সচিবের মদদে সক্রিয় হচ্ছেন ফ্যাসিস্ট জামিল চৌধুরী

সকল সরকারের আমলেই 'মধু'লোভী সিলেটের আলোচিত জামিল চৌধুরী ইউনুস সরকারের প্রশাসনে প্রভাব বিস্তার করতে বেশ তৎপর। অথচ তিনি ছিলেন পালিয়ে যাওয়া পতিত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বৈারাশাসনের সহযোগী প্রশাসনের আমলাদের অন্যতম দোসর। তার পুত্র কায়েস চৌধুরী ছিলেন পতিত পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেনের এপিএস। ছাত্র জনতার অভুত্থানের পর এবার দোসর জামিল চৌধুরীকে পুনর্বাসন করতে অতিরিক্ত সচিব আখতারুজ্জামান মরিয়া হয়ে উঠেছেন। আর তাকে নিয়েই তিনি আয়োজন করেছেন হাওর উৎসব। যা আগামী ২ ফেব্রুয়ারি রোববার দিরাইয়ে অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা। অবশ্য,যে স্থানে উৎসব হওয়ার কথা ছিল স্থানীয়দের চাপে সেটি ভেস্তে গেছে। দোসরকে নিয়ে সরকারি অনুষ্ঠানের আয়োজন করায় স্থানীয় লোকজন বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছেন। 

জানা গেছে, বাংলাদেশ হাওর ও জলাভূমি উন্নয়ন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) মো. আখতারুজ্জামান জুলাই বিপ্লবের পর আত্মগোপনে থাকা জামিল চৌধুরীকে প্রকাশ্যে নিয়ে আসেন। তিনি জামিল চৌধুরীকে নিয়ে আয়োজন করেন হাওর উৎসব।

আগামী রোববার অনুষ্ঠিতব্য এই উৎসবে পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মোহাম্মদ রেজাউল করিম প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন। আর বিশেষ অতিথি হিসেবে থাকবেন বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (গ্রেড-১) আবু তাহের মুহাম্মদ জাবের ও বাংলাদেশ হাওর ও জলাভূমি উন্নয়ন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আখতারুজ্জামান। সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলার তাড়ল গ্রামের পাশ্ববর্তী মাঠে এই অনুষ্ঠান হওয়ার কথা ছিল। এজন্য দোসরের স্থানীয় দোসররাও প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। স্থাপন করা হয়েছিল গভীর নলকূপ ও অস্থায়ী টয়লেটও। আর এতে খরচ করা হয় সরকারি অর্থ। উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মোহন চৌধুরীর নেতৃত্বে চলছিল প্রস্তুতি। কিন্তু স্থানীয় তাড়ল ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শফিকুর রহমান চৌধুরী স্বৈরাচারের দোসরকে দিয়ে আয়োজিত অনুষ্ঠানে গানবাজনা, অসামাজিক কার্যকলাপের আশংকায় প্রতিবাদ করেন। এতে পিছু হঠে দোসর জামিল। পরে নির্ধারিত ওই স্থানের কয়েক কিলোমিটার দুরবর্তী উজানধল মাঠে অনুষ্ঠানের স্থান নির্ধারণ করা হয়। কিন্তু তবুও লোকজনের মাঝে ক্ষোভের শেষ নেই। হাওরাঞ্চলে এমন অনুষ্ঠানের আয়োজন প্রশংসনীয় হলেও দোসর জামিল চৌধুরী এর সাথে সম্পৃক্ত হওয়ায় যেন ঘি'র মধ্যে গরুর মুত্র ঢেলে দেয়ার মতো ঘটনা ঘটিয়েছেন অতিরিক্ত সচিব আখতারুজ্জামান। ওই অতিরিক্ত সচিবের লক্ষ্য নিয়েও প্রশ্ন দেখা দিয়েছে । 

