জেনেভায় ছাঁটাইয়ের প্রতিবাদে জাতিসংঘ কর্মীদের বিক্ষোভ

যুক্তরাষ্ট্রসহ বিভিন্ন দাতার সহায়তা কমে যাওয়ায় বিশ্বজুড়ে জাতিসংঘের শত শত কর্মী চাকরি হারিয়েছেন। এ পরিস্থিতির প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার জেনেভায় ইউরোপীয় সদর দপ্তরের সামনে বিক্ষোভে অংশ নেন সংস্থাটির কয়েকশ’ কর্মী।

‘শান্তির শহর’ হিসেবে পরিচিত সুইজারল্যান্ডের জেনেভা ইউরোপের মানবিক ও কূটনৈতিক কার্যক্রমের কেন্দ্রবিন্দু।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, জাতিসংঘের ইউরোপীয় সদর দপ্তরের সামনে বিক্ষোভে যোগ দেওয়া কর্মীরা ‘এখনই জাতিসংঘের কর্মীদের ছাঁটাই বন্ধ করুন’ লেখা ব্যানার নিয়ে উপস্থিত হয়েছিলেন। ‘জাতিসংঘের কর্মীরা পণ্য নয়’—স্লোগান দিচ্ছিলেন তারা। আন্দোলনকারী কর্মীরা জানিয়েছেন, ১ মে থাইল্যান্ড এবং মিয়ানমারেও ছোট আকারের বিক্ষোভ হয়েছে।

আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা আইওএম এর মতো কিছু সংস্থার স্বল্পমেয়াদী ঠিকাদার এবং কর্মীদের এরই মধ্যে ছাঁটাইয়ের ব্যাপারে জানিয়ে দেয়া হয়েছে। তবে ভবিষ্যতে আরো হাজার হাজার কর্মী ছাঁটাইয়ের আশঙ্কায় রয়েছেন।

বিভিন্ন দেশের সহায়তা তহবিলের উপর নির্ভরশীল বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচী বা জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থার মতো সংস্থাগুলোতে সবচেয়ে বড় ছাঁটাই হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র এসব সংস্থায় সবচেয়ে বড় দাতা দেশ ছিল।

মানবাধিকার আইনজীবী অ্যান কুইপার্স বলেন, “তারা আমাকে রাখার চেষ্টা করেছিল, কিন্তু সেটা অসম্ভব হয়ে পড়েছে।” জাতিসংঘের মানবাধিকার অফিসে কুইপার্সের অস্থায়ী চুক্তি নবায়ন করা হয়নি। তিনি বলেন, “এ কারণে আমরা এখন এই পরিস্থিতিতে: নিয়োগ স্থগিত, কোনো বাজেট নেই।”

আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা আইএলও-র স্টাফ ইউনিয়নের চেয়ারপার্সন সেভেরিন ডেবুস জানিয়েছেন, জানুয়ারি থেকে অন্তত ২৫০ জন আইএলও কর্মীকে ছাঁটাই করা হয়েছে।

তিনি বলেন, “আমরা জানি না কিভাবে এই পরিস্থিতির মুখোমুখি হবো। সবচেয়ে জটিল এবং অত্যন্ত চাপের বিষয় হলো, এখানে কোনো প্রকৃত নিরাপত্তা বলয় নেই।” কিছু কর্মী সুইজারল্যান্ডের বেকার ভাতাও পাবেন না এবং তাদের ভিসার মেয়াদও শেষ হয়ে যাচ্ছে। আইএলও মুখপাত্রের সঙ্গে এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলেও তাৎক্ষণিকভাবে তার প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।

জাতিসংঘের এক কর্মী গ্রেস জানিয়েছেন, সংঘাতে আক্রান্ত মানুষকে সাহায্য করার জন্য কখনো কখনো তাদের জীবনের ঝুঁকি নিয়েও কাজ করেছেন। এমন কর্মীদের পক্ষে কথা বলাটা গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করেন তিনি। পরিচয় গোপন রাখার স্বার্থে নিজের পুরো নাম তিনি প্রকাশ করতে চাননি।

বার্তাসংস্থা রয়টার্সকে গ্রেস বলেন, “জাতিসংঘ সবার পক্ষে দাঁড়ায়, কিন্তু জাতিসংঘের পিছনে থাকা কর্মীদের পক্ষে কেউ দাঁড়ায় না।”

আরএ/এসএন

Share this news on:

সর্বশেষ

নারী আইপিএলের নিলামে ৩ বাংলাদেশি Nov 22, 2025
দীর্ঘ বিরতির পর ফিরেও আলোচনায় বিবেক, বিতর্কের ঝড় Nov 22, 2025
দেশের তারকারাও কাঁপল ভূমিকম্পে, সামাজিক মাধ্যমে শেয়ার ভয়ের মুহূর্ত Nov 22, 2025
‘দাবাং ফোর’এ পরিচালক হতে পারেন সালমান, জল্পনা ছড়াল বলিউডে Nov 22, 2025
ভূমিকম্পের আতঙ্কে রুকাইয়ার সচেতনবার্তা ভাইরাল Nov 22, 2025
রাজধানীতে শাকিবের শুটিং চলাকালীন কম্পন, ভক্তরা আতঙ্কিত Nov 22, 2025
img
নায়িকা থেকে সরাসরি খলনায়িকা! সুযোগ কম, নাকি ইচ্ছে-খোলামেলা উত্তর দিলেন বর্ষা Nov 22, 2025
img
তিন দিনের সফরে ভুটানের প্রধানমন্ত্রী ঢাকায় আসছেন আজ Nov 22, 2025
img
একটি দল নির্বাচন হওয়ার আগেই ক্ষমতায় চলে এসেছে: সাদিক কায়েম Nov 22, 2025
img
শিল্পী সমিতির নির্বাচন শিল্পীদের হাসির পাত্রে পরিণত করেছে : শাকিল খান Nov 22, 2025
img
প্রাক্তন স্ত্রীর সঙ্গে পর্দায় আসছেন প্রসেনজিৎ! থাকছেন ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত Nov 22, 2025
img
ফুটবল মাঠে আবারও মুখোমুখি চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ব্রাজিল-আর্জেন্টিনা Nov 22, 2025
img
আবারও ধানুশের সঙ্গে জুটি বাঁধছেন সাই পল্লবী Nov 22, 2025
img
নাইজেরিয়ায় নতুনরূপে ২১৫ বছরের ঐতিহ্যবাহী গাম্বারি মসজিদ Nov 22, 2025
img
ঘুষের বিনিময়ে রাশিয়াপন্থী বক্তব্য, সাবেক ব্রিটিশ এমপির ১০ বছরের জেল Nov 22, 2025
img
ভূমিকম্পে মেট্রোরেলের ৬ স্টেশনে ফাটল Nov 22, 2025
img
গণভোট আগে হোক বা অন্যান্য ভোটের সঙ্গে একই দিনে হোক, উদ্দেশ্য একই: জোনায়েদ সাকি Nov 22, 2025
img
বড় ভূমিকম্পের ইঙ্গিত, উচ্চ ঝুঁকিতে ঢাকা Nov 22, 2025
img
আলেমদেরকে রাষ্ট্রের দায়িত্ব পালনে এগিয়ে আসতে হবে: ধর্ম উপদেষ্টা Nov 22, 2025
img
ডাকসু সদস্য রাফিয়ার বাড়িতে ককটেল হামলার ঘটনায় গ্রেপ্তা‌র ৪ Nov 22, 2025