ঢাকা-রাজশাহী-ঢাকা রুটে ২৫ এপ্রিল উদ্বোধন করা হয়েছে বিরতিহীন বনলতা এক্সপ্রেস ট্রেনটি। তবে আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রী নিয়ে ট্রেনটি চলাচল শুরু করে ২৭ এপ্রিল। নতুন এই ট্রেনটিতে রয়েছে খাবার সুবিধা যা যাত্রীদের ভাড়ার সঙ্গে বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। এ নিয়ে ট্রেনটি চালুর পর থেকেই সমালোচনা শুরু হয়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে।
রেলওয়ে সূত্রে জানা গেছে, বনলতায় রয়েছে ইন্দোনেশিয়া থেকে আমদানি করা ১২টি নতুন বগি। এর মধ্যে শোভন চেয়ারের সাতটি বগিতে আসন ৬৪৪টি। দুটি এসি বগিতে আসন সংখ্যা ১৬০টি। এ ছাড়া দুটি খাবার গাড়িতে ৫৪টি করে ১০৮টি আসনসহ ট্রেনটিতে মোট ৯২৮টি আসন রয়েছে। উন্নতমানের খাবার এবং ওয়াইফাই সুবিধা থাকবে প্রতিটি বগিতে। শুক্রবার ছাড়া প্রতিদিন চলবে এই ট্রেন।
জানা গেছে, ১৫০ টাকা খাবার মূল্য যোগ করে শোভন চেয়ার ৫২৫ টাকা এবং এসি (স্নিগ্ধা) চেয়ারের টিকিটের মূল্য ধরা হয়েছে ৮৭৫ টাকা করে।
বনলতা এক্সপ্রেসে বাধ্যতামূলক খাবার নিয়ে ফেসবুকের কয়েকটি গ্রুপ ও পেজে নিজেদের প্রতিক্রিয়া প্রকাশ করেছেন ফেসবুক ব্যবহারকারী ও ট্রেনের যাত্রীরা। বাংলাদেশ টাইমস-এর পাঠকদের জন্য তার কিছু প্রতিক্রিয়া তুলে ধরা হলো।
মোরশেদ খান রানা নামে একজন লিখেছেন, ‘ঢাকা হইতে রাজশাহী বনলতা ট্রেন সার্ভিসটা চালু করা হয় গত ২৫ এপ্রিল থেকে। কত ভাবনানাই ছিল অনেকের মনে, যদি এই রকম একটা বিরতিহীন ট্রেন সার্ভিস চালু হয় তা খুব ভালো হবে, সত্যিই তো অনেক ভালো হয়েছে। তবে আমার কথা হলো যদি এই সার্ভিসটা আপামর জনসাধারণের জন্য চালু করা হয়, কেন খাবারের নাম করে বাড়তি ভাড়া চাপায়ে দেয়া হচ্ছে? হ্যাঁ অবশ্যই খাবারের প্রয়োজন তবে একান্তই তার নিজের ব্যাপার যে তাদের খাবার খেতে হবে কিনা।'
তিরি আরও লিখেছেন, 'এদের মধ্যে অনেকেই থাকের যাদের পরিবার ওই ১৫০ টাকায় চলে। তাদের জন্য আপনি এটাকে কি বলবেন? আমি বলব প্রহসন। আমি বাংলাদেশ সরকারের প্রতি অনুরোধ করছি ওনারা যেন বাংলাদেশ রেলওয়ের এই সিদ্ধান্ত মেনে না নিয়ে এর সঠিক উপায় বের করবেন।'
মো. দেলোয়ার নামের একজন লিখেছেন, 'কেউ রোল পেয়েছে, আমি রোলের পরিবর্তে পেলাম আরেক ফালি কেক। যথেষ্ট খাবার পাব ভেবে না খেয়ে বের হই। পরে প্রচণ্ড ক্ষুধা পেয়েছিল। ক্যাটারিং বাদে সবকিছু বেশ ভালো ছিল। ছিল না হকারদের উৎপাত।'
শামসুজ্জোহা সাদিক নামে আরেক ব্যক্তি লিখেছেন, ‘আমাদের ভ্যাটের টাকায় রেল চললেও, আমাদের মতামতের কোনো দাম নাই। কোনো সাধারণ যাত্রী এটা চাইলো না, কিন্তু তারা আমাদের খাইয়ে ছাড়বে। সেবা করার ইচ্ছা থাকলে খাবার ক্যান্টিনে রাখবেন, ইচ্ছা হলে মানুষ খেয়ে নিবে নাহলে নাই।'
সানবি শাহরিয়ার শাহিন নামে এক ফেসবুক ব্যবহারকারী লিখেছেন, '৬০ টাকার খাবার ১৫০ টাকা দারুণ ব্যাপার।'
কাজী শামীম হাসান নামে একজন লিখেছেন, 'অসুস্থ রোগী যে, ক্যাটারিংয়ের খাবারগুলো খেতে পারবে না, অথবা যার ওই খাবার খেতে অসুবিধা আছে অথবা আপত্তি আছে তার কাছ থেকেও খাবারের টাকা আদায় করা হবে। যদি খাবারের মান ভালো না হয়? সরকারি জিনিসের মান কেমন হয় সেটা আমি টেলিটক অপারেটরের সার্ভিস ব্যবহার করে বুঝি, ওয়াসার পানি খেয়ে বুঝি, বাংলাদেশ বিমানের খাবার খেয়ে বুঝি। ক্যাটারিংয়ের টাকা টিকেটের টাকার সঙ্গে যুক্ত করার সিদ্ধান্ত দু:খজনক।'
আনিসুর রহমান নামে একজন লিখেছেন, 'সোনার বাংলা ও বনলতা এক্সপ্রেস এই দুটি ট্রেনে খাবারসহ টিকেট মূল্য আর খাবার ছাড়া টিকেট মূল্য এই দুই ধরণের সুবিধা রাখা উচিত। কর্তৃপক্ষ আশাকরি বিষয়টি বিবেচনা করবেন।'
আরও পড়ুন...
প্রথম দিনেই বনলতার টিকিট কাটতে উপচেপড়া ভিড়
হুইসেল বাজিয়ে 'বনলতা এক্সপ্রেসের' উদ্বোধন প্রধানমন্ত্রীর
টাইমস/এইচইউ/এসআই