কিডনি রোগের সতর্কবার্তা

প্রতিদিন দুই কোয়ার্ট বর্জ্য ও অতিরিক্ত পানি অপসারণ করতে আমাদের কিডনিকে প্রায় ২০০ কোয়ার্ট রক্ত প্রক্রিয়া করতে হয়। এটা আমাদের দেহের সার্বিক তারল্যের ভারসাম্য রক্ষা করে এবং বিভিন্ন হরমোন উৎপাদনে ভূমিকা রাখে। যা লাল রক্ত তৈরি করে, অস্থির স্বাস্থ্য উন্নত করে এবং রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে।

এই কাজগুলোর জন্য আমাদের কিডনিকে প্রতিদিন কাজ করতে হয় এবং বর্জ্য পদার্থ অপসারণ করতে গিয়ে বিভিন্ন বিষাক্ত পদার্থের মুখোমুখি হতে হয়। এত করে কিডনিতে বিভিন্ন ধরণের সমস্যা ও জটিলতার সৃষ্টি হয়। ফলে কিডনি নষ্ট, কিডনিতে পাথর, ক্রনিক কিডনি ডিসিস, অ্যাসিডোসিস, ইউরিনারি ট্র্যাক্ট ইনফেকশন, নেফ্রোটিক সিনড্রোমসহ বিভিন্ন ধরনের স্বাস্থ্য সমস্যা দেখা দিতে পারে, যাকে কিডনি রোগ বলা হয়।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, বিশ্বের রোগব্যাধির দেড় শতাংশ কিডনি রোগের সঙ্গে সম্পর্কিত এবং মোট বৈশ্বিক মৃত্যুর ২.১ শতাংশের জন্য কিডনি রোগ দায়ী। মৃত্যুর জন্য দায়ী রোগগুলোর ক্ষেত্রে কিডনি রোগের অবস্থান দ্বাদশ।

কিডনির রোগ এমন একটি সমস্যা, যা ধীরে ধীরে স্বাস্থ্যের ক্ষতি করে। ফলে কিডনি মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত না হওয়ার আগ পর্যন্ত এর উপসর্গ ধরা পড়ে না। এজন্য কিডনি রোগ প্রতিরোধ করতে এর বিভিন্ন পূর্বলক্ষণ বা সতর্কবার্তার দিকে খেয়াল রাখা অপরিহার্য।

কিডনি রোগের কিছু সতর্কবার্তা রয়েছে, যা দেখে আমরা প্রাথমিকভাবে বুঝতে পারি যে কারো কিডনি রোগের ঝুঁকি আছে কিনা? এর মধ্যে রয়েছে- চুলকানি, খিঁচুনি, বিরক্তি বা বমি বমি ভাব, ক্ষুধা না লাগা, পায়ের পাতা ও গোড়ালি ফুলে যাওয়া, অতিরিক্ত কিংবা কম প্রস্রাব, শ্বাস-প্রশ্বাসে কষ্ট, ঘুমে সমস্যা ইত্যাদি।

এই লক্ষণগুলো দেখলে কিডনি রোগের ঝুঁকি আছে বলে ধারণা করা যেতে পারে। তবে কিডনি যদি একেবারেই নষ্ট হয়ে যায় তথা কাজ করা বন্ধ করে দেয়, এ ক্ষেত্রে যে লক্ষণগুলো দেয় তা হলো- তলপেটে ব্যথা, মেরুদণ্ডে ব্যথা বা ব্যাক পেইন, ডায়রিয়া, জ্বর, নাক দিয়ে রক্তপাত, ফুসকুড়ি, বমি ইত্যাদি।

তবে কখনো কখনো এসব উপসর্গ দেখা দিলেও মারাত্মক কোনো ঝুঁকি থাকে না। এজন্য এসব সতর্কবার্তা দৃশ্যমান হবার পর আতঙ্কিত না হয়ে দ্রুত ডাক্তার দেখাতে হবে এবং ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। তবে স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস এবং জীবনযাপনই কিডনি রোগ সমস্যা সমাধানের সর্বোত্তম উপায়।

 

টাইমস/ইএইচ/জিএস

Share this news on:

সর্বশেষ

img
বিশ্বমঞ্চে বাংলাদেশের দাপট, ব্যাডমিন্টনে অল বাংলাদেশ ফাইনাল Dec 26, 2025
img
সেন্টমার্টিনগামী জাহাজকে লাখ টাকা জরিমানা Dec 26, 2025
img
দম ধরে রাখুন, শান্ত থাকুন, সামনে ব্রিলিয়ান্ট কিছু আসছে: জামায়াত নেতা Dec 26, 2025
img
মেসিকে পেছনে ফেলে নতুন রেকর্ড গড়লেন ইয়ামাল Dec 26, 2025
img
নাতনিকে কাছে পেয়ে আবেগাপ্লুত নানি, উচ্ছ্বসিত জাইমা রহমান Dec 26, 2025
img
বিদ্যুৎস্পর্শে প্রাণ গেল ছাত্রদল নেতার Dec 26, 2025
img
বিয়ের পাত্রী দেখে ফেরার সময় নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ কর্মী গ্রেপ্তার Dec 26, 2025
img
শরীয়তপুর-চাঁদপুর নৌ রুটে ফেরি চলাচল বন্ধ ঘোষণা Dec 26, 2025
img
বিএনপির নতুন কর্মসূচি ঘোষণা Dec 26, 2025
img
কুষ্টিয়ায় বিএসএফের পুশইন চেষ্টায় বিজিবির বাঁধাতে ১৪ ভারতীয়কে ফেরত Dec 26, 2025
img
নোয়াখালীর প্রথম ম্যাচে নেই সৌম্য, সিলেট পর্বে অনিশ্চয়তা Dec 26, 2025
img

৩০০ ফিট মহাসড়কে

স্বেচ্ছাশ্রমে বর্জ্য অপসারণ করবে ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপি Dec 26, 2025
img
তারেক রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তনে আনন্দ মিছিল শেষে প্রাণ গেল বিএনপি নেতার Dec 26, 2025
img
অবসরের যাচ্ছেন বার্সেলোনার রাফিনিয়া আলকান্তারা Dec 26, 2025
img
বিপিএলের পর্দা উঠছে আজ, উদ্বোধনী ম্যাচে মুখোমুখি মিরাজ-শান্ত Dec 26, 2025
img
ঝালকাঠিতে হাদী ইস্যুতে একই মঞ্চে জামায়াত-এনসিপি-বৈছায়াসহ সব ইসলামি দল Dec 26, 2025
img
হিন্দু দেবতার মূর্তি ভাঙার কারণ নিয়ে আনুষ্ঠানিক বিবৃতি থাইল্যান্ড সরকারের Dec 26, 2025
img
৪ স্তরের নিরাপত্তায় আজ জাতীয় স্মৃতিসৌধে যাচ্ছেন তারেক রহমান Dec 26, 2025
img
দাদা-দাদির কবর জিয়ারত করে নির্বাচনি কার্যক্রম শুরু রুমিন ফারহানার Dec 26, 2025
img
শুক্রবার দেশজুড়ে কর্মসূচির ডাক ইনকিলাব মঞ্চের Dec 26, 2025