বিগত ১৬ বছর দিরাইয়ে বিএনপি-জামায়াত নেতাকর্মী দোসর জামিল চৌধুরীর কাছে নিগৃহীত হয়েছেন। এমনকি ২০১৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে দিরাইয়ে বিএনপির দলীয় কর্মসূচি পালনকালে উপজেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আমিরুল ইসলাম ও সাংগঠনিক সম্পাদক গোলাপ মিয়াকে পুলিশ ডেকে এনে ধরিয়ে দেন জামিল চৌধুরী। তারা প্রায় এক সপ্তাহ কারাবাসের পরে জামিনে মুক্তি পান। 
দিরাই উপজেলা বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক গোলাপ মিয়া ওই ঘটনার বর্ননা দিয়ে বলেন, আমরা ওই দিন সড়ক অবরোধ কর্মসূচি পালন করছিলাম। কিন্তু হঠাৎ করে জামিল চৌধুরী এসে আমাদের উপর চড়াও হন এবং সাথে সাথে পুলিশ ডেকে এনে আমি ও আমিরুল ইসলামকে পুলিশে সোপর্দ করেন। আজ যদি সেই দোসর সুযোগ সুবিধা পায় তাহলে এত এত ছাত্র জনতা জীবন দিলেন কিসের জন্যে। যে বা যারা তাকে পুনর্বাসনে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন তাদের বিষয়ে পদক্ষেপ গ্রহণ করতে অন্তবর্তীকালীন সরকারের নিকট দাবী জানান তিনি। 

আর দিরাই উপজেলা জামায়াতের সাবেক আমীর মাওলানা লুৎফুর রহমান বলেন, দোসর জামিল চৌধুরী সবসময়ই বিএনপি চেয়ারপার্সন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করতেন। জামায়াতের আমীরকেও একইভাবে গালিগালাজ করতেন। তার আপন ভাগ্নে বিএনপির প্রবীণ নেতা শফিকুর রহমান চৌধুরীকে মিথ্যা মামলা দিয়ে টানা তিন মাস কারাগারে রাখেন এই জামিল চৌধুরী। বাঁধা দেন বিএনপি নেতৃত্বাধীন জোটের সড়ক অবরোধ কর্মসূচিতেও। এমনকি বিএনপি জোটের সড়ক অবরোধ কর্মসূচি চলাকালে তার গাড়ী আটকে পড়লে তাৎক্ষণিকভাবে পুলিশও ডেকে নিয়ে আসেন। তিনি এই দোসরকে ছেড়ে দেয়া যায় না বলে মন্তব্য করেন। 

স্থানীয় লোকজন জানান,জামিল চৌধুরী সবসরকারের আমলেই থাকেন স্থানীয় প্রশাসনসহ সচিবলায়ের আমলাদের কাছাকাছি। যে সরকারই আসে তার মদদপুস্ট হয়ে কামাই করেন কাড়ি কাড়ি টাকা। এবারো ব্যতিক্রম নয়। এরই মধ্যে কৌশলে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা উপদেষ্টা ডা. বিধান চন্দ্র রায় পোদ্দারকে সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলার তার গ্রামের বাড়িতে নিয়ে যায়। মুলত এটা ছিল তার স্থানীয় প্রশাসেন প্রভাব বিস্তারের অস্ত্র। যাতে ছাত্র-জনতার বিজয়ের পর ইউনুস সরকারের নানা সুবিধা ভাগিয়ে নেয়া যায়।এনিয়ে সিলেট-সুনামগঞ্জে চলছে নানা আলোচনা সমালোচনা। জামিল চৌধুরীর বাড়ি সুনামগঞ্জ জেলার দিরাই উপজেলার তাড়ল গ্রামে। তিনি সিলেট নগরীর বাসিন্দা। তিনি কনজুমার এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ ক্যাবের ভারপ্রাপ্ত সভাপতিও। সর্বত্র ব্যবহার করেন ক্যাবের নাম। 

