বৃষ্টির প্রভাব বাজারে, বেড়েছে সবজির দাম

প্রকৃতিতে শীতের আগমনী বার্তা দেখা গেলেও বাজারে শীতকালীন সবজিতে বিরাজ করছে উষ্ণতা। সপ্তাহের ব্যবধানে প্রায় প্রতিটি সবজির দাম বেড়েছে। ব্যবসায়ীরা বলছেন, বুধবার রাত থেকে বৃহস্পতিবার দিনভর টানা বৃষ্টির কারণে আড়তে সবজির সরবরাহ কমে গেছে। এ কারণে দামও কিছুটা বেড়েছে। তবে এসময়ে মাংসের দাম কমার প্রভাব পড়েছে মাছের বাজারে। সপ্তাহের ব্যবধানে বিভিন্ন জাতের মাছের দাম কিছুটা কমেছে।

আজ শুক্রবার (৮ ডিসেম্বর) সকালে রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা যায়, দেশি জাতের পেঁয়াজ প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৪০-১৫০ টাকা। ভারতীয় পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১৩০-১৪০ টাকা। দুই সপ্তাহ আগেও ২০-৩০ টাকা কমে বিক্রি হয়েছে। সপ্তাহখানেক আগে ৫০ টাকায় বিক্রি হওয়া আলু বিক্রি হচ্ছে ৬০-৬৫ টাকা। নতুন আলু ৭০-৮০ টাকা।

ক্রেতারা বলছেন, বাজার তদারকি না থাকায় ইচ্ছেমতো দাম নিচ্ছে বিক্রেতারা।

বিক্রেতারা বলছেন, বৃষ্টির কারণে আড়তে দাম বাড়তি। তাই খুচরা বাজারে এর প্রভাব পড়েছে। আর কিছু দিনের মধ্যেই স্বাভাবিক হবে আলু পেঁয়াজের দাম।

এদিকে বৃষ্টির অজুহাতে বেড়েছে সবজির দাম। বাজারে লম্বা বেগুন প্রতিকেজি বিক্রি হচ্ছে ৪০-৫০ টাকা, গোল বেগুন ৫০-৬০ টাকা, ফুলকপি ৪০-৫০ টাকা, একই দামে বাঁধা কপি। শিম ৬০-৭০ টাকা, পেঁপে ৩৫-৪০ টাকা, করলা ৭০-৮০ টাকা, ঢেরস ৭০-৮০ টাকা মান ও সাইজভেদে লাউ ৪০-৬০ টাকা, কচুর লতি বিক্রি হচ্ছে ৮০-৯০ টাকায়। যা অধিকাংশ সবজি গেল সপ্তাহে ১৫-২০ টাকা কমে বিক্রি হয়েছে।

লাল শাক ১০-১৫ টাকা, পালং শাক ১৫-২০ টাকা, মুলা শাকা ১০-১৫ টাকা, সরিষা শাক ১০-১৫ টাকা আঁটি বিক্রি হতে দেখা গেছে। তবে বাজারে দোকানের তুলনায় ফুটপাতের দোকানগুলোতে প্রত্যেক সবজির দাম ৫-১০ টাকা কম দেখা গেছে।

সপ্তাহের ব্যবধানে চালের দামও কিছুটা বেড়েছে। প্রতি কেজি মোটা চাল ২-৩ টাকা বেড়ে হয়েছে ৫৪-৫৫ টাকা। অর্থাৎ নতুন চাল বাজারে এলেও মাসখানেক আগের বাড়তি দামেই বিক্রি হচ্ছে এখনো।

আটার দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। খোলা আটা কিনতে এখন ক্রেতাকে গুনতে হচ্ছে কেজিতে ৪৮ থেকে ৫০ টাকা। আর প্যাকেট আটার কেজি ৫৮ থেকে ৬০ টাকা। খোলা ময়দার দাম কিছুটা কমেছে। ৬০ টাকা কেজির খোলা ময়দা বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকা এবং প্যাকেট ময়দার দাম কমে ৬০ থেকে ৬৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

দীর্ঘসময় ধরে অস্থিতিশীল চিনির বাজারে কোনো সুখবর নেই। খোলা চিনির কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৪০ থেকে ১৪৫ টাকায়। বাজারে প্যাকেটজাত চিনির সরবরাহ নেই বললেই চলে। প্যাকেটজাত চিনি বিক্রি হচ্ছে ১৬০ থেকে ১৭০ টাকা কেজি দরে।

বাজারে এখন মাছের সরবরাহ ভালো। মাংসের দাম কমার প্রভাব পড়েছে মাছের দামেও। গত সপ্তাহের মতো এ সপ্তাহেও কিছুটা কমেছে চাষের মাছের দাম। মাঝারি মানের চাষের পাঙাশ বিক্রি হচ্ছে কেজিপ্রতি ১৭০ থেকে ১৮০ টাকায়। বড় আকারের চাষের তেলাপিয়া ২২০ থেকে ২৫০ টাকা, ছোট আকারের ১৫০ থেকে ১৬০ টাকা। আর মান ও আকারভেদে চাষের রুই মাছের কেজি পাওয়া যাচ্ছে ৩০০ থেকে ৪০০ টাকায়। তবে চিংড়ির দাম তেমন কমেনি। প্রতি কেজি চিংড়ি কিনতে ক্রেতাকে গুনতে হচ্ছে ৭০০ থেকে ১০০০ টাকা। শোল মাছের দাম কিছুটা বেড়ে ৩৮০ থেকে ৪০০ টাকা হয়েছে। ইলিশ মাছ কেজিপ্রতি দাম হাঁকানো হচ্ছে ৮০০ থেকে ১০০০ টাকা পর্যন্ত।

বাজার ঘুরে ভিড় দেখা গেছে বিভিন্ন মাংস বিক্রেতার দোকানগুলোতে। রাজধানীর বিভিন্ন এলাকার দোকানে গরুর মাংস এখন ৬৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। যা এক মাস আগের চেয়ে কেজিপ্রতি অন্তত দেড়শ টাকা কম।

গরুর মাংসের পাশাপাশি গত সপ্তাহে মুরগির দাম কমলেও এ সপ্তাহে তা কিছুটা বেড়েছে। ব্রয়লার মুরগির কেজিতে ৫ টাকা বেড়ে হয়েছে ১৮০ টাকা এবং সোনালি জাতের মুরগির কেজি ২৮০ টাকা, লেয়ার মুরগি ২৭০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

বড় বাজারগুলোতে প্রতি ডজন ফার্মের মুরগির বাদামি রঙের ডিম বিক্রি হচ্ছে ডজনপ্রতি ১২০ টাকায়। অর্থাৎ প্রতিটি ১০ টাকা পিস। তবে পাড়া-মহল্লার খুচরা দোকানে এ দাম এখনো ১২৫ থেকে ১৩০ টাকা। ফার্মের মুরগির সাদা রঙের ডিম বিক্রি হচ্ছে ডজনপ্রতি ১১০ টাকায়। এছাড়া হাঁসের ডিমের হালি এখন ৬০ থেকে ৭০ টাকা পর্যন্ত।

Share this news on: