জাতীয় নাগরিক পার্টিকে (এনসিপি) সরকারি দল হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন বিশিষ্ট সাংবাদিক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক মাসুদ কামাল। তিনি বলেন, ‘এনসিপিকে আমি সরকারি দল হিসেবেই দেখি। সরকারি দলের সুবিধা তারা পাচ্ছে, আর সে কারণেই তাদের সমাবেশে মানুষের উপস্থিতি বেশি হচ্ছে।’
সম্প্রতি এক বেসরকারি টেলিভিশন টক শোতে অংশ নিয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
মাসুদ কামাল বলেন, ‘একসময় ঢাকা শহরে আওয়ামী লীগের মিছিল-মিটিং হলে সরকারি দল হিসেবে দলে দলে মানুষ আসত, এখন এনসিপিকেও সরকারি দল মনে করে মানুষ তাদের সমাবেশে যাচ্ছে। সরকারে থাকলে কিছু সুবিধাভোগী থাকেই। আমি এনসিপিকে খাটো করে দেখছি না, কিন্তু তারা নিজেরাও জানে যে একা তারা পারবে না। আলাদা নির্বাচন করে কোনো আসনে জামানত রক্ষা করতে পারলে সেটাই হবে তাদের সাফল্য।’
তিনি স্পষ্ট করে বলেন, ‘এই মুহূর্তে এনসিপি কোথাও নির্বাচনে অংশ নিয়ে জামানত রক্ষা করতে পারবে না। দলটি গঠনের পর থেকে যে কর্মকাণ্ড করেছে, তা মানুষকে বিভ্রান্ত করেছে। সরকারের ব্যর্থতার দায়ও এখন এনসিপির ঘাড়ে যাচ্ছে কারণ তারা সরকারি দল। উপদেষ্টাদের নানা বিতর্কিত কর্মকাণ্ড এবং দুর্নামও এনসিপির ওজন কমিয়ে দিচ্ছে।
যদিও ছাত্রদের মধ্যে থাকা দুই উপদেষ্টা বলছেন তারা এনসিপি করেন না, অথচ একসঙ্গে বসে চা-কফি খাচ্ছেন, আলাপ করছেন।’
নির্বাচন প্রসঙ্গে মাসুদ কামাল বলেন, ‘নির্বাচনকে কেন্দ্র করে একাধিক দল ভোটের ঐক্য করে। এখানে কোনো আদর্শিক ঐক্য নেই, ভোট পাওয়ার জন্যই ঐক্য হয়। মেরুকরণ আরো বাড়বে এবং বিএনপির বিরুদ্ধে একটি বড় জোটও হতে পারে।’
বিএনপির জোট প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘বিএনপির নতুন করে জোটের দরকার নেই।
তাদের নিজেদের দল এবং কিছু ছোট দল মিলিয়ে তারা ভালোই আছে। কিন্তু জামায়াত, এনসিপি জোট ছাড়া ক্ষমতায় যেতে পারবে না, তাই তারা বিএনপির বিপক্ষে অবস্থান নিচ্ছে।’
বিএনপির স্থানীয় পর্যায়ের নেতাকর্মীদের আচরণ নিয়ে সমালোচনা করে মাসুদ কামাল বলেন, ‘সারা দেশে বিএনপির ইমেজ নষ্ট হচ্ছে স্থানীয় পর্যায়ের চাঁদাবাজি, দখলদারির কারণে। এরা সবাই বিএনপি করে কি না জানি না কিন্তু বদনামটা বিএনপির ঘাড়ে যাচ্ছে। বিএনপি এদের থামানোর যে প্রক্রিয়া নিয়েছে, সেটাকে আমি সঠিক মনে করি না। যেমন গরম পাতিলে দুই ফোঁটা পানি দিলে শব্দ হয়, ঠাণ্ডা হয় না। পাতিল ঠাণ্ডা করতে হলে পুরো পানি দিতে হবে বা আগুন নেভাতে হবে। বিএনপি সেই পথে যাচ্ছে না।’