জানা গেছে, ২০১৪ সালে সুনামগঞ্জ—২ (দিরাই-শাল্লা) আসনে জাতীয় পার্টি দলীয় মনোনীত লাঙ্গল মার্কার প্রার্থী ছিলেন জামিল চৌধুরী। মুলত তিনি ছিলেন ডামি প্রার্থী। আওয়ামী লীগের মানুষ হয়েও জাতীয় পার্টি থেকে মনোনায়ন নেয়ার লক্ষ্য ছিল আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী নেতা সুরঞ্জিত সেনগুপ্তকে বিজয়ী করা। পরে নিজে মনোনয়ন প্রত্যাহার করে বিনা ভোটে সুরঞ্জিত সেনগুপ্তকে বিজয়ী করার সুযোগ করে দেন। ওই জাতীয় নির্বাচনে বিনাভোটে ১৫২ জন সংসদ সদস্য হয়েছিলেন। 

সর্বশেষ বাতিল হওয়া সংসদ নির্বাচনেও তিনি ছিলেন সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের স্ত্রী জয়া সেনগুপ্তার একনিষ্ঠ লোক। যদিও মাঝে টাকার ভাগবাটোয়ারা নিয়ে সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের সাথে দ্বন্দ্বেও জড়ান তিনি। 
জামিল চৌধুরী নামে বেনামে গড়ে তুলেছেন শতকোটি টাকার অবৈধ সম্পদ। কৌশলে হাতিয়ে নিয়েছে কনজুমার এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ ক্যাবের ভারপ্রাপ্ত সভাপতির পদটিও। টানা ১৬ বছর স্বৈরাচারের দোসর হিসেবে সবধরনের সুযোগ সুবিধা নিয়ে এখন আবারও নতুন করে দালালীতে নেমেছেন তিনি। এই দোসরের আমন্ত্রণে সেই আগের মতোই সরকারের আমলারা ছুটে আসেন দিরাইয়ে। কোন যাদু কিংবা মধুর বলে আমলারা জামিল চৌধুরীর ডাকে সাড়া দেন তা আজও রহস্যঘেরা। 

স্থানীয়রা জানান, ৫ আগস্টে বিপ্লবের আগে ২ জুলাই আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা ও আওয়ামী লীগের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির কো-চেয়ারম্যান সাবেক মন্ত্রী পরিষদ সচিব দুদকের তালিকাভুক্ত দুর্নীতিবাজ কবির বিন আনোয়ার দোসর জামিল চৌধুরীর আমন্ত্রণে দিরাইয়ে ফিমেইল একাডেমীতে আসেন। একইভাবে তার আমন্ত্রণে দিরাই এসেছিলেন বিশ্বের ইতিহাসে রাতের ভোটের জনক তৎকালীন নির্বাচন কমিশন সচিব হেলালুদ্দীন। মুলতঃ এদের দিয়ে বড় বড় তদবির বাণিজ্য করে জামিল চৌধুরী গড়ে তুলেছেন বিশাল সাম্রাজ্য। গত ১৬ বছর তার এনজিও গ্রামীণ জনকল্যাণ সংসদের কোনো কার্যক্রম ছিল না। ৫ আগস্টের পর থেকেই হঠাৎ করে এই এনজিও'র নামে শুরু করেন হাওর বিষয়ক নানা কর্মসূচি। আর এই এনজিও'র নামে জামিল চৌধুরীকে পুনর্বাসন করতে মরিয়া হয়ে উঠেন হাওর ও জলাভূমি উন্নয়ন বোর্ডের মহাপরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) মো. আক্তারুজ্জামান। সুনামগঞ্জের কোথাও হাওরের উন্নয়নে কোনো কর্মসূচি বাস্তবায়ন না করলেও অতিরিক্ত সচিব আখতারুজ্জামান দোসর জামিল চৌধুরীর নির্দিষ্ট কিছু ব্যক্তিদের নিয়ে কর্মশালা কর্মসূচীর নামে বিপুল পরিমাণের অর্থ আত্মসাত করছেন বলেও অভিযোগ উঠেছে। 

