সন্ধ্যা যখন আলোর নৈঃশব্দ্যে মিলিয়ে যাচ্ছে, তখন কলকাতার এক জমজমাট প্রেক্ষাগৃহে আলো ছড়াচ্ছে তারার মেলা। ‘বছরের বেস্ট’ অনুষ্ঠানে এক ছাদের নিচে মিলল রাজনীতি, বিনোদন, সাহিত্য ও সমাজের বিভিন্ন ক্ষেত্রের কৃতীরা। ঐতিহ্য আর আধুনিকতার দারুণ মেলবন্ধন ঘটল সেই সন্ধ্যায়।
শুরু থেকেই জমে উঠেছিল আসর। কোয়েল মল্লিকের কালো বেনারসি দেখে কেউ ডেকে উঠলেন, “মিতিন মাসি এসে গেছেন!” পরিচিত চরিত্রের ডাক শুনে হাসিমুখে এগিয়ে গেলেন কোয়েল। তখনই আসরে প্রবেশ করলেন শোভন চট্টোপাধ্যায় ও বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়। কালো পোশাকে যুগলবন্দিতে তাঁরা যেন ধরা দিলেন স্থির বিশ্বাসে। বৈশাখীর কথায়, “তোমাদের ডাকে সাড়া না দিয়ে পারি?”
আটপৌরে সৌন্দর্যে ধরা দিলেন ‘ফেলুদা’ টোটা রায়চৌধুরী। যদিও এদিন ধুতি-পাঞ্জাবি ছেড়ে বেছে নিয়েছিলেন ফর্মাল পোশাক। হাসিমুখে বললেন, “অনুষ্ঠান শুরু হয়নি তো? তাই দৌড়ে এলাম।” ইন্দ্রদীপ দাশগুপ্তের আগমনের আগেই জানা গেল, ফোন বন্ধ,বিরক্তি সহ্য করেন না।
সোনালি শাড়িতে মঞ্চ আলোকিত করলেন তৃণা সাহা। অতিথিদের আপ্যায়নকারীদের বললেন, “আজ আপনারাই পথ দেখাবেন, আমি চলব।”
নিচে তখন অপেক্ষা করছেন অনিরুদ্ধ রায়চৌধুরী। “জয়া এসেছে?” এই প্রশ্ন ছিল তাঁর মুখে। জয়া আহসান তখনও আসেননি। চুল শুকোতে দেরি,এই ছিল তাঁর অজুহাত। তবে পদ্মাপারের তারকা বিশেষ দেরি না করেই এলেন লাল ফুলকি তোলা হালকা হলুদ ঢাকাই শাড়িতে। একটু বিব্রত মুখে অনিরুদ্ধর দিকে এগিয়ে গিয়ে বললেন, “সেই দেরি হয়েই গেল!”
অনুষ্ঠান চলছিল পাওলি দামের নিজস্ব ছন্দে। কেউ মঞ্চে, কেউ নীচে। কিন্তু তারকার আলোয় চারদিক দীপ্ত।
পার্টি পর্ব শুরু হতেই দেখা গেল রূপা গঙ্গোপাধ্যায়কে, পাশে বিজেপি নেতা শমীক ভট্টাচার্য। একটু দূরে বন্ধু দেবাশিস দাস। পার্টির আকর্ষণ তখন জয়া আহসান, যার দিক থেকে চোখ সরাতে পারেননি পাওলি। রসিকতা করে বলেই ফেললেন, “আজকের সব আলো শুষে নিল জয়া।”
ইন্দ্রদীপ দাশগুপ্ত নিরামিষ খাওয়ার আয়োজন করতেই পাশে বসলেন আবীর চট্টোপাধ্যায়, পাঁঠার মাংস নিয়ে।
একটু পরেই দেরি করে হাজির ছোটপর্দার সুপুরুষ রণজয় বিষ্ণু। হিন্দি বর্ণমালার ব্লকপ্রিন্ট দেওয়া ঢোলা পাজামা পরে নীল-সাদা শার্টে ঢুকে পড়লেন লবিতে। মুহূর্তেই ঘিরে ধরল কিছু তরুণ-তরুণী। সেলফি চলছিল, তখনই এলেন বিবৃতি চট্টোপাধ্যায়, “রণ, আমার সঙ্গে সেলফি তুলবি না?” অভিনেতা সাড়া দিলেন হাসিমুখে। পাশে ছিলেন দর্শনা বণিক, যার হাসিতে ছিল বিদায়ের ইঙ্গিত ,তিনি বেরিয়ে যাচ্ছিলেন তখনই।
সবশেষে লবিতে মুখোমুখি ‘ফেলুদা’ টোটা ও অভিনেত্রী-প্রযোজক তিলোত্তমা সোম। আবেগে টোটার হাত ধরে বললেন, “আপনার অভিনয় কী যে ভাল লাগে!” সৌজন্যে ভরা এই আলাপচারিতার মধ্য দিয়েই শেষ হলো তারাময় এক সন্ধ্যা।
এমকে/এসএন