বিগত ফ্যাসিবাদী শাসনামলে মানুষ বেঁচে থেকেও মরে যাওয়ার অবস্থায় ছিল : জোনায়েদ সাকি

গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি বলেছেন, বিগত ফ্যাসিবাদী শাসনামলে মানুষ বেঁচে থেকেও মরে যাওয়ার অবস্থা ছিল। আবু সাঈদ তা মেনে নেননি। জীবন দিয়ে প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন। তিনি আরও বলেন, জনগণের ঐক্য প্রমাণ করেছে, ঐক্য থাকলে ফ্যাসিবাদ যেমন পালিয়েছে, তেমনি ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থাকেও কবর দিতে পারবো।

শুক্রবার (১ আগস্ট) বিকেলে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে গণসংহতি আন্দোলনের জুলাই গণসমাবেশে সভাপতির বক্তব্যে এসব কথা বলেন জোনায়েদ সাকি। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে শহীদ জুলফিকার আহমেদ শাকিলের মা আয়েশা বেগম এ সমাবেশের উদ্বোধন করেন।

জোনায়েদ সাকি বলেন, ৭১ সালের শহীদের ঋণ এখনো পূরণ হয় নাই। আমরা শপথ নিচ্ছি ৭১ থেকে ২৪ এর শহীদের আমরা ধারণ করবো। এই শহীদদের ঋণ শোধে আমাদের ঐক্য দরকার নয়তো, আমরা আবার ব্যর্থ হবো। জনগণের ঐক্য প্রমাণ করেছে, ঐক্য থাকলে ফ্যাসিবাদ যেমন পালিয়েছে, তেমনি ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থাকেও কবর দিতে পারবো।

তিনি বলেন, অভ্যুত্থান নতুন মানুষ সৃষ্টি করে, কিন্তু আমরা দেখছি পুরোনো লুটপাট-ভিত্তিক রাষ্ট্রব্যবস্থা বজায় রাখার চেষ্টা চলছে। শহীদ পরিবারগুলোর আহাজারি এখনো থামেনি, অথচ সরকার কোনো জবাব দেয়নি। এত বড় রাষ্ট্রযন্ত্র আজও শহীদ ও আহতদের একটি পূর্ণাঙ্গ তালিকা দিতে পারেনি, তাদের মর্যাদা নিশ্চিত করতে পারেনি।

জোনায়েদ সাকি বলেন, ফ্যাসিবাসী রাষ্ট্রের ভিত্তি ছিল মানুষের টাকা লুট করা, ভাগ বাটোয়ারা করা, দুর্নীতি করে, প্রতিষ্ঠানগুলোকে ধ্বংস করে একক ক্ষমতা প্রতিষ্ঠা করা। লুটপাট দুর্নীতু বন্ধ করতে না পারল নতুন বন্দোবস্ত হবে না। আমাদের মধ্যে নারী, ধর্ম, জাতি ইস্যুতে বিভাজন করা হচ্ছে। হিন্দু, মুসলিম, বৌদ্ধ সবাই পরিচয়ের বাইরে আমরা সবাই দেশের নাগরিক।

সবার অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে পারলেই ৭১ থেকে ২৪ এর শহীদের প্রতি দায় পূরণ হবে। গণসংহতি আন্দোলন রাজপথ থেকে উঠে এসে মানুষের হৃদয়ে জায়গা করে নিয়েছে এবং তারা জনগণের প্রতিনিধি হিসেবে সংসদে গিয়ে রাষ্ট্র পরিচালনা করবে।

গণসংহতি আন্দোলনের কেন্দ্রীয় নির্বাহী সমন্বয়কারী আবুল হাসান রুবেল বলেন, ২০১৭ সালেই আমরা বলেছি নতুন রাজনৈতিক চুক্তি ছাড়া এই রাষ্ট্রে কোনো পরিবর্তন আসবে না। আমরা বাংলাদেশপন্থি রাজনীতিতে বিশ্বাসী। আমাদের রাজনীতি জনগণের বৃহত্তর স্বার্থের বাইরে কিছু নয়।

তিনি আরও বলেন, আমরা এমন বাংলাদেশ চাই, যেখানে অধিকার আদায়ে জীবন দিতে হবে না, সমস্যা সমাধান হবে সংলাপের মাধ্যমে। শহীদদের রক্তের সঙ্গে বেঈমানি না করতে চাইলে এই রাষ্ট্রব্যবস্থা বদলাতেই হবে। এটিই হবে ‘জুলাই সনদ’, জনগণের ম্যান্ডেটে গঠিত নতুন চুক্তি।

এছাড়াও সমাবেশে আগামী জাতীয় নির্বাচনকে ‘সংবিধান সংস্কার পরিষদের নির্বাচন’ হিসেবে ঘোষণার দাবি জানানো হয়।

এমআর/টিকে    

Share this news on:

সর্বশেষ

img
এশিয়ার মার্কেটে আমেরিকার আধিপত্য বিস্তার নিয়ে রনির সতর্কবার্তা Oct 20, 2025
img
সেমির আশা টিকাতে লঙ্কানদের বিপক্ষে কাল জিততে হবে টাইগ্রেসদের Oct 20, 2025
img

জুলাই সনদ বাস্তবায়ন

বিশেষ আদেশের ভিত্তি নিয়ে ভাবছে ঐকমত্য কমিশন Oct 20, 2025
img
এনসিপিকে কেন শাপলা দেওয়া যাবে না, নীলা ইসরাফিলের ব্যাখ্যা Oct 20, 2025
img
বিমানবন্দরের ঘটনায় পোশাক রপ্তানিকারকদের ১ বিলিয়ন ডলার ক্ষতির আশঙ্কা Oct 20, 2025
img
এবার জামায়াতের বিরুদ্ধে নাহিদের তোপ : মাসুদ কামাল Oct 20, 2025
img
চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হবে : বিএনপি Oct 20, 2025
img
জবি ছাত্রদল নেতা জুবায়েদের খুনিদের গ্রেপ্তার দাবিতে বংশাল থানা ঘেরাও Oct 20, 2025
img
চট্টগ্রামে মধ্যরাতে বহুতল ভবনে আগুন Oct 20, 2025
img
জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি না হলে ওই সনদ কাগজেই সীমাবদ্ধ থাকবে : জুমা Oct 20, 2025
img
নিজের এক্স প্রোফাইল থেকে পিএসএল টিমের নাম মুছে ফেললেন রশিদ Oct 20, 2025
img
বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে ঐকমত্য কমিশনের বৈঠক Oct 20, 2025
img
জুলাই সনদে যারা সই করেছে তারা এই দেশকে ধারণ করে না : হান্নান মাসউদ Oct 20, 2025
img
রিশাদকে নিয়ে নান্নুর মন্তব্যে Oct 19, 2025
img
তিনি যা বানাচ্ছেন তা কেউ কখনো করেননি : রণবীর সিং Oct 19, 2025
img
প্রয়োজন শেষে রূপ বদলালেন ড. ইউনূস : জিল্লুর রহমান Oct 19, 2025
img
বঙ্গোপসাগরে লঘুচাপ সৃষ্টির আভাস Oct 19, 2025
img
চাকসুতে নির্বাচিতদের শপথ গ্রহণের সম্ভাব্য সময় বৃহস্পতিবার! Oct 19, 2025
img
৪৯তম বিশেষ বিসিএসের ফল প্রকাশ, উত্তীর্ণ ১২১৯ জন Oct 19, 2025
img
জয়া আহসান এখন শুধু একটি নাম নয়, ব্র্যান্ড! Oct 19, 2025