অন্যদিকে জামিল চৌধুরীর দুই পুত্রের মধ্যে বড় পুত্র এনাম চৌধুরী দিরাই'র ফিমেইল একাডেমির দেখভাল করেন।এনাম চৌধুরী জাল-জালিয়াতির মাধ্যমে দিরাইয়ে জালাল সিটি নামের বহুতল শপিং মল নির্মাণ করছেন বলেও স্থানীয়দের অভিযোগ। এর নির্মাণ কাজের অর্থের উৎস নিয়ে লোকমুখে নানান কানাঘুঁষা চলছে। জামিল চৌধুরীর বিরুদ্ধে প্রশাসনের শীর্ষ ব্যক্তিদের সুন্দরী রমনী সরবরাহের অভিযোগ রয়েছে। তিনি নিজেও জামিলা বেগম নামের এক সুন্দরী রমনীর সাথে জড়িয়ে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু ছিলেন। ইন্টারনেট যুগের আগে জামিল চৌধুরীর ওই নারী কেলেঙ্কারি সিলেটজুড়ে ছিল ওপেন সিক্রেট। তার বড় ছেলে এনাম চৌধুরীও নারী ক্যালেংকারিতে জড়িয়েছেন বলে লোকমুখে আলোচনায়। 

জামিল চৌধুরীর ছোট ছেলে কায়েস চৌধুরী স্বৈরাচারী পতিত হাসিনা সরকারের পররাষ্ট্র মন্ত্রী ড. মোমেনের এপিএস ছিলেন। এই সুবাদে বহু আকাম—কুকাম করে শতকোটি টাকার মালিক হন কয়েস। সিলেট নগরের আখালিয়াসহ বিভিন্ন এলাকায় নামে-বেনামে অন্তত ৫০ বিঘা জমি কিনেছেন। বিদেশে অর্থ পাচারেরও অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। বিদেশে বসেও দেশে নিয়মিত তদবিরবাজী করতেন কায়েস। তাকে নিয়ে অতীতে জাতীয় গণমাধ্যমেও সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। 

এদিকে, জামিল চৌধুরীর ছেলে কায়েস ক্ষমতার অপব্যবহার করে তার চাচা নাজিম উদ্দিনকে বাদী বানিয়ে আপন ফুফাতো ভাই দিরাই উপজেলা বিএনপির প্রবীণ নেতা শফিকুর রহমান চৌধুরীকে একেবারে মিথ্যা মামলা দিয়ে কারাবন্দী করে রাখে। ৫আগস্টের ছাত্র জনতার অভ্যুত্থানের পূর্ব পর্যন্ত জামিল চৌধুরী ও তার পরিবার শেখ হাসিনার পক্ষে আপ্রাণ চেষ্টা করেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দালালি করে বহু লেখালেখি করেন। কিন্তু ৫ আগস্ট বিপ্লবের পর জামিল চৌধুরী তার ফেইসবুকের সকল রেকর্ড মুছে ফেলেন। তার ফেইসবুক আইডিতে এখন আর দোসরদের দহরম-মহরমের কোনো ছবি নেই। কিন্তু তার ছেলে ড. মোমেনের এপিএস কায়েসের ফেইসবুকে এখনো কিছু কিছু ছবি রয়েছে। বিগত ১৬ বছর হাসিনা আমলে সবধরনের সুযোগ সুবিধা নিয়েছে এই পরিবার। সিলেট ও সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার থেকে বিভাগীয় কমিশনার -ডিআইজি পর্যন্ত জামিল চৌধুরীর ভয়ে তটস্থ থাকতেন। 

