষায়। ঢাকা ও ঢাকার বাইরে থেকে দলে দলে আসতে শুরু করেছেন জামায়াতে ইসলামীর নেতাকর্মীরা। মাঠের চারপাশে টানানো হয়েছে ব্যানার-ফেস্টুন, মঞ্চের সামনে সাজানো সারি সারি চেয়ার, টয়লেট, পানির কল, জায়ান্ট স্ক্রিন—সবই প্রস্তুত।
দলটির আশা, শনিবারের জাতীয় সমাবেশে অন্তত ১০ লক্ষাধিক মানুষের সমাগম ঘটবে। আর এ সমাবেশকে কেন্দ্র করেই ‘ইতিহাস রচনার’ প্রত্যয় ঘোষণা করেছে জামায়াত।
শুক্রবার (১৮ জুলাই) বিকেল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে গিয়ে জামায়াতে ইসলামীর নেতাকর্মীদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে।
জাতীয় সমাবেশকে কেন্দ্র করে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে প্রস্তুতির শেষ মুহূর্তে ব্যস্ত সময় পার করছেন জামায়াতে ইসলামীর নেতা-কর্মীরা। শনিবার (২০ জুলাই) অনুষ্ঠেয় এই সমাবেশ ঘিরে রাজধানীতে বিরাজ করছে এক ধরনের রাজনৈতিক উত্তাপ। সমাবেশ সফল করতে মাঠজুড়ে গত এক মাস ধরে চলেছে নিরবচ্ছিন্ন প্রস্তুতি।
ভ্যাপসা গরম ও দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার মধ্যেও কয়েক হাজার স্বেচ্ছাসেবক কাজ করছেন বালু ফেলা, পানি নিষ্কাশন, চেয়ার বসানো, অস্থায়ী টয়লেট ও পানির কল স্থাপন, জায়ান্ট স্ক্রিনের সংযোগসহ নানা খাতে। জানা গেছে, উদ্যানজুড়ে বসানো হয়েছে পাঁচ শতাধিক অস্থায়ী টয়লেট এবং অজুর জন্য এক হাজারের বেশি পানির কল।
জামায়াতের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, সমাবেশে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে কয়েক লাখ মানুষ যোগ দেবেন। তাদের সুবিধার্থে প্রস্তুত রাখা হয়েছে নিরাপত্তা, শৃঙ্খলা ও সেবাব্যবস্থাও। এলাকা জুড়ে বসানো হয়েছে ৫০টির বেশি এলইডি স্ক্রিন এবং ৪০০টির বেশি মাইক। মঞ্চের পাশে অতিথি ও নেতাদের জন্য বসানো হয়েছে ৬০০ চেয়ার।
নিরাপত্তা নিশ্চিতে মাঠের ভেতরে ও বাইরে বসানো হয়েছে মনিটরিং সেল। প্রায় ৬ হাজার স্বেচ্ছাসেবক আটটি বিভাগের অধীনে দায়িত্ব পালন করবেন। যানবাহন চলাচল নির্বিঘ্ন রাখতে ট্রাফিক পুলিশের সঙ্গে একাধিকবার বৈঠক করেছে দলটি। ঢাকার বাইরের অংশগ্রহণকারীদের জন্য নির্ধারণ করা হয়েছে বাস ড্রপিং পয়েন্ট।
দলের সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, "আমরা চাচ্ছি শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠান শেষ করতে। রাজধানীবাসীর কোনো ভোগান্তি না হয় সে ব্যাপারে সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করছি।" তিনি যানজটের কারণে নাগরিকদের দুঃখভোগের জন্য আগাম দুঃখপ্রকাশ করেন এবং সহযোগিতাও কামনা করেন।
শুক্রবার বিকেলে সমাবেশস্থল পরিদর্শনে আসেন দলের কেন্দ্রীয় ও মহানগর নেতারা। এ সময় দলটির নায়েবে আমির অধ্যাপক মুজিবুর রহমান সাংবাদিকদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বলেন, "আপনারা সংবাদকর্মীরা আমাদের খবর দেশ-বিদেশে পৌঁছে দিচ্ছেন, এজন্য কৃতজ্ঞ। আশা করি, আপনারা আমাদের এই ঐতিহাসিক আয়োজনে সহযোগিতা করে যাবেন।"
সমাবেশে সভাপতিত্ব করবেন জামায়াতের আমির ডা. শফিকুর রহমান। তিনি তাঁর ভাষণে ‘ঐক্যের ডাক’ দেবেন এবং কল্যাণ রাষ্ট্র গঠনে জাতীয় ঐক্যের আহ্বান জানাবেন।
দীর্ঘ এক মাসের প্রস্তুতির পর এখন সবার অপেক্ষা শনিবারের ঐতিহাসিক সমাবেশ ঘিরে নতুন কোনো বার্তা কী আসে রাজনীতির মাঠে।
এমকে/টিকে