বলিউডের রূপালি পর্দায় একসময় রাজত্ব করেছেন কারিশমা কাপুর। নব্বইয়ের দশকে প্রথম সারির সব নায়কের সঙ্গে জুটি বেঁধে একের পর এক হিট ছবি উপহার দিয়েছেন তিনি।
যার সাবলীল অভিনয় আর অনবদ্য নৃত্যশৈলী তাকে পৌঁছে দিয়েছিল জনপ্রিয়তার শিখরে। বর্তমানে যদিও লাইট-ক্যামেরা-অ্যাকশন থেকে নিজেকে সরিয়ে নিয়েছেন কারিশমা, মাঝে মাঝে বলিউডের কোনও পার্টি বা বন্ধুদের আড্ডায় দেখা মেলে তার।
মাত্র ১৬ বছর বয়সে চলচ্চিত্রে পা রাখেন কারিশমা। তখনকার দিনগুলো আজকের চমকপ্রদ বলিউডের তুলনায় ছিল সম্পূর্ণ আলাদা। সেই স্মৃতিগুলোই সম্প্রতি মনে করলেন অভিনেত্রী।
তিনি জানালেন, আজকের তারকারা যেখানে একাধিক ভ্যানিটি ভ্যান, আলাদা রাঁধুনি আর বিলাসবহুল সুযোগ-সুবিধা নিয়ে শুটিং করেন, নব্বইয়ের দশকে সেসব ছিল অবিশ্বাস্য। শুটিং সেটে একটি পরিষ্কার বাথরুম পাওয়াই ছিল যেন ভাগ্যের ব্যাপার। ঝোঁপের পিছনে পোশাক বদলাতাম। আলাদা বিশ্রামের জায়গার তো প্রশ্নই ওঠে না!
কলকাতার লেডিজ স্টাডি গ্রুপের এক অনুষ্ঠানে কারিশমা বলেছিলেন, “আমি ৩২ বছর ইন্ডাস্ট্রিতে কাটিয়েছি। তখন এমন এক সময় ছিল যখন আমরা গাছপালার আড়ালে জামাকাপড় বদলাতাম। কারও বাথরুমে যাওয়ার দরকার হলে মাইলের পর মাইল হেঁটে যেতে হত। পুরো ইউনিট তখন ফিসফিস করে বলত, ‘ম্যাডাম বাথরুমে যাচ্ছেন।’ এখনকার প্রজন্ম হয়তো বিশ্বাসই করতে পারবে না।”
কারিশমা জানালেন, অনেক সময় শুটিং চলাকালীন অভিনেতাদের রাস্তার ধারের দোকান কিংবা কারও বাড়িতে গিয়ে অনুরোধ করতে হত জামাকাপড় বদলানোর জন্য। “আজকের দিনে ৩৫টা ট্রেলার, অত্যাধুনিক সাউন্ড সিস্টেম, ডিজিটাল মিডিয়া সবকিছু হাতের নাগালে। এই পরিবর্তন অকল্পনীয়,” বলেন তিনি।
চলচ্চিত্র প্রযুক্তির দিক থেকেও যে সময়টা কতটা বদলেছে, সে কথাও মনে করালেন কারিশমা। তিনি জানান, “আমরা তখন শুধু ডাবিং করেই সিনেমা বানাতাম। প্রথমবার মনিটরে নিজেকে দেখি দিল তো পাগল হ্যায় ছবির ড্যান্স অব এনভি গানের সময়। তার আগে কোনও ফুটেজ দেখার সুযোগই ছিল না। সিনেমা মুক্তি পেলেই ৭০ এমএম বড় পর্দায় প্রথম নিজের অভিনয় দেখা যেত।”
রাজ কাপুরের পরিবারের মেয়ে হওয়ায় ইন্ডাস্ট্রির বিবর্তন খুব কাছ থেকে দেখার সুযোগ পেয়েছেন কারিশমা কাপুর। তার কথায়, “আমি সত্যিই সৌভাগ্যবান যে এই পরিবর্তনের সাক্ষী হতে পেরেছি এবং আজকের দর্শকদের কাছে সেই অভিজ্ঞতা ভাগ করে নিতে পারছি।”
ইউটি/টিএ