বিখ্যাত রক ব্যান্ড কিসের গিটারিস্ট ও ভোকাল এস ফ্রেহলি মারা গেছেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭৪ বছর। বৃহস্পতিবার পরিবারের পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে তার মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করা হয়।
ভক্তদের কাছে ‘স্পেস এস’ বা ‘স্পেসম্যান’ নামে পরিচিত এই সংগীত তারকা যুক্তরাষ্ট্রের নিউ জার্সির মোরিস্টাউনে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।
সম্প্রতি তিনি নিজের বাড়িতে পড়ে গিয়ে আহত হয়েছিলেন। তবে মৃত্যুর সঠিক কারণ জানানো হয়নি।
পরিবারের বিবৃতিতে বলা হয়, ‘আমরা সম্পূর্ণভাবে বিধ্বস্ত ও মর্মাহত। জীবনের শেষ মুহূর্তে আমরা তাকে ভালোবাসা, যত্ন, শান্তি ও প্রার্থনায় ঘিরে রাখতে পেরেছি, এটাই আমাদের সান্ত্বনা। আমরা তার হাসি, শক্তি ও মানুষের প্রতি মমতার স্মৃতি লালন করব। তার চলে যাওয়া এক অপূরণীয় ক্ষতি। তার অসাধারণ জীবনের অর্জনগুলোই তাকে চিরকাল বাঁচিয়ে রাখবে।’
গত ২৫ সেপ্টেম্বর ইনস্টাগ্রামে দেওয়া এক পোস্টে জানা যায়, ফ্রেহলি স্টুডিওতে পড়ে গিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। চিকিৎসকের পরামর্শে তিনি কিছু ট্যুর বাতিল করেন। এরপর শারীরিক অবস্থার অবনতির কারণে ২০২৫ সালের সব কনসার্টও বাতিল করতে বাধ্য হন।
নিউইয়র্কের ব্রঙ্কসে জন্ম নেওয়া এস ফ্রেহলি ইতিহাসের অন্যতম শ্রেষ্ঠ মেটাল গিটারিস্ট হিসেবে বিবেচিত। ১৯৭৩ সালে পল স্ট্যানলি, জিন সিমন্স ও পিটার ক্রিসকে সঙ্গে নিয়ে তিনি গঠন করেন ব্যান্ড কিস।
সাহসী কালো-সাদা মেকআপ, ঝলমলে পোশাক ও বিদ্যুতের মতো তেজি গিটার বাজনা দিয়ে কিস হয়ে ওঠে বিশ্বজোড়া আলোচিত ব্যান্ড। তাঁদের জনপ্রিয় গানগুলোর মধ্যে রয়েছে ‘আই ওয়াজ মেড ফর লাভিং ইউ’, ‘ব্ল্যাক ডায়মন্ড’, ‘রক অ্যান্ড রোল অল নাইট’ ও ‘লিক ইট আপ’।
১৯৮২ সালে ফ্রেহলি ব্যান্ড ছেড়ে দিয়ে নিজের দল ‘ফ্রেহলিস কমেট’ গঠন করেন। পরে একক ক্যারিয়ারে তিনি বেশ কিছু হিট অ্যালবাম উপহার দেন।
পরের বছরগুলোতে তিনি একক ক্যারিয়ারেও সফল হন। ১৯৭৮ সালে প্রকাশিত তার গান ‘নিউ ইয়র্ক গ্রুভ’ এবং ১৯৮৭ সালের ‘রক সোলজারস’ ব্যাপক জনপ্রিয়তা পায়।
‘স্পেসম্যান’ পরে আবার কিসে ফেরেন। ১৯৯৬ সালে ব্যান্ডের রিইউনিয়ন ট্যুরে অংশ নেন, যা ব্যাপক সাড়া ফেলে। ২০০২ সালে দ্বিতীয়বার বিদায় জানান, সল্ট লেক সিটির শীতকালীন অলিম্পিকের সমাপনী অনুষ্ঠানে পরিবেশনার মধ্য দিয়ে তার কিস অধ্যায় শেষ হয়।
২০১৪ সালে কিসের চার মূল সদস্যকে যুক্তরাষ্ট্রের ‘রক অ্যান্ড রোল হল অব ফেম’-এ অন্তর্ভুক্ত করা হয়।
সংগীত থেকে ফ্রেহলি কখনো দূরে যাননি। গত বছরই তিনি প্রকাশ করেন নিজের একক অ্যালবাম ‘টেন থাউজ্যান্ড ভোল্টস’, যা বিলবোর্ডের হার্ড মিউজিক ও রক অ্যালবাম চার্টে শীর্ষে ওঠে।
এমআর/টিকে