সেই দোসর জামিল চৌধুরী এখন খোলস পাল্টানোর নেশায় মত্ব। কনজুমার এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ ক্যাবের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি পদটি যেন তার জন্য এখন চলন্ত সিড়ি।বিগত বন্যায় ক্যাব এর নাম ভাঙ্গিয়ে ও বিদেশ থেকে কোটি কোটি টাকা এনে নামমাত্র বিতরণ করে বাকী টাকা আত্মসাত করেন জামিল চৌধুরী। তার ব্যাংক এ্যাকাউন্টে অস্বাভাবিক লেনদেনের চিত্র দেখে কর গোয়েন্দা টিম জিজ্ঞাসাবাদ করলেও হাসিনা আমলে তার দাপটে একসময় ওই গোয়েন্দা টিম চুপসে যান। কিন্তু বর্তমান অন্তবর্তীকালীন সরকারের ছয় মাসেও তার ব্যংক এ্যাকাউন্ট ও দুর্নীতি অনুসন্ধানে দুদক, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড এনবিআর কিংবা সরকারের কোনো সংস্থা প্রকাশ্যে তদন্তের উদ্যোগ গ্রহণ করেনি। 

জামিল চৌধুরী ঢাকার নামকরা দন্ত চিকিৎসক ডা. রতন ও দেশবিদেশের মানুষের সহযোগিতায় দিরাই পৌরসভার আনোয়ারপুরে বাংলাদেশ ফিমেইল একাডেমি নামের একটি নারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেন। ফিমেইল একাডেমির নামে সরকারের দেয়া অনুদান ও লন্ডন আমেরিকা থেকে শত কোটি টাকা এনে আত্মসাৎ করেছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে। ২০০৬ সালে এই একাডেমি প্রতিষ্ঠার পর থেকে আজও একাডেমির কোনো অডিট/নিরীক্ষা হয়নি। একাডেমি সরকারি এমপিও ভুক্ত করতে কখনো আবেদনও করা হয়নি। অবশ্য, এনিয়ে লোকমুখে মুখরোচক নানা আলোচনা শোনা যায়। এতিম শিশুর ব্যবসা বন্ধ হয়ে যাবে বলে তিনি এর এমপিও ভুক্তির আবেদন করেননি বলে স্থানীয় লোকজন জানিয়েছেন । 

এতিমের টাকা আত্মসাৎ না করেই বছরের পর বছর তিনবারের প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া কারাবাস করলেও এই একাডেমিতে এতিমদের নামে অর্থ আত্মসাত করা হলেও এনিয়ে সরকারের সকল দপ্তর রহস্যজনক নীরবতা পালন করছে। 

১৯৯৪ সালে সিলেট নগরের মেন্দিবাগে ২০ শতক জমি লিজ নিয়ে তৈরি করেন বহুতল ভবন। গ্রামীণ জনকল্যাণ সংসদ নামের এনজিও'র নামে লিজ নিলেও দুই দশক ধরে এর কার্যক্রম পুরোপুরি বন্ধ। একজন নারী সাপ্লায়ার হিসেবে প্রশাসনে ব্যাপক কুখ্যাতি আছে জামিল চৌধুরীর। সিলেট সুনামগঞ্জের লোকজন তার বিরুদ্ধে সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানিয়েছেন। 
এব্যাপারে জামিল চৌধুরীর সাথে যোগাযোগ করলে তিনি সকল অভিযোগ অস্বীকার করেন।তবে তার দাবী, এরশাদ সাহেব ভালবেসে তাকে জাতীয় পার্টির দলীয় মনোনয়ন দিয়ছিলেন। একইভাবে ড. মোমেনও সমাজের কল্যানে তার পুত্রকে ফরেন মিনিস্ট্রির এডভাইজার বানিয়েছিলেন। এখনো তিনি সমাজ সেবাই করে যাচ্ছেন। আপন ভাগ্নে বিএনপি নেতাকে মিথ্যা মামলায় জেলে দেয়ার ব্যাপারে বলেন, একজন জেল থেকে বেরিয়ে কারও বিরুদ্ধে মিথ্যা অপবাদ দিতেই পারে কিন্তু বিষয়টি তার জানা নেই বলে দাবী করেন। 

হাওর ও জলাভূমি উন্নয়ন বোর্ডের মহাপরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) মো. আক্তারুজ্জামানকে গত দুদিন ধরে বার বার কল দেয়া হলেও তিনি কল রিসিভ করেননি। 

