ট্রাম্প-পুতিনের বৈঠক বদলে যেতে পারে বিশ্ব রাজনীতির গতিপথ

আগামী ১৫ আগস্ট আলাস্কায় বৈঠকে মুখোমুখি হচ্ছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। বিশ্লেষকরা বলছেন, বিশ্ব রাজনীতির গতিপথ পাল্টে দিতে পারে এই সাক্ষাত। ইউক্রেন যুদ্ধের ভাগ্য নির্ধারণ হতে পারে শীর্ষ দুই নেতার আলোচনার মধ্য দিয়ে।

আলাস্কায় মার্কিন ও রুশ প্রেসিডেন্টের মধ্যকার বহুল প্রতীক্ষিত বৈঠকের বিষয়টি নিশ্চিত করেছে দুইপক্ষ। দুই শীর্ষ নেতার বৈঠক ভূরাজনীতির মোড় ঘুড়িয়ে দিতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

ট্রাম্পের রাজনৈতিক ক্যারিয়ার ও কূটনৈতিক পরিকল্পনায় এই বৈঠকের গুরুত্ব অপরিসীম। নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী তিনি দ্রুত যুদ্ধ বন্ধ করতে চেয়েছেন। শুরুতে রাশিয়ার প্রতি কিছুটা নমনীয় হলেও যুদ্ধ বন্ধের

আলোচনায় অগ্রগতি না হওয়ায় কঠোর শুল্ক ও নিষেধাজ্ঞার মাধ্যমে চাপ সৃষ্টি করেছেন মস্কোর ওপর। এমন এক পরিস্থিতিতে বৈঠক হওয়ায় তাই এর কূটনৈতিক ও রাজনৈতিক গুরুত্ব বাড়িয়ে দিয়েছে।

পুতিনের সামরিক ও রাজনৈতিক লক্ষ্য যুদ্ধের মাধ্যমে পূর্ব ইউক্রেনের নিয়ন্ত্রণ নিশ্চিত করা এবং ন্যাটোর বিস্তার রোধ। ১৯৯১ সালের সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনকে তিনি শতাব্দীর সর্ববৃহৎ ভূরাজনৈতিক বিপর্যয় হিসেবে উল্লেখ করেছেন বহুবার। তার ভাবনায় বিশ্ব শক্তির ভারসাম্য নির্ধারণে রাশিয়ার পুরানো প্রভাব পুনরুদ্ধার অপরিহার্য। তাই ট্রাম্পের সঙ্গে আলোচনায় তিনি অধিকৃত ইউক্রেনের অঞ্চল রাশিয়ার অংশ হিসেবে দাবি করবেন এবং ন্যাটোর প্রসার বন্ধের জন্য চাপ দেবেন।

বৈঠকে ইউক্রেন ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন অনুপস্থিত থাকায় যুদ্ধ বন্ধে বাধা আসবে বলে বিশ্লেষকরা মনে করছেন। প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি ইউক্রেনের ভূখণ্ড ছাড়ার প্রস্তাবে রাজি নন। অধিকৃত ভূখণ্ডের দখল নিয়ে মস্কো-কিয়েভ পাল্টপাল্টি শর্ত সমঝোতার পথ কঠিন করে তুলেছে।

ট্রাম্প-পুতিন বৈঠক কেন যুক্তরাষ্ট্রের অঙ্গরাজ্য আলাস্কায় হবে তা নিয়েও জনমনে প্রশ্ন আছে। এই ভেন্যু নির্ধারণের পেছনে আছে কূটনৈতিক ও কৌশলগত বেশকিছু দিক। আলাস্কা একসময় রাশিয়ার অধীনে ছিল। ১৮৬৭ সালে অঞ্চলটিকে যুক্তরাষ্ট্রের কাছে বিক্রি করে দেয়া হয়। এখানে বৈঠক আয়োজন এক ধরনের প্রতীকী কূটনৈতিক মঞ্চ তৈরি করে যা উভয় পক্ষের ইতিহাসের সঙ্গে সম্পর্কিত।

যুক্তরাষ্ট্রের অঙ্গরাজ্য হলেও আলাস্কা অপেক্ষাকৃত কম ঘনবসতির এলাকা। ফলে এখানে শীর্ষ নেতাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা তুলনামূলক সহজ। বিশ্লেষকরা মনে করছেন, ট্রাম্প দেখাতে চান কোনো দেশের রাজধানীতে এই বৈঠক হচ্ছে না। অঞ্চলটি এক ধরনের মিডপয়েন্ট ইমেজ দেয়। যা এর নিরপেক্ষতা বজায় রাখে।

এমকে/টিকে

Share this news on:

সর্বশেষ

img
জনগণকে আবার জাগিয়ে তুলতে হবে : ফখরুল Aug 12, 2025
img
ফয়সালকে নির্যাতনের অভিযোগ, মুখ খুলল আমিরের পরিবার Aug 12, 2025
img
ইরানে ১২ দিনের যুদ্ধে ২১ হাজার সন্দেহভাজন গ্রেপ্তার Aug 12, 2025
img
জন্মদিনে সৎ মায়ের কাছ থেকে যে বার্তা পেলেন সারা Aug 12, 2025
img
সত্য কথা বলার কারণে সারজিসের বিরুদ্ধে বিএনপি মামলা করেছে : মুফতি ফয়জুল করীম Aug 12, 2025
img
জাতীয় দলের প্রস্তুতি ক্যাম্প শুরু হচ্ছে বুধবার Aug 12, 2025
img
পাকিস্তানে ব্রাহমোস মিসাইল নিক্ষেপের ইঙ্গিত মিঠুনের Aug 12, 2025
img
জুলাই সনদে একবিন্দু পর্যন্ত ছাড় দেব না : নাহিদ Aug 12, 2025
আমি একটি পরিবর্তনশীল বাংলাদেশে সীমাহীন সম্ভাবনা দেখতে পাচ্ছি: প্রধান উপদেষ্টা Aug 12, 2025
আ'ন্দোলন দমাতে চাঁদা দাবি করা এনসিপির সেই নেতা বহিষ্কার Aug 12, 2025
বাংলাদেশসহ পাঁচ দেশ ফেরত দেয়নি পুরোনো ঋণ, বিপাকে ইসলামাবাদ Aug 12, 2025
শুভশ্রী-রুক্মিণীর কাছে ক্ষমা চেয়ে বিতর্কে দেব! Aug 12, 2025
প্রিয়াঙ্কার নতুন পোস্টে চমক ফ্যানদের মাঝে Aug 12, 2025
কোহলিকে টপকে টি-টোয়েন্টি রেকর্ডে ওয়ার্নারের উত্থান Aug 12, 2025
img
এনসিপির ঘরে সুবাতাস বইছে : মোস্তফা ফিরোজ Aug 12, 2025
ভয়াবহ দুটি জিনিস থেকে বাঁচার দোয়া Aug 12, 2025
img
সোশ্যাল মিডিয়ায় শীর্ষে অপূর্ব, পেছনে শাকিব-নিশো Aug 12, 2025
img
আমরা এখন নির্বাচিত প্রতিনিধিদের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরে প্রস্তুত: প্রধান উপদেষ্টা Aug 12, 2025
img
সিন্ধু চুক্তিতে ভারতের বিপক্ষে রায় আন্তর্জাতিক আদালতের, স্বাগত জানাল পাকিস্তান Aug 12, 2025
img
আমেরিকার সমর্থনেই পাকিস্তানের সেনাবাহিনীর এতো স্পর্ধা বেড়েছে Aug 12, 2025