অবশ্য কিছু দিন আগে এক সাংবাদিককে জানিয়েছিলেন, জামিল চৌধুরীর বিষয়ে বিস্তারিত জানা নেই। তার অতীত সম্পর্কে জেনেছি।আমাদের কোনো কর্মসূচিতে আর তাকে রাখা হবে না। কিন্তু এমন বক্তব্যের পরেও তাকে পুনর্বাসনে তৎপরতা অব্যাহত রেখেছেন আখতারুজ্জামান। 

তবে, সিলেটের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শের মাহবুব মুরাদ বলেন, জামিল চৌধুরী কনজুমার এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ ক্যাবের সভাপতি হিসেবে আমাদের কাছে আসেন। আমরা তার ব্যাপারে অতটা জানতাম না বলেই তার অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলাম। আগামীতে সচেতন থাকবো।

টিএ/

Share this news on:

সর্বশেষ

img
পানির ন্যায্য হিস্যা আদায়ে প্রয়োজনে আন্তর্জাতিক আদালতে যাবে বিএনপি Aug 10, 2025
img
ইসির যাচাই-বাছাইয়ে উত্তীর্ণ এনসিপিসহ ১৬ দল Aug 10, 2025
img
বক্স অফিসে আমিশার সাফল্যের দুই যুগ Aug 10, 2025
img
নারীর ক্ষমতায়নে সরকার অঙ্গীকারবদ্ধ: শারমীন এস মুরশিদ Aug 10, 2025
img
প্রথমবারের রাজশাহীতে হবে বিপিএল, সুখবর দিলেন ক্রীড়া উপদেষ্টা Aug 10, 2025
img
‘ফেব্রুয়ারিতে ভোট নিয়ে আপত্তি নেই জামায়াতের, চায় পিআর পদ্ধতিতে ভোট’ Aug 10, 2025
img
নিউটনের সূত্র ভুল দাবি, সংশোধনের আহ্বান বাংলাদেশি যন্ত্রবিদের Aug 10, 2025
img
ভারতে ভুয়া থানা পরিচালনার অভিযোগে গ্রেপ্তার ৬ Aug 10, 2025
img
জাতিসংঘে মার্কিন উপ-প্রতিনিধি মনোনীত ট্যামি ব্রুস কে? Aug 10, 2025
img
দুদকের মামলায় ২০ বছরের দণ্ড থেকে খালাস পেলেন বিএনপি নেতা Aug 10, 2025
img
রাজধানীতে পুলিশের বিশেষ অভিযানে গ্রেপ্তার ২৪ Aug 10, 2025
img
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে জরুরি তথ্য চেয়ে মাউশির চিঠি, সময় ২০ আগস্ট পর্যন্ত Aug 10, 2025
img
এক দশক পর ফের জুটি বাঁধছেন নির্মাতা সুরজ ও সালমান খান Aug 10, 2025
img
মুরগির ডাক নকল করে বিভ্রান্তি তৈরি, দরজা খুলতেই ছুরিকাঘাতে হত্যা Aug 10, 2025
img
গল্প পছন্দ না হওয়ায় হৃদয়কে নাকচ করলেন শাকিব Aug 10, 2025
img
কোরিয়ার কাছে পরও নীরব রয়েছে বাংলাদেশের কোচ Aug 10, 2025
img
অন্য ছাত্রসংগঠনগুলোর নেতাদের আক্রমণাত্মক বক্তব্যে নষ্ট হচ্ছে জুলাই ঐক্য: শিবির সভাপতি Aug 10, 2025
img
৫ লাখ টন চাল আমদানিতে ২৪২ প্রতিষ্ঠানকে অনুমতির সুপারিশ Aug 10, 2025
img
শিবিরকে আমন্ত্রণের প্রতিবাদে সভা থেকে ৩ বামপন্থি সংগঠনের ওয়াকআউট Aug 10, 2025
img
অনেক নেতৃত্বই মিডিয়া ট্রায়ালের শিকার হচ্ছে: যুবশক্তির আহ্বায়ক তারিকুল Aug 10, 2025